Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সাতটি মহাদেশের কথা আমাদের সকলেরই জানা। এবার বিজ্ঞানীরা বলছেন অষ্টম মহাদেশের কথা

সাতটি মহাদেশের কথা আমাদের সকলেরই জানা। এবার বিজ্ঞানীরা বলছেন অষ্টম মহাদেশের কথা

সাতটি মহাদেশের কথা আমাদের সকলেরই জানা। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন অষ্টম মহাদেশের কথা। আশ্চর্যের বিষয় এই আট নম্বর মহাদেশটিকে আমরা পৃথিবীর মানচিত্রে এখনও …

 

সাতটি মহাদেশের কথা আমাদের সকলেরই জানা। এবার বিজ্ঞানীরা বলছেন অষ্টম মহাদেশের কথা



সাতটি মহাদেশের কথা আমাদের সকলেরই জানা। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন অষ্টম মহাদেশের কথা। আশ্চর্যের বিষয় এই আট নম্বর মহাদেশটিকে আমরা পৃথিবীর মানচিত্রে এখনও সেভাবে দেখতে পাই না। কারণ এই মহাদেশটি  সমুদ্রের গভীরে নিমজ্জিত ।       

আকারে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের প্রায় অর্ধেক বা ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় সমান। এই মহাদেশটির ৯৪ শতাংশই প্রশান্ত মহাসাগরের তলায়। গবেষকদের মতে, এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের পূর্ব দিকে অবস্থিত এই মহাদেশটি ১০ কোটি বছর আগে আন্টার্কটিকা থেকে এবং ৮ কোটি বছর আগে অস্ট্রেলিয়া থেকে ভূতাত্ত্বিক শক্তি দ্বারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সাম্প্রতিক অতীতে প্রকাশিত একটি জার্নাল থেকে জানা গিয়েছে, যে সময় ভূতাত্ত্বিক শক্তি দ্বারা গন্ডোয়ানাল্যান্ড টুকরো টুকরো হয়ে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি মহাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল, সেইসময়েই সৃষ্টি হয়েছিল এই অষ্টম মহাদেশেরও ।

এই মহাদেশটি প্রথম কবে আবিষ্কার হয়েছিল? ১৬৪২ সাল। ডাচ অভিযাত্রী আবেল তাসমান পৌরাণিক কাহিনিতে বিশ্বাস করে নতুন দেশের সন্ধানে বেরিয়েছিলেন। খুঁজেও পেয়েছিলেন। তবে সেই দেশটি ছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর ব্রিটেনের অভিযাত্রী জেমস কুকও অভিযানে নেমেছিলেন। অবশেষে ১৮৯৫ সালে ভূতাত্ত্বিক জেমস হেক্টর দাবি করেন নিউজিল্যান্ড আসলে এক সুবিস্তৃত মহাদেশের অংশ। কিন্তু কোথায় সেই মহাদেশ? অনুসন্ধান ও গবেষণা চলতে থাকে। ১৯৬০ সালে একদল বিজ্ঞানী সমুদ্রের নীচে তেলের খনির সন্ধান করতে গিয়ে খুঁজে পান একটি বিশাল ভূখণ্ড।  এইসময়ই  সমুদ্রের তলদেশে নিমজ্জিত মহাদেশীয় অস্তিত্ব নিয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হন। কিন্তু গবেষণা চলতেই থাকে। কারণ কাঙ্ক্ষিত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছিলেন না কেউই। অবশেষে ২০১৭ সালে ভূতাত্ত্বিকরা এই মহাদেশটির সম্পর্কে নিশ্চিত হন। সমুদ্রের তলদেশ থেকে প্রাপ্ত পাথরের নমুনা নিয়ে গবেষণা করে ভূতাত্ত্বিকরা এই মহাদেশটির সম্পর্কে নিশ্চিত হন। তাসমানের অভিযানকে শুরু হিসেবে ধরলে এই মহাদেশের আবিষ্কারের দীর্ঘ পথ প্রায় ৩৭৫ বছরের।

ঘুমন্ত এই মহাদেশটির নাম ‘জিল্যান্ডিয়া’। ১৯৯৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূপদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ব্রুস লুয়েন্ডিক ‘জিল্যান্ডিয়া’ শব্দটি উদ্ভাবন করেন। ভূবিজ্ঞানীদের দাবি, সমুদ্রতলে নিমজ্জিত এই মহাদেশে এত বিপুল পরিমাণ জীবাশ্ম জ্বালানি রয়েছে, যা ভবিষ্যতে অন্যান্য মহাদেশের জ্বালানির চাহিদা মেটাতে সক্ষম। শুধু তাই নয়, খনিজ সম্পদেও পরিপূর্ণ এই অঞ্চল।‌ ‘ইন সার্চ অব এনসিয়েন্ট নিউজিল্যান্ড’ বইটির লেখক হামিশ ক্যাম্পবেল বলেন, আগে সমগ্র জিল্যান্ডিয়া মহাদেশটাই জলের তলায় ছিল। পরবর্তীকালে পাত সঞ্চালনের ফলে জলের উপর ভেসে ওঠে নিউজিল্যান্ড। 

কোনও ভূখণ্ডকে মহাদেশ আখ্যায় আখ্যায়িত করতে গেলে যে চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার তার সবগুলোই বিদ্যমান জিল্যান্ডিয়াতে। তাই বিজ্ঞানীদের দাবি জোরদার হচ্ছে এই অষ্টম মহাদেশের পক্ষে। ৪৯ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই ভূখণ্ডটির অবস্থান নিউজিল্যান্ড ও নিউ ক্যালেডোনিয়ার মাঝে। স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ও সমুদ্রতলের মাধ্যাকর্ষণ মানচিত্র ব্যবহার করে জিল্যান্ডিয়ার এলাকা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছে। তার মানচিত্র অঙ্কনও সম্ভবপর হয়েছে। তবুও জিল্যান্ডিয়া সম্পর্কে এখনও অনেক তথ্য আমাদের অজানা। এখানে কখনও কোনও প্রাণী বসবাস করত কি না, যদি কোনও প্রাণীর বসবাস থাকে তাহলে তাদের কোনও দেহাবশেষ আজও আছে কি না ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে গবেষণা চলছে নিরন্তর। আমাদের সামনে এখন শুধু একটাই প্রশ্ন  ভূগোল বইয়ের পাতায় এতদিনের চেনা পৃথিবীর মানচিত্র কি এবার বদলে যাবে? অপেক্ষা শুধু সময়ের।

No comments