গ্রেপ্তার তৃণমূলের ভাঙড়ের নেতা আরাবুলআইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লা খুনের ঘটনায় তৃণমূলের ‘তাজা নেতা’ আরাবুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিস। তাঁর বিরুদ্ধে বিজয়গঞ্জ বাজার থানায় কেস রুজু হয়েছিল। সেই মামলাতেই বৃহস্পতিবার শাসক দলে…
গ্রেপ্তার তৃণমূলের ভাঙড়ের নেতা আরাবুল
আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লা খুনের ঘটনায় তৃণমূলের ‘তাজা নেতা’ আরাবুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিস। তাঁর বিরুদ্ধে বিজয়গঞ্জ বাজার থানায় কেস রুজু হয়েছিল। সেই মামলাতেই বৃহস্পতিবার শাসক দলের এই প্রাক্তন বিধায়ককে থানায় ডেকে পাঠানো হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। দীর্ঘ জেরায় সন্তোষজনক উত্তর না মেলায় তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়। আরাবুলকে রাতেই লালবাজারে নিয়ে এসেছেন গোয়েন্দারা। আজ শুক্রবার শাসক দলের এই নেতাকে বারুইপুর আদালতে তোলার কথা। লোকসভা ভোটের আগে প্রভাবশালী এই নেতার গ্রেপ্তারি ভাঙড়ের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে কী প্রভাব ফেলে, এখন সেটাই দেখার।
দুর্নীতি বা অপরাধের সঙ্গে তৃণমূল যে কোনওভাবেই সমঝোতা করে না, এদিন তা আবারও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন দল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরাবুল গ্রেপ্তার হওয়ার অনেক আগে এদিন বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা। বিজেপিকে ‘সবথেকে বড় চোর’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দলের কেউ যদি অন্যায় করে, তাকে দল বের করে দিই। পুলিস গ্রেপ্তারও করে তাকে। কাউকে রেওয়াত করা হয় না। মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আরাবুলের গ্রেপ্তারির ঘটনায় তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, বিরোধীরা প্রতিদিন তৃণমূলের নামে গালমন্দ করছে। কিন্তু প্রমাণ হল, এ রাজ্যের পুলিস রাজধর্ম পালন করে।
২০২৩-এর ১৫ জুন পঞ্চায়েত মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে উত্তপ্ত হয় উত্তর কাশীপুর এলাকা। দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় আইএসএফ এবং তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে। ব্যাপক বোমাবাজি ও গুলি চলে। সংঘর্ষ চলাকালীন আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিনের মাথায় গুলি লাগে। সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত্যু হয় তাঁর। খুনের লিখিত অভিযোগ হয় আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে। প্রথমে উত্তর কাশীপুর থানায় কেস রুজু হয়। কলকাতা পুলিস ভাঙড় ডিভিশনের দায়িত্ব নেওয়ার পর বিজয়গঞ্জ বাজার থানায় ওই মামলা স্থানান্তরিত হয়। তার তদন্তে নেমে লালবাজার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করে। গোলমালে শাসক দলের ওই নেতার যে ভূমিকা ছিল, তা উঠে আসে। তাঁর লোকজনই গুলি চালিয়েছিল বলে জানা যায়। যেহেতু বিজয়গঞ্জ থানার কাজকর্ম উত্তর কাশীপুর থানা থেকেই চলছে, তাই সেখানেই আরাবুলকে ডেকে পাঠানো হয়। পঞ্চায়েত সমিতির বৈঠক সেরে তিনি হাজির হন থানায়। বেশ কিছুক্ষণ জেরা করা হয় তাঁকে। পরে সেখানেই গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তে উঠে আসছে, খুন ছাড়াও দক্ষিণ কলকাতার একটি রিয়েল এস্টেট সংস্থার কাছ থেকে কোটি টাকা ‘তোলা’ও দাবি করেছিলেন আরাবুল। ভাঙড়ে তাদের প্রজেক্ট চলছে। সংস্থার তরফে নবান্নের শীর্ষস্তরে অভিযোগ জমা পড়ে। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছিল। অভিযোগ, আরাবুল এক সহযোগীর ফোন ব্যবহার করে এই তোলা দাবি করেছিলেন।
No comments