Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

প্রয়াত স্মরণানন্দজী মহারাজ, বেলুড়ে ভক্তরা শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন রাত ৮ টা পর্যন্ত, রাত ৯টায় শেষকৃত্য

প্রয়াত স্মরণানন্দজী মহারাজ, বেলুড়ে ভক্তরা শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন রাত ৮ টা পর্যন্ত, রাত ৯টায় শেষকৃত্য

গভীর দুঃখের সঙ্গে জানানো হচ্ছে যে, রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্ঘাধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী স্মরণানন্দজী মহারাজ ২৬.০৩.২০২৪ তারি…

 




প্রয়াত স্মরণানন্দজী মহারাজ, বেলুড়ে ভক্তরা শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন রাত ৮ টা পর্যন্ত, রাত ৯টায় শেষকৃত্য



গভীর দুঃখের সঙ্গে জানানো হচ্ছে যে, রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্ঘাধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী স্মরণানন্দজী মহারাজ ২৬.০৩.২০২৪ তারিখে রাত ৮.১৪ মিনিটে রামকৃষ্ণ মিশন সেবাপ্রতিষ্ঠানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। প্রয়াণকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। পূজনীয় মহারাজের পার্থিব শরীর বেলুড় মঠে সাংস্কৃতিক ভবনে শায়িত থাকবে। ভক্ত ও অনুরাগীবৃন্দ আগামীকাল (২৭.০৩.২০২৪) সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। শেষকৃত্য শুরু হবে আগামীকাল রাত ৯.০০ নাগাদ, বেলুড় মঠে।

স্বামী স্মরণানন্দজীর জন্ম ১৯২৯ সালের তামিলনাডুর তাঞ্জাবুর জেলার আন্দামি গ্রামে। ১৯৫২ সালে তিনি রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের মুম্বাই শাখাকেন্দ্রে যোগদান করেন। রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের সপ্তম সঙ্ঘাধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী শঙ্করানন্দজী মহারাজের কাছে তিনি মন্ত্রদীক্ষা লাভ করেন। ১৯৬০ সালে তিনি স্বামী শঙ্করানন্দজীর কাছ থেকেই সন্ন্যাসধর্মে দীক্ষিত হন।

সঙ্ঘে যোগদানের পর তিনি মুম্বাই আশ্রমে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৫৮-তে তিনি স্বামী বিবেকানন্দ প্রতিষ্ঠিত অদ্বৈত আশ্রমের কলকাতা শাখাকেন্দ্রে প্রেরিত হন। দীর্ঘ আঠার বছর তিনি অদ্বৈত আশ্রমে (মায়াবতী কেন্দ্রে এবং তার কলকাতা শাখাকেন্দ্রে) নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন। এই সময় কয়েক বছরের জন্য তিনি ইংরাজী পত্রিকা 'প্রবুদ্ধ ভারত'-এর সহ-সম্পাদকের কাজও করেছিলেন এবং অদ্বৈত আশ্রমের প্রকাশনার মানোন্নয়নের জন্য তাঁর অবদান বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ১৯৭৬-এ তিনি বেলুড়ে অবস্থিত রামকৃষ্ণ মিশন সারদাপীঠ-এর সম্পাদকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তাঁর দীর্ঘ ১৫ বছরের অবস্থানকালে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা ও সমাজকল্যাণের নানা দিকে প্রভূত উন্নতিলাভ করে। ১৯৭৮-এ পশ্চিমবঙ্গে এক বিধ্বংসী বন্যা হয়। তিনি তখন বৃহৎ ত্রাণকার্যে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯৯১এর ডিসেম্বরে চেন্নাই মঠের অধ্যক্ষের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর আশ্রমটি প্রভূত উন্নতিলাভ করে। বিশেষতঃ চেন্নাই মঠে শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দির নির্মাণকার্যে তাঁর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

স্বামী স্মরণানন্দজী ১৯৮৩-তে রামকৃষ্ণ মঠের ট্রাস্টি এবং রামকৃষ্ণ মিশনের গভর্নিং বডির সদস্য নিযুক্ত হন। ১৯৯৫-এর এপ্রিল মাসে তিনি বেলুড় মঠের প্রধান কার্যালয়ে সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৯৭ থেকে দীর্ঘ দশ বছর তিনি মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার পালন করেন। ২০০৭- এর মে মাসে তিনি রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের সহ-সঙ্ঘাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন এবং ১৭ জুলাই ২০১৭-তে স্বামী স্মরণানন্দজী রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশনের ষোড়শ অধ্যক্ষরূপে নির্বাচিত হন।

বিভিন্ন সময়ে তিনি দেশে ও বিদেশে অবস্থিত রামকৃষ্ণ মঠ-মিশনের শাখাকেন্দ্র এবং রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ ভাবপ্রচার পরিষদের অন্তর্গত আশ্রমগুলি পরিদর্শন করে শ্রীরামকৃষ্ণ, শ্রীমা সারদাদেবী, স্বামী বিবেকানন্দ ও বেদান্তের বাণী প্রচার করেছেন এবং বহু অধ্যাত্ম-জিজ্ঞাসু মানুষকে মন্ত্রদীক্ষা দান করেছেন।

স্বামী স্মরণানন্দজী ছিলেন অধ্যয়নপরায়ণ আর গভীর মননশীল। তাঁর লেখা প্রবন্ধ ও বক্তৃতাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয় বাংলায় 'স্মৃতি-স্মরণ-অনুশীলন' ও 'স্মরণ-মনন-অনুশীলন' এবং ইংরাজিতে Musings of a Monk

আধ্যাত্মিক প্রজ্ঞা, সরলতা, নিরভিমানতা ইত্যাদি গুণাবলীর জন্য শ্রীমৎ স্বামী স্মরণানন্দজী ছিলেন সকলের শ্রদ্ধাভাজন। তাঁর মহাপ্রয়াণে অগণিত সাধু-ভক্তদের হৃদয়ে সৃষ্টি হয়েছে এক অপূরণীয় শূণ্যতা।

স্বামী সুবীরানন্দ মহারাজ, 

সাধারণ সম্পাদক, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, বেলুড়

No comments