বিধায়ক মঞ্চে থাকাকালীন তৃণমূল বিজেপির সংঘর্ষ।মঞ্চ থেকে শুরু করে কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ। ব্যাপক ভাঙচুর। সামাল দিতে হিমশিমখাচ্ছে নিজেই সমবায় সমিতির কর্মী থেকে আধিকারিকরা। ব্যাপক উত্তেজনা ছত্রভঙ্গ অন্যান্য কর্মীরা শুভানুধ্যায়ী এলা…
বিধায়ক মঞ্চে থাকাকালীন তৃণমূল বিজেপির সংঘর্ষ।মঞ্চ থেকে শুরু করে কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ। ব্যাপক ভাঙচুর। সামাল দিতে হিমশিমখাচ্ছে নিজেই সমবায় সমিতির কর্মী থেকে আধিকারিকরা। ব্যাপক উত্তেজনা ছত্রভঙ্গ অন্যান্য কর্মীরা শুভানুধ্যায়ী এলাকার মানুষজন। মঞ্চ থেকে সংঘর্ষ শুরু হয় সংঘর্ষের জেরে আহত একাধিক উভয় পক্ষের। সংঘর্ষের কারণ কেশবপুর জালপাই রাধাকৃষ্ণ সমবায় সমিতির শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন। সেই অনুষ্ঠানে তৃণমূলের বিধায়কক সহ একাধিক নেতৃত্বকে ডাকা হলেও এলাকার বিজেপির প্রধান কে কেন ডাকা হয়নি এই নিয়ে প্রতিবাদ মুখর হয় বিজেপি। বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী অনুগামিরা তখনই চড়াও হয় বিজেপি কর্মীদের উপর। মহিষাদল থানা এলাকার কেশবপুর জাল পাই এর ঘটনা। ফলটা বিজেপির লোক যেন চড়াও হয় তৃণমূল কর্মীদের উপর।ইটামগরা দু নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রামকৃষ্ণ দাস আহত।
মহিষাদলের সমবায় সমিতিতে শতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠান ঘিরে সোমবার তৃণমূল ও বিজেপি সংঘর্ষে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তীর সামনে মঞ্চের নীচে দুই দলের কর্মীরা পরস্পরকে লক্ষ্য করে ঘুসি চালায়। একে অপরকে লক্ষ্য করে চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু করে দেয়। তাতে বেশ কয়েকজন জখম হন। এদিন দুপুরে ওই ব্লকের কেশবপুর-জালপাই রাধাকৃষ্ণ সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে এই ঘটনা ঘটে। তবে, এদিন যে অশান্তি পাকানো হবে তার ইঙ্গিত মিলেছিল ইটামগরা-২পঞ্চায়েতের প্রধান রামকৃষ্ণ দাসের ফেসবুক পোস্টে। তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিধায়ক এলে গণ্ডগোল হবে।
পুঁজির নিরিখে কেশবপুর জালপাই সমবায় সমিতি জেলার প্রথম সারির সমবায়। এখানে প্রায় ৬০কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে। সদস্য সংখ্যা তিন হাজারের বেশি। গত জানুয়ারি মাসে ইটামগরা-২পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ওই সমবায় সমিতির পরিচালন সমিতির ভোটে বিজেপি পর্যুদস্ত হয়। ৭৬আসনের মধ্যে তৃণমূল ৬৮টিতে জয়ী হয়। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হয় বিজেপি। পঞ্চায়েতের প্রধান হন বিজেপির রামকৃষ্ণ দাস। তারপর থেকেই দু’পক্ষই সমবায়ের রাশ নিজেদের হাতে রাখতে তৎপর। তানিয়ে প্রায় ঝামেলা বাধছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮সালে পঞ্চায়েত ভোটের পর রামকৃষ্ণ তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের উপপ্রধান হয়েছিলেন। তিনি ‘দাদার অনুগামী’ হিসেবে বিজেপিতে যোগ দেন। তারপর থেকেই সমবায় নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি তরজা অব্যাহত।
এদিন বিধায়ককে ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। দুপুর ২টো নাগাদ বিধায়ক অনুষ্ঠানে যেতেই বিজেপির লোকজন গো ব্যাক স্লোগান দেন। পাল্টা তৃণমূলের লোকজন ওয়েলকাম স্লোগান দেন। মঞ্চ থেকে মাইক্রোফোনে বারবার বিক্ষোভকারীদের সংযত হওয়ার আর্জি জানান সমবায়ের সম্পাদক নিরঞ্জন হাজরা। কিন্তু, বিজেপির লোকজন অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনেই বিধায়কের উদ্দেশে বিদ্রুপ করে স্লোগান দিতে থাকেন। দু’দলের কর্মীদের স্লোগান ও পাল্টা স্লোগানের পরই মারামারি বেধে যায়। চড়, ঘুসি মারা হয়। সভাস্থল তখন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চেয়ার তুলে হামলা চালানো হয়। সংখ্যায় তৃণমূল কর্মীরা বেশি থাকায় বিজেপির লোকজন পিছু হঠতে বাধ্য হএ।
তবে, পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ বিধায়ক অনুষ্ঠানে গেলে ঝামেলা হবে বলে আগে থেকেই ফেসবুকে পোস্টে জানিয়েছিলেন বিজেপির প্রধান। তারপরও কেন আগাম প্রস্তুতি সেরে রাখা হয়নি, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন।
বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, অনুষ্ঠানে আমি গেলে হামলার মুখোমুখি হব বলে আগেই স্থানীয় প্রধান সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন। আমি বিষয়টি পুলিস সুপারকে জানাই। তাঁর পরামর্শমতো আমি অভিযোগ জানাই। তারপরও এদিন বিজেপি হামলা চালাল। তাতেই মনে হচ্ছে, পুলিসের ইন্ধন ছিল। কারণ, পুলিসের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া উচিত ছিল। সেটা ওরা করেনি। যদিও পুলিস সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, এদিন ওই সমবায়ে গণ্ডগোল হতেই পুলিস দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বিজেপি নেতা রামকৃষ্ণ দাস বলেন, মহিষাদলের বিধায়ক প্রভাব খাটিয়ে ইটামগরা-২পঞ্চায়েত এলাকার উন্নয়ন বাবদ অর্থ আটকে রেখেছেন। এদিন এলাকার মানুষজন তাঁর কাছে সেই বিষয়টি নিয়ে জানতে গিয়েছিলেন। তখন তৃণমূল কর্মীরা মারধর করেছে। আমি নিজেও আক্রান্ত হয়েছি। বিধায়ক এলে গ্রাম পঞ্চায়েতের পাওনা সাত লক্ষ টাকা আনতে হবে বলে আমি পোস্ট করেছিলাম।
No comments