Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

শীতকালে কি রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়?

শীতকালে কি রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়?
গ্রীষ্মকালের তুলনায় রক্তচাপ শীতকালে বেশি হতে পারে। শীতকালে তাপমাত্রা নীচে নামলে তার প্রভাব কিছুটা হলেও রক্তচাপের উপর পড়ে। দেহের যে সূক্ষ্ম ধমনী এবং শাখা-প্রশাখাগুলি আছে, সেগুলি শীতের কম তাপমাত্রায় সং…

 



শীতকালে কি রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়?


গ্রীষ্মকালের তুলনায় রক্তচাপ শীতকালে বেশি হতে পারে। শীতকালে তাপমাত্রা নীচে নামলে তার প্রভাব কিছুটা হলেও রক্তচাপের উপর পড়ে। দেহের যে সূক্ষ্ম ধমনী এবং শাখা-প্রশাখাগুলি আছে, সেগুলি শীতের কম তাপমাত্রায় সংকুচিত হয়ে যায়। সংকুচিত ধমনী এবং তার শাখা-প্রশাখার মধ্যে দিয়ে রক্ত চলাচলের সময় বেশি মাত্রায় বাধার সম্মুখীন হয়। এই কারণেই বাড়ে রক্তচাপ। এখানেই শেষ নয়। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ক্যাটেকোলামাইন, নর অ্যাড্রিনালিন ধরনের হরমোন শীতকালে একটু বেশি বেরয়। এই হরমোনগুলিও রক্তচাপ বৃদ্ধির পিছনে দায়ী থাকে। এছাড়া দেহে ভিটামিন ডি হরমোনের খানিকটা ঘাটতিও দেখা দেয় শীতকালে। সেই কারণেও রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে। শীতকালে  মানুষ হয়তো রোদে ঘোরেন, তবে পরনে বেশি পোশাক থাকার জন্য সূর্যালোক ত্বক পর্যন্ত পৌঁছায় না। তার ফলে ভিটামিন ডি-এর পরিমাণ একটু কমে যায় যা রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়ার পিছনে একটি পরোক্ষ কারণ। শীতকালে কোলেস্টেরলও অস্থায়ীরূপে একটু বৃদ্ধি পায়। তাতে রক্তবাহী নালীর ভেতরের যে লাইনিং বা আস্তরণ যাকে এন্ডোথেলিয়াম বলে তার কাজটা ঠিকমতো হয় না। দেখা গিয়েছে, নাইট্রিক অক্সাইড জাতীয় পদার্থ যা শিরা উপশিরার মাধ্যমে রক্তবাহী নালীতে থাকে তার পরিমাণ কমে যায়। ফলে শিরা উপশিরার স্ফীতি বাধাপ্রাপ্ত হয়। এই কারণেই শিরা উপশিরার সংকোচন বেড়ে যায়। এইরকম অনেকগুলি কারণে শীতকালে রক্তচাপ বাড়ে। সুতরাং শীতকালে যত আবহাওয়ার তাপমাত্রা কমে ততই রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। 


শীতকালে কি এই কারণেই স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাক বাড়ে?

কিছুটা তো বটেই। তবে শুধু শীত ঋতু এল বলেই স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক হতে শুরু করল এমন নয়। হার্টের অসুখ, স্ট্রোকের পিছনে  অন্যান্য লাইফস্টাইল ফ্যাক্টর যেমন স্ট্রেস একটা বড় কারণ বইকি। 


বায়ুদূষণ কি কোনওভাবে সমস্যা তৈরি করতে পারে?

শীতকালে বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ে। বায়ুদূষণের কারণে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা একটু কমে এবং বাতাসে ভাসমান বিভিন্ন সূক্ষ্ম কণিকা ফুসফুসে প্রবেশ করে। এই কারণেও রক্তচাপ বাড়তে পারে। ফলে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, সিওপিডি-এর মাত্রাও বেড়ে যায়।


করণীয় কী?

নিয়মিত রক্তচাপ মাপার ব্যবস্থা করা দরকার। বিশেষ করে শীতকালে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা করতে হবে। কোনও ব্যক্তি আগে থেকে রক্তচাপের ওষুধ খেলে তাঁর উচিতচিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা। দরকার পড়লে ওষুধের ডোজ বাড়াতে হবে। আর যাঁরা হয়তো আগে ওষুধ খেতেন না, তবে এই সময়ে রক্তচাপ বেড়েছে তাঁদের ওষুধ খেতে দিতে হতে পারে। এছাড়া শীতের বিরুদ্ধে সঠিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে। সম্ভব হলে ঘরবাড়ি উষ্ণ রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। রুম হিটারের ব্যবস্থা থাকলে ভালো। তবে তা না থাকলেও উপযুক্ত গরম জামাকাপড় পরে থাকতে  হবে। স্নানের সময় অল্প গরম জল ব্যবহার করুন। মোট কথা কনকনে ঠান্ডা জলে স্নান না করাই ভালো।


এক্সারসাইজ করলে কি কোনও লাভ হবে?

শারীরিক শ্রম বা বা ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের দেশে শীতকালে ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি কমে যায়। বিশেষ করে দিনের দৈর্ঘ্য কমে ও রাতের দৈর্ঘ্য বেড়ে যায়। তাই একটানা কাজকর্ম করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে এক্সারসাইজ করলে রক্তচাপ সামলাতে সুবিধা হবে।


শীতকালে কখন এক্সারসাইজ ভালো? সকালে নাকি বিকেলে?

এই সময়ে সকালের দিকে তাপমাত্রা অনেকখানি কম থাকে। সেই সময় হাঁটতে বেরলে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে যা বিপজ্জনক। কারণ বয়স্কদের অনেকেরই হার্টের অসুখ, রক্তচাপ, সুগারের মতো কো মর্বিডিটি থাকে। ফলে তার উপর সর্দিকাশি হলে তা প্রাণঘাতী হতে পারে। অন্যদিকে বিকেলে যেমন তাপমাত্রা কমে আসে তেমনই বাতাসে ধূলিকণার মাত্রাও থাকে যথেষ্ট বেশি। তাই বিকেলে হাঁটতে বেরলে শারীরিক সমস্যার কবলে পড়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে। তাই একটু রোদ উঠলে, আবহাওয়া তুলনামূলক আরামদায়ক হয়ে উঠলে তখন হাঁটতে বেরনই ভালো।

No comments