হোটেলে ঠান্ডা মাথায় খুন করে গয়না খুলে বিক্রি
ক্রাইম থ্রিলার যেন! হোটেলে ডেকে খুন করে দেহ লোপাটের আগে ঠাণ্ডা মাথায় গয়না খুলে দোকানে বিক্রি। দিঘায় খুন হওয়া উত্তর ২৪ পরগণার জগদ্দল থানার শ্যামনগরের সুপ্রিয়া ঘোষের হত্যাকাণ্ডের …
হোটেলে ঠান্ডা মাথায় খুন করে গয়না খুলে বিক্রি
ক্রাইম থ্রিলার যেন! হোটেলে ডেকে খুন করে দেহ লোপাটের আগে ঠাণ্ডা মাথায় গয়না খুলে দোকানে বিক্রি। দিঘায় খুন হওয়া উত্তর ২৪ পরগণার জগদ্দল থানার শ্যামনগরের সুপ্রিয়া ঘোষের হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে পদে পদে চমকে উঠছেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা। হোটেলে খুনের পর সুপ্রিয়ার সোনার গয়না খুলে ওল্ড দিঘার সোনা দোকানে বিক্রি করে অভিযুক্ত যুগল। ধৃত বরানগরের দিপশেখর বসু ও তাঁর লিভ ইন পার্টনার সুস্মিতা রায়কে শুক্রবার দিঘায় নিয়ে এসে সেই সোনার গয়না উদ্ধার করে জগদ্দল থানার পুলিশ। তাদের জেরা করেই জানা গিয়েছিল ওই দোকানের কথা। রামনগর স্টেশন লাগোয়া জঙ্গলের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয়েছিল সুপ্রিয়ার দেহ। হোটেলে খুন করে একটি ট্রলি ব্যাগে দেহ ভরে টোটো ভাড়া করে রামনগর স্টেশনে গিয়ে ট্রেন ধরার অছিলায় সেই দেহ ফেলে আসা হয়। সন্দেহ এড়াতে ওই টোটোতে রামনগর থেকে আর দিঘায় ফেরেনি তারা। কিন্তু সুপ্রিয়ার স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে মোবাইল ফোনের টাওয়ার ট্র্যাক করে দু'জনকে ধরা হয়। দিপশেখর ও সুস্মিতা দীর্ঘদিন নিউ দিঘার ওই বেসরকারি হোটেলে যাতায়াত করেছেন। সেই মর্মে হোটেল কর্মীদের সঙ্গে পরিচিতি তৈরি হয়। এই পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে হোটেলে রেজিস্টারে রেক্ড না রেখেই শ্যামনগরের পুর্বস্থলীর বাসিন্দা সুপ্রিয়াকে ডেকে এনে খুনের পরিকল্পনা করে এই লিভ ইন পার্টনার এমনই দাবি পুলিশের। ইতিমধ্যে ধৃতদের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত হয়েছে। তাদের বৃহস্পতিবার রাতে দিঘায় নিয়ে আসে জগদ্দল থানার পুলিশ। তাদের হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। যে রুমে সুপ্রিয়াকে খুন করা হয়েছিল সেই রুমে নিয়ে গিয়ে কিভাবে খুন করা হয়েছিল তার পুনর্নির্মাণ করা
থেকে ট্রলি ব্যাগ কেনা হয়েছিল, কিভাবে ট্রলিতে করে রামনগর স্টেশনে নিয়ে গিয়েছিল, কিভাবে জঙ্গলে ফেলেছিল সবটাই দেখায় তারা। পুরোটাই ক্যামেরাবন্দী করেন তদন্তকারীরা। এমনকি সুপ্রিয়াকে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করার পরে তার গা থেকে সোনার গয়না খুলে ওল্ড দিঘার একটি সোনার দোকানে বিক্রি করে। পুলিশ সেই দোকান থেকে সোনা গুলো উদ্ধার করেছে। সেইসঙ্গে ফরেনসিক তদন্তের স্বার্থে হোটেলের দুটি ঘর সিল করেছে পুলিশ। তবে সেই টোটোর সন্ধান পায়নি পুলিশ। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১ সেপ্টেম্বর হোটেলে এসে পৌঁছায় ওই যুগল। সঙ্গে ছিল দিপশেখরের আগের পক্ষের ১৫ বছর বয়সী এক ছেলে, ১২ বছরের এক মেয়ে। সেইসঙ্গে বিধবা সুস্মিতার এক ৪ বছরের ছেলে। তবে হোটেলে ঢোকার পর থেকে রুমের মধ্যে হোটেল কর্মীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হত না। এমনকি রুমে খাওয়ার দিতে গেলে দরজার বাইরে কর্মীদের দাঁড় করিয়ে রেখে খাওয়ার নেওয়া হত। শুধু তাই নয় রুম পরিষ্কার করার জন্যে হোটেল কর্মী। গেলে তাদের রুমে ঢুকতে না দিয়ে ফেরত পাঠানো হাত।
পুলিশের সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপশেখর সুপ্রিয়াকে কাজের টোপ দিয়ে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলে। তাদের সম্পর্ক গভীরে পৌঁছনোর পর সুস্মিতা বিষয়টি জানতে পারে। সুস্মিতার সঙ্গে দিপশেখরের সমস্যা তৈরি হয়। দু'জনে মিলে সুপ্রিয়াকে খুন করে তার সোনার গয়না লুঠ করার পরিকল্পনা করেই দিঘায় আসে। তাই হোটেলের রুমে খুন করে দূরে ফেলে দিয়ে আসে যাতে কেউ কোনওভাবে টের না পায়। কিন্তু সুপ্রিয়া বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়েই তার স্বামীকে এই দম্পতির ডাকে দিঘা যাচ্ছে বলে জানিয়ে আসে। তাই পুলিশের হয়। সেইসঙ্গে ওল্ড দিঘার কোন দোকান পক্ষে তদন্ত করতে সুবিধে হয়।
No comments