Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

খাতা-কলমে বেশি বেতন দেখিয়ে সই করিয়ে কম বেতন দেওয়ার অভিযোগে শ্রমিক বিক্ষোভ

২৪ ঘন্টা কেটে গেল হলদিয়া বন্দরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ অব্যাহত
২৪ ঘন্টা কেটে গেল হলদিয়া বন্দরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ অব্যাহত। সমাধান সূত্রে আসতে পারেননি বন্দর কর্তৃপক্ষখাতা-কলমে বেশি বেতন দেখিয়ে সই করিয়ে কম বেতন দেওয়ার অভিযোগে শ্রমিক …

 




২৪ ঘন্টা কেটে গেল হলদিয়া বন্দরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ অব্যাহত


২৪ ঘন্টা কেটে গেল হলদিয়া বন্দরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ অব্যাহত। সমাধান সূত্রে আসতে পারেননি বন্দর কর্তৃপক্ষ

খাতা-কলমে বেশি বেতন দেখিয়ে সই করিয়ে কম বেতন দেওয়ার অভিযোগে শ্রমিক বিক্ষোভ 

শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে হলদিয়া বন্দরে। শ্রমিকদের বেতন থেকে পিএফের টাকা কেটে নেওয়া ঘিরে ১২ ই ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল থেকে চলে বিক্ষোভ। বিক্ষোভরত শ্রমিকরা বন্দরের রিপ্লে কার্গো হ্যান্ডেলিং সংস্থার অধীনে রয়েছেন। ওই সংস্থাই প্রধানত বন্দরের ডক এরিয়ায় সিংহভাগ বার্থে(যেখানে জাহাজ দাঁড়ায়) পণ্য ওঠানো নামানোর কাজ করে। বিক্ষোভের জেরে এদিন কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে বন্দর। ফিরিয়ে দিতে হয়েছে বন্দরমুখী জাহাজ। সন্ধে পর্যন্ত দফায় দফায় বৈঠকেও মেলেনি সমাধানসূত্র। আড়াই ডিসেম্বর শ্রমিক নেতৃত্ব শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা গেলেও সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি। ঠিকাদার সংস্থা repl এর সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় সভা করেছেন কিন্তু কোন কার্যকারিতা হয়নি। এই ঘটনায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি তারা রাজ্য প্রশাসনকে জানাচ্ছে। আইএনটিটিইউসিও কাজ বন্ধ করে এই ধরনের বিক্ষোভকে সমর্থন করে না বলে জানিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব।

 গত ১২ই ডিসেম্বর বেলা ১১টা থেকে বন্দরের ৮নম্বর বার্থে প্রথমে কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন ডাম্পারের ড্রাইভার, হেল্পার সহ অন্যান্য শ্রমিকরা। শ্রমিকদের দাবি, তাঁদের না জানিয়ে হঠাৎ করে পিএফের জন্য বড় অংকের টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। পিএফ নিয়ে সম্প্রতি একটি সার্কুলার এসেছে বলে ওই সংস্থা দাবি । সার্কুলার অনুযায়ী শ্রমিকদের বেসিক বাড়িয়ে তাঁদের পিএফ টাকা বাড়তি কাটা হচ্ছে। এরফলে আগামীতে শ্রমিকরা বেশি টাকা পিএফ পেনশন পাবেন। শ্রমিক প্রতিনিধি ও ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করেই এটি কার্যকরী করা হয়েছে। হঠাৎ করে কিছু হয়নি। শ্রমিকদের মধ্য পিএফ নিয়ে ভুল বার্তা দিয়ে তাঁদের বিভ্রান্ত্র করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হঠাৎ করে কোনও খবর না দিয়ে এভাবে কাজ বন্ধ করে শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনায় ক্ষুব্ধ বন্দর কর্তৃপক্ষ। তাদের বক্তব্য, এই ঘটনার জন্য কড়া পদক্ষেপ করা হবে। ওই( রিপ্লে ঠিকাদার সংস্থা) হ্যান্ডেলিং এজেন্টকে শোকজ করা হবে। বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে ওই ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে চেয়েছে। বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার(ট্রাফিক) অভয়কুমার মহাপাত্র বলেন, সারাদিন শ্রমিক বিক্ষোভের জন্য বন্দরের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। দুটি জাহাজ ক্যানসেল করা হয়েছে। বন্দরে একটি জাহাজে ১৬০০টন পণ্য খালাস বাকি ছিল। তার সেলিং ক্যানসেল হয়েছে। এদিন একাধিক বার্থে জাহাজ থেকে পণ্য নামানো(অর্থাৎ অব বোর্ড অপারেশন) হলেও বার্থ থেকে পণ্য সরানো( অন সোর অপারেশন) বন্ধ ছিল। কারণ ড্রাইভাররা কাজ করেনি। এরফলে বিদেশি জাহাজগুলিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়েছে। বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানাচ্ছি আমরা বলেন অভয় মহাপাত্র। আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শিল্পাঞ্চলে কাজ বন্ধ করে কোনও বিক্ষোভ আন্দোলন সমর্থন করি না। আলোচনার মাধ্যমে এই বিষয়ের সমাধান খোঁজার চেষ্টা হচ্ছে।

 সিপিআইএম পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মন্ডলী সদস্য পরিতোষ পট্টনায় বলেন বর্তমান সরকার শ্রমিকদের শোষণ করছে তা পরিষ্কার বুঝে গেছেন শ্রমিকরা, তাই তারা কবে ফেটে পড়ছে। তৃণমূল জেলা সভাপতি আজগর আলী বলেন কাজ বন্ধ রেখে এই ধরনের ঘটনার কখনই দল মেনে নেবে না তবে যারা দলের দায়িত্ব রয়েছেন তারা নিশ্চয়ই এই বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করে খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানালেন।

হলদিয়া কলকাতা ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী পোর্ট সাধারণ সম্পাদক ভারতীয় মজদুর সংঘ এবং রাজ্য সহ সভাপতি প্রদীপ বিজলী বলেন শ্রমিকদের না জানিয়ে বেসিক টাকা বাড়িয়ে পিএফ এর টাকা বেশি করে কাটা হচ্ছে। কিন্তু বেসিক অনুযায়ী তাদের বেতন দিচ্ছে না ঠিকাদার সংস্থা। শ্রমিকদের দাবি বেসিক অনুযায়ী তাদের বেতন দেওয়া হোক। ঠিকাদার সংস্থার হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্যই দিনভর কাজ বন্ধ রেখে শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখালেন। প্রদীপ বিজলী বলেন শ্রমিকদের না জানিয়ে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না রিপ্লে ঠিকাদার সংস্থা। অবিলম্বে শ্রমিকদের নিয়ে কাজ শুরু করুক না হলে অন্য কোন সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হোক। শ্রমিক এবং ঠিকাদারের জন্য হলদিয়া বন্দরে সুনাম নষ্ট হবে এটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। বন্দর কর্তৃপক্ষ নজর দিক এর আগেও একাধিক দাবি নিয়ে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখেছিলেন। ঠিকাদারের আচরণের শ্রমিকের বিক্ষোভ আর তার জেরে বিশ্বের বাজারে হলদিয়ার সুনাম নষ্ট হচ্ছে। ২৪ ঘন্টা কেটে গেল এখনো বন্দর কর্তৃপক্ষ নীরব কেন অবিলম্বে শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনা করে কাজ শুরু করুক। অচল অবস্থা সারা ভারতবর্ষের মানুষ দেখছে কোটি কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি  এর দায় কে নেবে?

No comments