বই পড়ার অভ্যেস ফেরাতে হবে
চলতি জানুয়ারিতেই কলকাতায় শুরু আন্তর্জাতিক পুস্তক মেলা। যদিও বিগত কয়েক বছর ধরেই নানা মহলে একটি মতবাদ উঠে এসেছে, মানুষ বই কম পড়েন। আধুনিক প্রজন্ম নাকি মোবাইল রিলস, ইন্সটায় বেশি মজে! তাই বই পড়ার অভ্যেস যদি …
বই পড়ার অভ্যেস ফেরাতে হবে
চলতি জানুয়ারিতেই কলকাতায় শুরু আন্তর্জাতিক পুস্তক মেলা। যদিও বিগত কয়েক বছর ধরেই নানা মহলে একটি মতবাদ উঠে এসেছে, মানুষ বই কম পড়েন। আধুনিক প্রজন্ম নাকি মোবাইল রিলস, ইন্সটায় বেশি মজে! তাই বই পড়ার অভ্যেস যদি ফেরত আনা যায়, তাহলে জীবনে লাভ বই ক্ষতি নেই। তা কেমন?
• ধৈর্য বাড়ায়: গল্প-উপন্যাস, প্রবন্ধ— বিশেষ করে গোয়েন্দা গল্প বা টানটান কোনও উপন্যাসের শেষে কী হল তা জানতে যে বইটি পড়ে যেতে হয়, এই অভ্যেস থেকে জন্ম নেয় ধৈর্য ও অপেক্ষা করতে পারার স্বভাব। রিলস বা ভিডিও খুব অল্প সময়ের হওয়ায় এগুলো বেশি দেখলে মস্তিষ্ক যে কোনও জিনিসেরই খুব দ্রুত নিষ্পত্তি চায়। অপেক্ষা করার সুঅভ্যেস তৈরি হয় না। বই পড়লে মনও স্থির হয়।
• ভাষাজ্ঞান বাড়ে: বই পড়লে নির্দিষ্ট ভাষা সম্পর্কে দখল ও সৃজনশীলতার জ্ঞান বাড়ে। ইংরেজি ও যে কোনও বিদেশি ভাষা ভালো করে শেখার যেমন অন্যতম মাধ্যম সেই ভাষার বই ও কাগজ। বই-ই যে কোনও ভাষাকে খুব দ্রুত আয়ত্তে আনতে সাহায্য করে। বই পড়লে শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয় এবং শব্দচয়ন ও বাক্য বিন্যাসের অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়। বেশি বই পড়লে শব্দভাণ্ডারে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শব্দ যোগ হতে থাকে।
• কল্পনাশক্তিতে শান: যেসব শিশু বই পড়ে, তাদের মেধা ও কল্পনা করার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। জীবনের যে কোনও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পাঠ শুরু হয় বই পড়ার মাধ্যমেই। বই পড়লে বিশ্লেষণধর্মী চিন্তাশক্তিও উন্নত হয়।
• রোগ প্রতিরোধ: বই পড়লে মানসিক উত্তেজনা তৈরি হয়। নানা গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বই পড়লে ডিমেনশিয়া, অ্যালঝাইমার্সের মতো বয়সকালের অসুখ অনেকটা ঠেকিয়ে রাখা যায়। মস্তিষ্ককে সচল রাখে বই। বই পড়লে ‘হ্যাপি হরমোন’ ডোপামিন ক্ষরণ হয়, ফলে মস্তিষ্কের বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকানো যায়।
• মানসিক চাপ হ্রাস: বই অচেনা ও অজানা জগতের সন্ধান দেয়, তাই বই পড়লে মানসিক চাপ কমে। বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন শিশুদেরও বই পড়ার উপর জোর দেওয়া হয়, যাতে মানসিক চাপ কমে, মন বিকশিত হতে পারে।
• লেখার ক্ষমতা: কথায় বলে এক লাইন লিখলে একশো লাইন বই পড়তে হয়। বই পড়ার ফলে নিজের অন্তরেও লেখার গুণ, ভাবনার জগৎ তৈরি হয়। ফলে পাঠকও লেখা ও সৃজনশীল সৃষ্টির উপযোগী হয়ে ওঠেন।
• যোগাযোগের ভিত্তি: বই যোগাযোগের দক্ষতা ও বাচনভঙ্গি উন্নত করে। যাঁরা বই পড়েন তাঁরা খুব সহজেই বোঝেন কোন পরিস্থিতিতে কী কথা বলতে হবে, কখন বলতে হবে। অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনেও তাঁরা দক্ষ।
ভার্বাল ও নন ভার্বাল কমিউনিকেশনে বইয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা বই পড়েন না তাঁদের জ্ঞান কেবল পাঠ্যপুস্তকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।
No comments