তমলুকে এলেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
প্রার্থী ঘোষণার আগেই মঙ্গলবার তমলুকে এলেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শহরের ১০নম্বর ওয়ার্ডের পদুমবসানে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে তাঁকে নিয়ে মাতলেন দলের নব্য নেতা-কর্মীরা। অ…
তমলুকে এলেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
প্রার্থী ঘোষণার আগেই মঙ্গলবার তমলুকে এলেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শহরের ১০নম্বর ওয়ার্ডের পদুমবসানে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে তাঁকে নিয়ে মাতলেন দলের নব্য নেতা-কর্মীরা। অথচ ডাক না পেয়ে প্রাক্তন দুই জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও নবারুণ নায়েক সহ আদি নেতারা গৃহবন্দি রইলেন। তমলুক, কোলাঘাট, ময়না সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নেতা-কর্মীদের মুখে দীর্ঘশ্বাস শোনা গেল। প্রথমদিনেই নিশ্চিত হল, লোকসভা নির্বাচনের ব্যাটন থাকবে নব্য গোষ্ঠীর হাতেই।
এদিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ অভিজিৎবাবু তমলুকে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে আসেন। তাঁকে দেখার জন্য বিভিন্ন বিধানসভা এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা ভিড় করেন। তাঁদের অধিকাংশই ২০২০সালের পর বিজেপিতে ভিড়েছেন। পার্টি অফিসে জেলা সভানেত্রী তাপসী মণ্ডল সহ অন্যান্যরা অভিজিৎবাবুকে স্বাগত জানান। উপস্থিত ছিলেন ময়নার বিধায়ক অশোক দিন্দাও। ভিড় হওয়ায় পুষ্পস্তবক নিয়ে পার্টি অফিসের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন অনেকে। পিছনের দরজা দিয়ে অভিজিৎবাবুকে গাড়িতে তোলা হয়। পার্টি অফিস থেকে সোজা বর্গভীমা মায়ের মন্দিরে হাজির হন অভিজিৎবাবু।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপির রাশ এই মুহূর্তে পুরোপুরি দলবদলুদের হাতে। তমলুক ও কাঁথি দু’টি সাংগঠনিক জেলা সভাপতিরা ২০২০সালেই দলে এসেছেন। আদি শিবির কোণঠাসা। যেকারণে প্রাক্তন জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন জেলা সাধারণ সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র মাইতিরা এখন দলে গুরুত্বহীন। লোকসভা ভোটের মুখেও তাঁদের বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিতে নারাজ ক্ষমতাসীন শিবির। যেকারণে তমলুক লোকসভার সম্ভাব্য প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের জেলায় আসার দিনেও তাঁরা উপেক্ষিত রইলেন। তপনবাবু ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, তাঁকে ডাকাই হয়নি। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, এদিন আমার যাওয়া হয়নি। নারায়ণবাবু বলেন, এক বছর আমি পার্টি অফিসে যাইনি। আর নবারুণবাবু বলেন, উনি এসেছিলেন বলে জানা ছিল না।
এদিনই সকালে তমলুক শহরের ১০নম্বর ওয়ার্ডে অভিজিৎবাবুকে কটাক্ষ করে স্থানীয় কাউন্সিলারের উদ্যোগে ব্যানার ঝোলানো হয়। ওই ওয়ার্ডেই বিজেপির জেলা পার্টি অফিস। কাউন্সিলার পার্থসারথী মাইতি বলেন, উনি বিচারপতি ছিলেন। নিজের কেরিয়ারের কথা ভেবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। উনি লোভী মানুষ। তাই প্রতিবাদ জানিয়ে ব্যানার দিয়েছি।
মঙ্গলবার ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে বাইক র্যালি করে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থীকে তমলুকে আনা হয়। বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দিয়ে তিনি নন্দীগ্রামে যান। নন্দীগ্রামে রেয়াপাড়া শিবমন্দিরে পুজো দেওয়ার পর তিনি নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে বিধায়ক কার্যালয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। তারপর সোনাচূড়ায় শহিদবেদিতে মাল্যদান করেন। সেখান থেকে খেজুরি হয় কাঁথি পৌঁছন। বিজেপির জেলা সভানেত্রী তাপসী মণ্ডল বলেন, অভিজিৎবাবুর আগমন উপলক্ষ্যে সর্বস্তরের বিজেপি নেতা-কর্মীরা এদিন এসেছিলেন। আলাদা করে কাউকে আমন্ত্রণ করা হয়নি।
অভিজিৎবাবু বলেন, কিছু মানুষ বিরোধিতা করার জন্য থাকবেন। তাঁদের বিরোধিতা করতে দিন। আমরা গোটা রাজ্যে বার্তা দিতে চাই, তৃণমূলকে একটিও ভোট নয়। অনেক চুরি, জোচ্চুরি দেখলাম। এদের আর নয়। এই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকে সরিয়ে ২০২৬সালে আমাদের ক্ষমতায় আসতে হবে। তা না হলে বাংলায় বাঙালি আর বাঁচবে না। মানুষের সাড়া দেখে আমি অভিভূত। তিনি বলেন, বিজেপির ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব প্রার্থী ঠিক করে। তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন আমাকে সেইমতো চলতে হবে।
No comments