দিল্লিতে জি-২০ রাষ্ট্রগুলির পক্ষ থেকে যৌথ ঘোষণাপত্র অবশেষে জারি করা সম্ভব হলপ্রবল টানাপোড়েনের অবসান। দিল্লিতে জি-২০ রাষ্ট্রগুলির পক্ষ থেকে যৌথ ঘোষণাপত্র অবশেষে জারি করা সম্ভব হল। যদিও ভারতের জন্য অস্বস্তিকর হল, যৌথ ঘোষণাপত্রে…
দিল্লিতে জি-২০ রাষ্ট্রগুলির পক্ষ থেকে যৌথ ঘোষণাপত্র অবশেষে জারি করা সম্ভব হল
প্রবল টানাপোড়েনের অবসান। দিল্লিতে জি-২০ রাষ্ট্রগুলির পক্ষ থেকে যৌথ ঘোষণাপত্র অবশেষে জারি করা সম্ভব হল। যদিও ভারতের জন্য অস্বস্তিকর হল, যৌথ ঘোষণাপত্রের ৭৮ নং অনুচ্ছেদ। সেখানে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সব ধর্মের মানুষের ধর্মাচারণের অধিকার আছে। কারও ধর্মীয় আবেগ অথবা বিশ্বাসে আঘাত করা যাবে না। এমনকী, রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়েছে, ওই প্রস্তাবের মূল সুরকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে। কোনও ধর্মাবলম্বী মানুষের সঙ্গে ধর্মের কারণে কোনও বৈষম্য করা যাবে না। প্রত্যেক ধর্মীয় মানুষের অধিকার আছে তাঁর ধর্মবিশ্বাসকে পালন করা।
ভারতের সভাপতিত্বে ভারতের মাটিতে হওয়া জি-২০ সম্মেলনে এভাবে উগ্র সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বিরুদ্ধাচারণ করে বিবৃতি জারি করা মোদি সরকারের কাছে যথেষ্টই অস্বস্তির। কারণ, সাম্প্রতিককালে বারবার আন্তর্জাতিক মিডিয়া এবং সরকারগুলি ভারতের সাম্প্রদায়িক বিভাজন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এর এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। বলেছে, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কেন অন্য রাষ্ট্র মতামত দিচ্ছে? অথচ সেখানে জি-২০’র সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় অর্থাৎ যৌথ ঘোষণাপত্রে এভাবে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ!
এদিনের যৌথ ঘোষণাপত্রে কার্যত রাশিয়া ও চীনকে তুষ্ট করা হয়েছে। বস্তুত উপস্থিত না থেকেও রাশিয়া-চীনের দুই রাষ্ট্রপ্রধানই কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে রইলেন। তাঁদেরই কূটনৈতিক জয় হল। কারণ ইউক্রেন নিয়ে দিল্লির জি-২০ সম্মেলন সম্পূর্ণ সুর নরম করল। এমনকী যৌথ ঘোষণাপত্রে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার নামোচ্চারণই করা হল না। অর্থাৎ ঘোষণাপত্র দেখলে মনে হবে এই যুদ্ধের সঙ্গে রাশিয়া নামক কোনও দেশের সম্পর্কই নেই। যা রাশিয়াকে তো বটেই, চীনকেও খুশি করছে। কারণ এই যৌথ ঘোষণাপত্রের অর্থ, আমেরিকারই দুর্বলতা প্রকট হওয়া। রাশিয়াকে যে ইউক্রেন যুদ্ধের খলনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে যৌথ ঘোষণাপত্রের তালিকাভুক্ত করা গেল না, এটা অবশ্যই আমেরিকার ব্যর্থতা। অন্যদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে সকল রাষ্ট্রকে সহমত করার কঠিন কাজটি করতে মরিয়া ছিল ভারত। কারণ জি-২০’র যৌথ ঘোষণাপত্র জারি করা না গেলে সেটা যথেষ্ট বড় ব্যর্থতা হিসেবে গণ্য হতো। তাই ভারত প্রাণপণে চেষ্টা করেছে। কিন্তু ইউক্রেনের যুদ্ধের সঙ্গে তাদের যুক্ত করা হলে রাশিয়া যে এই ঘোষণাপত্র মানবে না, সেটা প্রত্যাশিত ছিল। আবার আমেরিকা প্রবলভাবে চেয়েছিল রাশিয়ার নাম রাখতে। এই অবস্থায় মধ্যপন্থা নিয়ে যৌথ ঘোষণাপত্র জারি করা যথেষ্ট বিস্ময়কর এক সাফল্য।
No comments