ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের নির্দেশ দিলেন দলের সমস্ত স্তরের কর্মীদের তৃণমূল সুপ্রিমো ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ঐক্যবদ্ধ লড়াই হল জয়ের বীজমন্ত্র। স্পষ্টভাবে এই কথার উল্লেখসহ এখন থেকেই লোকসভার ভোটযুদ্ধে নেমে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হল। দলের সমস্ত স…
ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের নির্দেশ দিলেন দলের সমস্ত স্তরের কর্মীদের তৃণমূল সুপ্রিমো ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ঐক্যবদ্ধ লড়াই হল জয়ের বীজমন্ত্র। স্পষ্টভাবে এই কথার উল্লেখসহ এখন থেকেই লোকসভার ভোটযুদ্ধে নেমে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হল। দলের সমস্ত স্তরের কর্মীদের এই নির্দেশ দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং।
কোন কোন ইস্যু সামনে রেখে, বিজেপি এবং সিপিএমের বিরুদ্ধে প্রচারে ঝাঁপাতে হবে, তার গাইডলাইনও দিলেন নেত্রী। উন্নয়নকে সামনে রেখে প্রচার অভিমুখের একটি পুস্তিকা তৈরির দায়িত্ব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়েছেন মমতা। তবে কোনও কোনও নেতা প্রকাশ্যে দল-বিরোধী মন্তব্য করায় তিনি যে ভীষণ অসন্তুষ্ট, তাও বুঝিয়ে দেন নেত্রী। জানিয়ে দেন, এসব আর বরদাস্ত করবেন না। তাঁর কড়া নির্দেশ, দলকে জড়িয়ে প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়া চলবে না। সামাজিক মাধ্যমে বা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এমন মন্তব্য করলে কঠোর পদক্ষেপই করা হবে। প্রয়োজন বোধে অবাধ্যদের ছেঁটে ফেলতেও দ্বিধা করবেন না তিনি।
রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, লোকসভা ভোটের আসর শুরু হয়ে যাবে মার্চ থেকেই। ফলে হাতে সময় মাত্র জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি। এই সময়ের মধ্যেই সাংগঠনিক কাজকর্ম সেরে ফেলতে চাইছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এই সূত্রেই বুধবার থেকে জেলাভিত্তিক বৈঠক শুরু করেছেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী। এদিন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক পদাধিকারীদের নিয়ে কালীঘাটে এক বৈঠকে ডাকেন মমতা। ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিও।
দলীয় সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের নেতৃত্বকে মমতা বলেছেন, আর ঘরে বসে রাজনীতি নয়। মাঠে নামুন। বিজেপি আমাদের ‘চোর’ বললে ওদের ‘ডাকাত’ বলুন। বিজেপি নেতারা হল সবচেয়ে বড় ডাকাত। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ওদের। আর সিপিএম হল নরকঙ্কালের নায়ক। ওদের বিরুদ্ধে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। রাজ্যে যেসব উন্নয়ন হয়েছে, প্রচারে সেসবই তুলে ধরতে হবে। আর কেন্দ্রের সরকারে অধিষ্ঠিত বিজেপির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, বঞ্চনা প্রভৃতিও তুলে ধরতে জোর দিয়ে। অভিষেক একটি পুস্তিকা তৈরি করবেন। জেলায় জেলায় সেটা ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
এক্ষেত্রে দলের গাইডলাইন মেনে সকলকে একসুরে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী। কিন্তু প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে দলকে অস্বস্তির মুখে ফেলা যাবে না। কড়া হুঁশিয়ার তাঁর। উল্লেখ করেছেন, মুখপাত্র হিসেবে দল যাঁদের দায়িত্ব দেবে, দলের কথা বলবেন শুধু তাঁরাই। নতুন রাজ্য মুখপাত্র তৈরির করার দায়িত্ব মমতা দিয়েছেন সুব্রত ও অভিষেককে। মমতা জানিয়েছেন, দলের বিষয়ে কারও কিছু বলার থাকলে তা লিখিতভাবে দিন।
এদিন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একাধিক নেতাকে সতর্ক করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। মৃদু ধমকও খেয়েছেন কেউ কেউ। প্রকাশ্যে বিবাদ না করে অভ্যন্তরীণ সমস্যা সাতদিনের মধ্যেই মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ তৃণমূল নেত্রীর। দুই মেদিনীপুরের দিকে বাড়তি নজর দেওয়া এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ভালো মুখ খোঁজার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মানস ভুঁইয়াকে।
সূত্রের খবর, বিজেপি ও সিপিএমের বিরুদ্ধে সরব হলেও, এদিন দলীয় বৈঠকে কংগ্রেস প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্যই করেননি মমতা। তিনি বলেছেন, ‘ইন্ডিয়া’ জোটে আছি, তবে সিপিএমের সঙ্গে সঙ্গ নয়। এদিন বৈঠকে সুব্রত বক্সি ও অভিষেক পাশাপাশি বসেন। দলের প্রার্থীকে একজোট হয়ে জেতানোর ডাক দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি। আর অভিষেকও জানিয়েছেন, দল যে দায়িত্ব দেবে, তা পালন করব। ‘ভালো ছেলে’ মন্তব্যসহ এদিন সাংসদ দেবের ভূয়সী প্রশংসা করেন মমতা। আগামী দিনে দলের কাজে তাঁকে প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
No comments