হলদিয়া বন্দরের জেটি ভেঙে চম্পট গ্রেপ্তারের নির্দেশসুদূর লাইবেরিয়া থেকে আসা তেল বোঝাই একটি জাহাজ হলদিয়া বন্দরের জেটি ভেঙে বেপাত্তা! তার ফলে ১ নম্বর জেটিতে পণ্য পরিবহণ পুরোপুরি বন্ধ। জেটিটি পুরো দস্তুর চালু হতে বছর খানেক লাগতে …
হলদিয়া বন্দরের জেটি ভেঙে চম্পট গ্রেপ্তারের নির্দেশ
সুদূর লাইবেরিয়া থেকে আসা তেল বোঝাই একটি জাহাজ হলদিয়া বন্দরের জেটি ভেঙে বেপাত্তা! তার ফলে ১ নম্বর জেটিতে পণ্য পরিবহণ পুরোপুরি বন্ধ। জেটিটি পুরো দস্তুর চালু হতে বছর খানেক লাগতে পারে বলেও জানা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে লাইবেরিয়া থেকে আসা ‘এমটি টিএসএম পলাক্স’ নামের ওই জাহাজটির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের মার্শালকে বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশ, দেশের জলসীমা পেরনোর আগেই জাহাজটিকে গ্রেপ্তার করতে হবে। ক্ষতিপূরণ বাবদ ৮৮ কোটি টাকা দিলে তবেই ফেরার ছাড়পত্র পাবে ভিনদেশি ওই জাহাজটি।
১৪ সেপ্টেম্বর সকাল সওয়া ৯টার ঘটনা। অপরিশোধিত তেল (ক্রুড অয়েল) বোঝাই করে লাইবেরিয়া থেকে হলদিয়া বন্দরে নোঙর করেছিল জাহাজটি। এরপর খালি করার সময় হলদিয়া বন্দরের ১ নম্বর জেটিতে পণ্য ওঠানামা করার ‘টুইন মেরিন আর্ম’টি ভেঙে দেয় জাহাজটি। অসতর্কভাবে ক্রেন পরিচালনার জন্যই এমনটা ঘটেছে বলে অভিযোগ। তার দ্বারা বিরাট অঙ্কের ক্ষতি হয়েছে বুঝতে পেরেই জাহাজটি হলদিয়া বন্দর ছেড়ে দ্রুত চম্পট দেয় ।
এই ঘটনার পরই জরুরি ভিত্তিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ১ নম্বর জেটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাটি। বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে শুনানিতে সংস্থার তরফে দাবি করা হয়, ঘটনাটির জন্য লাইবেরিয়ান জাহাজটি দায়ী। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষকে এখন তাদেরই যাবতীয় ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আর এই কাজের জন্য বিরাট অঙ্কের ক্ষতিপূরণ (মেরিটাইম ক্লেম) দিতে হতে পারে, এটি বুঝতে পেরেই ঘটনার পর হলদিয়া বন্দরের জলসীমা দ্রুত ছাড়ার চেষ্টা করেছে জাহাজটি। উদ্দেশ্য ছিল, এই আদালতের আওতার (অ্যাডমিরালিটি জুরিসডিকশন) বাইরে জাহাজটিকে নিয়ে যাওয়া, যাতে ক্ষতিপূরণ ও আইনি ঝঞ্ঝাট এড়ানো যায়। সংস্থার তরফে দাবি করা হয়, জেটির যে অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটি ২০১৭ সালে বসানো হয়েছিল। খরচ পড়েছিল ৫৭ কোটি টাকা। আদালতে সংস্থাটি আরও দাবি করে, জাহাজটি বর্তমানে হাইকোর্টের আওতাভুক্ত বিচারক্ষেত্রের মধ্যেই রয়েছে।
সমস্ত অভিযোগ শোনার পরই হাইকোর্টের মার্শালকে বিচারপতি মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোটা জাহাজটিকে গ্রেপ্তার করে হলদিয়া বন্দরে ফেরাতে হবে। এই নির্দেশের প্রতিলিপি হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ, শুল্কদপ্তর, উপকূলরক্ষী বাহিনী, সিআইএসএফ ও মেরিন পুলিসকে অবিলম্বে পাঠাতে বলেছে আদালত। তবে ৮৮ কোটি টাকা দিলে জাহাজটি গ্রেপ্তারি এড়াতে পারবে বলেও নির্দেশে উল্লেখ করেছেন বিচারপতি। আবেদনকারী সংস্থার বক্তব্য, যেহেতু এই নির্দেশ একতরফা শুনেই দেওয়া হয়েছে, তাই আদালত এও স্পষ্ট করে দিয়েছে, পরবর্তীকালে যদি দেখা যায় যে জাহাজটিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্যায়ভাবে, সেক্ষেত্রে উল্টে জাহাজটিকেই ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে ওই সংস্থা। পরবর্তী শুনানি ২৬ সেপ্টেম্বর।
No comments