প্রতি প্রশ্বাসে ‘বিষ’ ঢুকছে ভারতীয়দের শরীরে
প্রতি প্রশ্বাসে ‘বিষ’ ঢুকছে ভারতীয়দের শরীরে। সারা বিশ্বে বায়ুদূষণের নিরিখে সবচেয়ে দূষিত বাতাসের দেশের তালিকায় তৃতীয় স্থানে চলে এল ভারত। প্রথম দুটি স্থানে রয়েছে যথাক্রমে বাংলাদেশ ও পাকিস্…
প্রতি প্রশ্বাসে ‘বিষ’ ঢুকছে ভারতীয়দের শরীরে
প্রতি প্রশ্বাসে ‘বিষ’ ঢুকছে ভারতীয়দের শরীরে। সারা বিশ্বে বায়ুদূষণের নিরিখে সবচেয়ে দূষিত বাতাসের দেশের তালিকায় তৃতীয় স্থানে চলে এল ভারত। প্রথম দুটি স্থানে রয়েছে যথাক্রমে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। সবচেয়ে দূষিত রাজধানী শহরের তালিকায় যথারীতি শীর্ষেই রয়েছে দিল্লি। ২০১৮ সাল থেকে টানা এই তালিকায় শীর্ষেই থাকল ভারতের রাজধানী। এছাড়া সারা বিশ্বের প্রথম ৫০টি দূষিত শহরের তালিকায় ৪২টিই ভারতের। তার মধ্যে বিশ্বে প্রথম স্থানে বিহারের বেগুসরাই শহর। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি ও মুল্লানপুর। সুইজারল্যান্ডের বায়ুদূষক পরিমাপক সংস্থা আইকিউএয়ার-এর তরফে ‘ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি রিপোর্ট ২০২৩’ প্রকাশ করা হয়েছে। তাতেই উঠে এসেছে ভারতের বায়ুদূষণের এমন ভয়ঙ্কর তথ্য।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে বাতাসে ভাসমান অতিসূক্ষ ধূলিকণা বা পিএম২.৫-এর মাত্রার বার্ষিক গড় প্রতি ঘনমিটারে ৫৪.৪ মাইক্রোগ্রাম। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) বেঁধে দেওয়া মাত্রা (প্রতি ঘনমিটারে ০-৫ মাইক্রোগ্রাম)-র থেকে প্রায় ১১ গুণ বেশি। তবে দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অবস্থা আরও খারাপ। প্রথম স্থানে থাকা বাংলাদেশে পিএম২.৫ এর বার্ষিক গড় মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৭৯.৯ গ্রাম। পাকিস্তানে এই মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৭৩.৭ মাইক্রোগ্রাম। ২০২২ সালে এই তালিকায় অষ্টম স্থানে ছিল ভারত। এক বছরের মধ্যেই দেশে বাতাসের গুণমানের এই পতনে বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও আশঙ্কা বাড়ছে।
সবচেয়ে দূষিত দেশগুলির তালিকায় চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে, প্রথম দশের মধ্যে অষ্টম স্থানে রয়েছে ভারতের আর এক প্রতিবেশী নেপাল। এছাড়া সপ্তম ও অষ্টম স্থানে রয়েছে ইরাক ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। সবচেয়ে বিশুদ্ধ বাতাসের দেশের তালিকায় প্রথমে রয়েছে ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়া। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মরিশাস ও আইসল্যান্ড। এছাড়া স্বচ্ছ বায়ুর নিরিখে প্রথম দশে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডও।
শহরগুলির মধ্যে বেগুসরাইয়ে গত বছর বাতাসে অতি সূক্ষ ধূলিকণার গড় ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১১৮.৯ মাইক্রোগ্রাম। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাত্রার থেকে ২৩ গুণ বেশি। অথচ ২০২২ সালেও এই শহরে পিএম২.৫-এর মাত্রা ছিল প্রতি ঘনমিটারে মাত্র ১৯.৭ মাইক্রোগ্রাম। দূষিত শহরের তালিকায় বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অসমের গুয়াহাটি। সেখানেও ২০২২ এর তুলনায় বায়ুদূষণের মাত্রা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি (প্রতি ঘনমিটারে ১০২.১ মাইক্রোগ্রাম)। শহরগুলির মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। এছাড়া প্রথম দশটি দূষিত শহরের মধ্যে রয়েছে সিওয়ান, সহর্ষ, গোঁসাইগাঁও ও কাটিহার। ভারতের অন্য মেট্রো শহরগুলির অবস্থা অবশ্য দিল্লির মতো খারাপ নয়। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বই রয়েছে ২২৮ তম স্থানে। চেন্নাই রয়েছে ৭১০তম স্থানে। তুলনায় দূষণের মাত্রা বেশি কলকাতায়। এই তালিকায় কলকাতা রয়েছে ১৬৫তম স্থানে। এখানে বাতাসে অতিসূক্ষ ধূলিকণার মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৪৭.৮ মাইক্রোগ্রাম। সবচেয়ে বিশুদ্ধ বাতাস রয়েছে ফিনল্যান্ডের কুসামো শহরে। সেখানে পিএম২.৫ এর মাত্রা প্রায় শূ্ন্য। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিশুদ্ধ শহরও ফিনল্যান্ডেই।
No comments