Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

নবদ্বীপে লাল দইয়ের রহস্য

নবদ্বীপে লাল দইয়ের রহস্যনবদ্বীপে লাল দইয়ের জন্মসাল বলতে গেলে আনুমানিক ১৯৩০। তবে ইতিহাস ঘাঁটতে বসলে দেখা যায় এই দইয়ের আবিষ্কর্তা নিয়ে রয়েছে মতভেদ। কেউ বলেন ফাঁসিতলার লাল ঘোল ব্যবসায়ী কালী ঘোষ আর তার ভাই হরি ঘোষই এর উদ্ভাবক।…

 



নবদ্বীপে লাল দইয়ের রহস্য

নবদ্বীপে লাল দইয়ের জন্মসাল বলতে গেলে আনুমানিক ১৯৩০। তবে ইতিহাস ঘাঁটতে বসলে দেখা যায় এই দইয়ের আবিষ্কর্তা নিয়ে রয়েছে মতভেদ। কেউ বলেন ফাঁসিতলার লাল ঘোল ব্যবসায়ী কালী ঘোষ আর তার ভাই হরি ঘোষই এর উদ্ভাবক। লাল ঘোলের ব্যবসায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়ার পরই লাল দই বানিয়ে সবাইকে তাক লাগান তাঁরা। আবার অনেকের মতে তৎকালীন নামকরা কালী ময়রা অর্থাৎ কালীপদ মোদকই প্রথম এই দইয়ের সাথে সবার পরিচয় করিয়েছিলেন।

তা সে তৈরী যেই করুন না কেন এই লোভনীয় মিষ্টান্নটি প্রস্তুত প্রণালী এমন কিছু কঠিন নয়। প্রথমে গরু বা মহিষের সাদা ঘন দুধকে হালকা আঁচে উনুনে বসাতে হয়। তবে লাল দই বানানোর জন্য জ্বালানিতে রয়েছে এক বিশেষত্বের ছোঁয়া। কাঠের জ্বালে প্রথম ৭ ঘন্টা ফুট দিয়ে দুধকে লাল করতে হয়। লালচে দুধের পরিমান প্রায় এক তৃতীয়াংশ হওয়ার পর তা নামিয়ে বিভিন্ন মাপের মাটির ভাঁড়ে ঢেলে চট জড়ানো হয়। এবার উনুনে কাঠের পরিবর্তে রাখা হয় কয়লার রগরগে আঁচ। ওই আঁচের চারপাশে ভাঁড়গুলিকে সাজিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় গোটা রাত। ব্যস এরপর দিনের আলো ফুটলেই দর্শন হয় লালচে দইয়ের। ছুরি ছাড়া এই দই কাটা যায় না বলে ‘চাক্কু দই’ নামেও এর বেশ পরিচিতি রয়েছে। রামকৃষ্ণ ঘোষ, পাঁচুগোপাল দাস, উৎপল ঘোষ, রাজকুমার ঘোষদের হাত ধরেই এই দই এক কালে মানুষের মুখের ভাষা কেড়ে নিয়েছিল। তাই তাঁদের‌ দেখানো সেই প্রাচীন পদ্ধতি মেনে আজও নবদ্বীপে তৈরী হয় লালচে মিষ্টি দই। তবে এত প্রসিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও জিআই না পাওয়ার একটা চাপা কষ্ট আজও রয়েছে নবদ্বীপের পুণ্যভূমিতে।

শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মভিটে এই নবদ্বীপ চিরকালই শ্রীকৃষ্ণের চারণভূমি। ঠাকুর দেবতা না মেনেও তাই দেশ বিদেশের বহু মানুষের আনাগোনায় ভরপুর এই নবদ্বীপ। আর সেই নবদ্বীপে পা রেখে ক্ষীর দইয়ের ভক্ত হবেন না, এ যেন ভাবনারও অতীত। আনন্দ উৎসবে আজও এই দইয়ের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। কোনো কৃত্রিম রঙ ছাড়াই রক্ত চন্দন মাখা এই ক্ষীরদই বাঙালি মিষ্টি পরিবারের কাছে আজ যেন এক ঐতিহ্যের বুনিয়াদ।

No comments