Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

শত্রুনাশ ও বিজয়যোগ তিথিতে অসম্পূর্ণ’ রামমন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে?

শত্রুনাশ ও বিজয়যোগ তিথিতে অসম্পূর্ণ’ রামমন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে?
বাকি মাত্র পাঁচদিন। তারপরই রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে ‘অসম্পূর্ণ’ রামমন্দিরে। ঠিক দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে। এটাই সবচেয়ে শুভ মুহূর্ত বলে জানিয়েছেন ট্রাস্টে…

 




শত্রুনাশ ও বিজয়যোগ তিথিতে অসম্পূর্ণ’ রামমন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে?


বাকি মাত্র পাঁচদিন। তারপরই রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে ‘অসম্পূর্ণ’ রামমন্দিরে। ঠিক দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে। এটাই সবচেয়ে শুভ মুহূর্ত বলে জানিয়েছেন ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই। মঙ্গলবার সেই তিথি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন উত্তরাখণ্ডের যোশিমঠে অবস্থিত জ্যোতির্মঠের আদিগুরু শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দ। তাঁর কথায়, ‘বিশেষ এই তিথিতে দু’টি ফলাদেশ রয়েছে—শত্রুনাশ ও বিজয়যোগ। কোন শত্রুর নাশ চাইছেন নরেন্দ্র মোদি? রামলালার তো কোনও শত্রু নেই। তাহলে কোন শত্রুনাশের জন্য এত তাড়া? আর বিজয়ই বা কার? রামলালার নয় নিশ্চয়ই! রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে কোন বিজয় হাসিল করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী?’ ইতিমধ্যেই ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না বলে ঘোষণা করেছেন দেশের চার শঙ্করাচার্য। সেই প্রসঙ্গেও বিস্ফোরক দাবি করেছেন অভিমুক্তেশ্বরানন্দ। সাফ বলেছেন, ‘রামমন্দিরে অভিষেকের কোনও আমন্ত্রণ আমরা পাইনি। তাহলে প্রত্যাখ্যানের কথা আসছে কী করে!’

অসম্পূর্ণ রামমন্দির উদ্বোধন নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের আগে দেশজুড়ে ধর্মের জিগির তুলতেই মোদি সরকারের এমন সিদ্ধান্ত। তার মধ্যে এবার প্রাণ প্রতিষ্ঠার তিথি ও ফলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। জানা গিয়েছে, এই শুভক্ষণ বেছে দিয়েছেন কাশীর জ্যোতিষী পণ্ডিত গণেশ্বর শাস্ত্রী দ্রাবিড়। কিন্তু কার কথায় তা বেছে নেওয়া হয়েছে? সেই প্রশ্নও তুলে দিয়েছেন জ্যোতির্মঠের শঙ্করাচার্য। তাঁর কথায়, ‘রামমন্দিরের সঙ্গে গোটা দেশের আবেগ জড়িয়ে। কিন্তু ভালো কাজের উদ্বোধনে এত তাড়াহুড়ো কেন? বাড়ি সম্পূর্ণ না হলে আমরা তো সেখানে থাকতে যাই না। তাহলে অসম্পূর্ণ মন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে কেন? উনি কি মন্দির পাহারা দেবেন? নাকি সবটাই তিথির জন্য? গণেশ্বর শাস্ত্রীকে জানুয়ারিতে তারিখ দিতে বলা হয়েছিল। কারা তাঁকে তারিখ বা সময়টি বের করতে বলেছিল? সেই প্রশ্নের উত্তর দেশের মানুষের পাওয়া উচিত।’

ধর্ম নিয়ে বিজেপির, আরও স্পষ্ট করে বললে প্রধানমন্ত্রী ও সরকার ঘনিষ্ঠদের বাড়াবাড়িতে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ অভিমুক্তেশ্বরানন্দ। মাসকয়েক আগেই মোদিকে ‘বিষ্ণুর অবতার’ বলে অভিহিত করেছিলেন রামমন্দির ট্রাস্টের চম্পত রাই। তা নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি জ্যোতির্মঠের শঙ্করাচার্য। হিন্দুত্বের ‘পোস্টার বয়ে’র প্রতি তাঁর কটাক্ষ, ‘ভগবান বিষ্ণু যখন স্বয়ং বিরাজমান, তখন কোনও মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার কী প্রয়োজন?’ নাম না করে নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ধর্মীয় ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ এনেছেন তিনিও। পুরীর শঙ্করাচার্যের মতোই জানিয়েছেন, রাজনীতি ও ধর্ম দু’টি ভিন্ন ক্ষেত্র। দু’টির মিশে যাওয়া কখনও কাম্য নয়। রাজনীতিবিদদের ধর্মীয় নেতা বা ধর্মীয় নেতাদের রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা আসলে বিপর্যয়ের লক্ষণ।

দেশজুড়ে একের পর এক ধর্মীয় করিডর তৈরি করছে মোদি সরকার। সেই ইস্যুতে বিরোধীদের সুরেই মুখ খুলেছেন অভিমুক্তেশ্বরানন্দ। তাঁর কথায়, ‘কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে একের পর এক ধর্মীয় করিডর তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এর জন্য সরকারি অর্থের কোনও প্রয়োজন নেই। সরকার যদি টাকা বিনিয়োগ করে, তাহলে সেখান থেকে অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যও থাকবে। আম জনতার টাকা খরচ করে ফের তাঁদের থেকেই নিজেদের কোষাগার ভরবে সরকার। ফলে মন্দির হয়ে উঠবে বাণিজ্যিক কেন্দ্র। তৈরি হবে ধনী-গরিবের মধ্যে ভেদাভেদ। বৈষম্যের শিকার হবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তা মোটেও কাম্য নয়।’

রামমন্দির নিয়ে প্রচারে কোনও খামতি রাখছে না বিজেপি-আরএসএস-মোদি সরকার। কেউ এ নিয়ে বেসুরে কথা বললেই দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে ‘হিন্দুবিরোধী’ বলে। কিন্তু তারপরও ধ্বজাবিহীন অসম্পূর্ণ মন্দির, অব্রাহ্মণের হাতে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। বিরোধীদের অভিযোগের সুর এখন দেশের চার শঙ্করাচার্যের গলাতেও। কোণঠাসা হচ্ছে গেরুয়া শিবির। তাদের ভরসা শুধু ভক্তদের ‘মন্দির’ আবেগ। 

No comments