Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

পবিত্র সফলা একাদশী ব্রত

পবিত্র সফলা একাদশী ব্রত  ২১শে পৌষ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ,ইং ৭ই জানুয়ারী ২০২৪ সাল, রবিবার।   পারনঃ-পরের দিন সকাল ০৮:০৮ থেকে ০৯:৫৭ মি: মধ্যে কলকাতা, ভারতীয় সময়,এবং সকাল ০৮:৩৮ থেকে ১০:১৭ মি: মধ্যে ঢাকা, বাংলাদেশ সময়।ব্রত ও মাহাত্ম্যকথাঃ---পৌ…

 




পবিত্র সফলা একাদশী ব্রত  ২১শে পৌষ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ,ইং 

৭ই জানুয়ারী ২০২৪ সাল, রবিবার।

   পারনঃ-পরের দিন সকাল ০৮:০৮ থেকে ০৯:৫৭ মি: মধ্যে কলকাতা, ভারতীয় সময়,

এবং সকাল ০৮:৩৮ থেকে ১০:১৭ মি: মধ্যে ঢাকা, বাংলাদেশ সময়।

ব্রত ও মাহাত্ম্যকথাঃ---পৌষ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশীর নাম “সফলা” ।ব্রহ্মাণ্ড পুরাণে যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণ সংবাদে এই তিথির মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে। 

যুধিষ্ঠির বললেন-হে প্রভু। পৌষ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশীর নাম, বিধি এবং পূজ্যদেবতা বিষয়ে আমার কৌতূহল নিবারণ করুন।

শ্রীকৃষ্ণ বললেন -হে মহারাজ ! আপনার প্রতি স্নেহবশত সেই ব্রত কথা বিষয়ে বলছি । এই ব্রত আমাকে যেরকম সন্তুষ্ট করে, বহু দান দক্ষিণাযুক্ত যজ্ঞাদি দ্বারা আমি সেরকম সন্তুষ্ট হই না। তাই যত্নসহকারে এই ব্রত পালন করা কর্তব্য। পৌষ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশীর নাম “সফলা” । নাগদের মধ্যে যেমন শেষ নাগ ,পক্ষীদের মধ্যে যেমন গরুড়,মানুষের মধ্যে যেমন ব্রাহ্মণ, দেবতাদের মধ্যে নারায়ণ সর্বশ্রেষ্ঠ, তেমনই সকল ব্রতের মধ্যে একাদশী ব্রতই সর্বশ্রেষ্ঠ ।

হে মহারাজ!যারা এই ব্রত পালন করেন,তারা আমার অত্যন্ত প্রিয় । তাদের এজগতে ধনলাভ ও পরজগতে মুক্তি লাভ হয় । হাজার হাজার বছর তপস্যায় যে ফল লাভ হয় না, একমাত্র সফলা একাদশীতে রাত্রি জাগরণের ফলে তা অনায়াসে প্রাপ্ত হওয়া যায়। 

মহিষ্মত নামে এক রাজা প্রসিদ্ধ চম্পাবতি নগরে বাস করতেন। রাজার চারজন পুত্র ছিল। কিন্তু তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র লুম্ভক সর্বদা পরস্ত্রী গমন, মদ্যপান প্রভৃতি অসৎ কার্যে লিপ্ত ছিল। সে সর্বক্ষন ব্রাহ্মণ, বৈষ্ণব ও দেবতাদের নিন্দা করত । পুত্রের এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজা তাকে রাজ্য থেকে বের করে দিলেন । স্ত্রী-পুত্র, পিতা- মাতা, আত্মীয়স্বজন পরিত্যক্ত হয়ে সে এক গভীর বনে প্রবেশ করল । সেখানে কখনও জীবহত্যা আবার কখনও চুরি করে জীবন ধারণ করতে লাগল। কিছুদিন পরে একদিন সে নগরে প্রহরীদের কাছে ধরা পড়ল । কিন্তু রাজপুত্র বলে সেই অপরাধ থেকে সে মুক্তি পেল। পুনরায় সে বনে ফিরে গিয়ে জীবহত্যা ও ফলমূল আহার করে দিন যাপন করতে লাগল। ঐ বনে বহু বছরের পুরনো একটি বিশাল অশ্বথ বৃক্ষ ছিল। সেখানে ভগবান শ্রী বাসুদেব বিরাজমান বলে বৃক্ষটি দেবত্ব প্রাপ্ত হয়েছে। সেই বৃক্ষতলে পাপবুদ্ধি লুম্ভক বাস করত । বহুদিন পর তার পূর্বজন্মের কোন পুণ্য ফলে সে পৌষ মাসের দশমী দিনে কেবল ফল আহারে দিন অতিবাহিত করল । কিন্তু রাত্রিতে অসহ্য শীতের প্রকোপে সে মৃতপ্রায় হয়ে রাত্রিযাপন করল। পরদিন সূর্যোদয় হলেও সে অচেতন হয়েই পড়ে রইল। দুপুরের দিকে তার চেতনা ফিরল । ক্ষুধা নিবারণের জন্য সে অতিকষ্টে কিছু ফল সংগ্রহ করল । এরপর সেই বৃক্ষতলে এসে পুনরায় বিশ্রাম করতে থাকল। রাত্রিতে খাদ্যাভাবে সে দুর্বল হয়ে পড়ল । সে প্রাণ রক্ষার্থে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ফলগুলি নিয়ে-‘হে ভগবান ! আমার কি গতি হবে’ বলে অশ্রুপাত করতে করতে সেই বৃক্ষমূলে, হে লক্ষ্মীপতি নারায়ণ! আপনি প্রসন্ন হোন’বলে নিবেদন করল। এইভাবে সে অনাহারে ও অনিদ্রায় সেই রাত্রি যাপন করল । ভগবান নারায়ণ সেই পাপী লুম্ভকের রাত্রি জাগরণকে একাদশীর জাগরণ এবং ফল অর্পণকে পূজা বলে গ্রহণ করলেন। এইভাবে অজ্ঞাতসারে লুম্ভকের সফলা একাদশী ব্রত পালন হয়ে গেল । প্রাতঃকালে আকাশে দৈববাণী হল- হে পুত্র তুমি সফলা ব্রতের পুণ্য প্রভাবে রাজ্য প্রাপ্ত হবে। সেই দৈববাণী শোনা মাত্র লুম্ভক দিব্যরুপ লাভ করল । স্ত্রী পুত্র সহ কিছুকাল রাজ্যসুখ ভোগের পর পুত্রের উপর রাজ্যের ভার দিয়ে সে সন্ন্যাস আশ্রম গ্রহণ করল । অবশেষে মৃত্যুকালে সে অশোক অভয় ভগবানের কাছে ফিরে গেল। হে মহারাজ! এভাবে সফলা একাদশী যিনি পালন করেন, তিনি জাগতিক সুখ ও পরে মুক্তি লাভ করেন । এই ব্রতে যারা শ্রদ্ধাশীল তাঁরাই ধন্য। তাঁদের জন্ম সার্থক, এতে কোন সন্দেহ নেই। এই ব্রত পাঠ ও শ্রবণে মানুষের রাজসূয় যজ্ঞের ফল লাভ হয়। দয়া করে সবাই একাদশী ব্রত পালন করুন এবং অন্যকে একাদশী ব্রত পালন করতে উৎসাহিত করুন এবং বেশী বেশী করে হরিনাম জপ করুন এবং ভগবানের কৃপা লাভ করুন।। 

যে মানুষ একাদশীর দিন শস্যদানা গ্রহণ করে

সে তার পিতা, মাতা, ভাই এবং গুরু হত্যাকারী এবং সে যদি বৈকুন্ঠলোকেও উন্নীত হয় তবুও তার অধঃপতন হয়।। (স্কন্দ পুরাণ) 

তাই নিজে একাদশী ব্রত পালন করুন এবং অন্যকেও একাদশী ব্রত পালনে উৎসাহিত করুন।।


একাদশী সংকল্প মন্ত্রঃ ---"একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্হিত্বা অহম্ অপরেহহনি।ভোক্ষ্যামি পুন্ডরীকাক্ষ স্মরনং মে ভবাচ্যুত।।

অনুবাদ: হে পুন্ডরীকাক্ষ হে অচ্যূত আমি একাদশীর দিন উপবাস পূর্বক এই ব্রত পালন করার জন্য আপনার স্মরণ গ্রহণ করছি।একাদশীর পারণ  মন্ত্রঃ ---


”একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব।

  প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব॥”


অনুবাদ: হে কেশব! আমি অজ্ঞানরূপ অন্ধকারে নিমজ্জিত হইয়াছি, হে নাথ! এই ব্রত দ্বারা আমার প্রতি প্রসন্ন হইয়া আমাকে জ্ঞানরূপ চক্ষু প্রদান করুন।।


 

No comments