কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম কোড কোনভাবেই এ রাজ্যে কোনভাবেই চালু করতে দেওয়া হবে না আই এনটিটিইউসি রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়
কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম কোড কোনভাবেই এ রাজ্যে কোনভাবেই চালু করতে দেওয়া হবে না । শ্রমিক স্বার্থ বিরো…
কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম কোড কোনভাবেই এ রাজ্যে কোনভাবেই চালু করতে দেওয়া হবে না আই এনটিটিইউসি রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়
কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম কোড কোনভাবেই এ রাজ্যে কোনভাবেই চালু করতে দেওয়া হবে না । শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী এই শ্রমকোড কেন্দ্রের ফাইল বন্দি থাকবে । সোমবার হলদিয়া রিফাইনারি কন্ট্রাক্টর্স, সাপ্লায়ার্স,সুপারভাইজার্স, স্টাফ অ্যান্ড ওয়ার্কমেন বিশ্বকর্মা পুজো উদ্বোধন করে এমন কড়া বার্তা দিয়েছেন আইএনটিটিইউসি'র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি বলেন," কলকারখানার সঙ্গে শ্রমিকদের কাজের সুসম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের শ্রমকোড কোনভাবেই সমর্থন করা যায় না ।
শ্রমিকদের উপর ১২ ঘণ্টার কাজের বোঝা চাপিয়ে দিতে চাইছে কেন্দ্রের শ্রমিক বিরোধী সরকার । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় শ্রমকোড চালু করবেন না । আমরা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছি । আন্তর্জাতিক স্তরে ৮ ঘণ্টার কাজের সময়সীমা চালু রয়েছে । সেই সময়সীমাকে মান্যতা দিয়েই আমরাও শ্রমিকদের পাশে রয়েছি ।" তবে রাজ্য সরকারের এখানে প্রতিবাদ অমূলক বলে মনে করছেন ভারতীয় মজদুর সংঘের রাজ্য সহ সভাপতি, তথা পোর্ট অ্যান্ড ডক ফেডারেশনের অল ইন্ডিয়া প্রেসিডেন্ট প্রদীপ বিজলী । কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের ভাবনা তুলে ধরে তিনি যুক্তি দেখিয়ে বলেন,"কেন্দ্রীয় সরকার কোনোভাবেই শ্রমকোড চালু করে শ্রমিক বিরোধী সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি ।
রাজ্যের শাসকদল এবং আইএনটিটিসি নেতৃত্বরা শ্রমিকদের ভুল বোঝাচ্ছেন । কখনোই ১২ ঘণ্টার কাজের সময়সীমা এই শ্রমকোডে বলা হচ্ছে না । মনগড়া কথা বলে শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে ।" বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে ভারতীয় মজলুর সংঘ শ্রম দিবস পালন করে শ্রমিকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে । বিশ্বকর্মা জয়ন্তী নামে এই দিনটি ১৯৫৫ সালের ২৩ জুলাই থেকে পালিত হয়ে আসছে । সোমবার হলদিয়ায় বেশ কয়েকটি জায়গায় বিএমএস রক্তদান শিবির, ভোগ বিতরণ, চারাগাছ বিতরণের মাধ্যমে এই দিনটি পালন করেছে ।
তবে শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে এদিনও ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় হলদিয়া শিল্পতালুকে ঠিকাদারদের পাশাপাশি তার শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বদের সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন । তার কথায়,"প্রাপ্য ইএসআই,পিএফ, গ্র্যাচুইটি থেকে শ্রমিকদের কোনভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না । প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময়ে তাদের প্রাপ্য বেতন দিতে হবে । কোন ঠিকাদারের টেন্ডার পাওয়ার ক্ষেত্রে আইএনটিটিইউসি কোন শ্রমিক নেতা ওকালতি তার কপালে দুঃখ আছে । আইএনটিটিসি কোন সদস্য কিংবা নেতা অন্যায় ভাবে কোন ঠিকাদারের হয়ে ওকালতি করলে, শ্রমিকের বিরুদ্ধে কোন কথা বললে কিংবা পদক্ষেপ করলে সরাসরি রাজ্য সরকারকে জানান । প্রয়োজনে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীকে জানাতে পারেন । বাকিটা আমরা বুঝে নেব ।"হলদিয়া শিল্প তালুকে শ্রমিক সাংগঠনিক স্বচ্ছতা এর আগে এতটা ছিল না । আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতির হাত ধরে এমন সাংগঠনিক কড়াকড়ি যথেষ্ট ভালো পদক্ষেপ বলে মনে করছেন হলদিয়া রিফাইনারি আইএনটিটিইউসি ঠিকা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি সুদীপ অগস্তি, বিশ্বকর্মা পুজো কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নোটের মিশ্র, শ্যামল গুড়িয়া সহ অন্যান্য শ্রমিক ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি , হলদিয়া ডেভেলাপমেন্ট অথোরিটির চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর জানান,"হলদিয়ায় শিল্প এবং শ্রমিকদের সুসম্পর্ক বজায় রাখাতে শিল্প বান্ধব পরিবেশ তৈরি হয়েছে । আইএনটিটিইউসির শ্রমিক সংগঠনের সুশৃংখল সাংগঠনিক দক্ষতায় তা সম্ভব হয়েছে । এটাই উন্নত কর্মসংস্কৃতির পরিচয় ।" হলদিয়া রিফাইনারি একজিকিউটিভ ডিরেক্টর অতনু সান্যাল, পদস্থ করতে দেবাশিস দত্ত, শম্ভু চক্রবর্তী, আইএনটিকিউসির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি চন্দন দে, হলদিয়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মিলন মন্ডল, তৃণমূল নেতা আজিজুল রহমান, শ্রমিক নেতা অসীম মাইতি প্রমূখ এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন । দিব্যাঙ্গ শিশুদের হাতে নতুন পোষাক তুলে দেওয়া হয় এই বিশ্বকর্মা পুজো কমিটির তরফ থেকে । সকালে হলদিয়ার গিরিশ মোড় থেকে পুরুষদের এবং দুর্গাচক কলোনী বাজার থেকে মহিলাদের রোড রেস হয় হলদিয়া রিফাইনারি ঠিকা শ্রমিক ইউনিয়নের পূজা মন্ডপ পর্যন্ত । পুরুষদের ৮ কিলোমিটার রোড রেসে ১৪৩ জন এবং মহিলাদের ৫ কিলোমিটার রোড রেসে ৪৮ জন অংশগ্রহণ করেছেন । পশ্চিমবঙ্গ সহ বিহার, উত্তর প্রদেশ, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা থেকে আসা সফল প্রতিযোগীদের হাতে এদিন পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় ।
আরডিবি রসায়ন কারখানার বিশ্বকর্মা পুজো ঘিরে সেবামূলক কর্মসূচি হিসেবে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় । সেইসঙ্গে জমজমাট সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল । জানিয়েছেন শ্রমিক নেতা, ও পূজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা সৈকত সেন ।
ইন্দোরামা ইন্ডিয়া লিমিটেড, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার পুজো কমিটির সহ অন্যান্য বেশ কিছু পুজো কমিটি স্থানীয় মানুষের জন্য বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক কাজ করেছেন । এদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বহু দূর দুরান্তের মানুষ এই শিল্প শহরে বিশ্বকর্মা পুজো দেখতে ভিড় জমান ।
No comments