ডেঙ্গি বাড়ছে শিল্পশহরে
ভরা বর্ষায় ডেঙ্গির থাবা শিল্পশহরে। হলদিয়া পুরসভা এলাকায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অন্তত ১০ জন এই জ্বরে আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। যদিও আক্রান্তরা কেউই পুর এলাকার বাসিন্দা নন বলে দাবি পুরসভা কর্তৃপক্ষের। তাঁরা…
ডেঙ্গি বাড়ছে শিল্পশহরে
ভরা বর্ষায় ডেঙ্গির থাবা শিল্পশহরে। হলদিয়া পুরসভা এলাকায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অন্তত ১০ জন এই জ্বরে আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। যদিও আক্রান্তরা কেউই পুর এলাকার বাসিন্দা নন বলে দাবি পুরসভা কর্তৃপক্ষের। তাঁরা ভোট এবং অন্য কাজে শিল্প শহরে এসেছিলেন। তবে ওই রোগের প্রাদুর্ভাব যাতে করছেন। না বাড়ে, সে জন্য এখন থেকে পুর প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করছে। বিভিন্ন এলাকা
হলদিয়া খবর, ভোটের পুরসভা সূত্রের কাজে বাইরে থেকে হলদিয়ায় আসা তিন জন সিআরপিএফ জওয়ান এবং কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর দুই সদস্য ডেঙ্গি আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া, কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক, যাঁরা কলকাতা থেকে বন্দর তথা শিল্পশহরে কাজে এসেছেন, তাঁরা ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। হলদিয়ার পুর প্রশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এই মুহূর্তে যাঁরা ডেঙ্গি আক্রান্ত, তাঁরা প্রত্যেকেই পুর এলাকার বাইরে থেকে এসেছেন।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, হলদিয়া পুরসভা এলাকায় নিকাশি সমস্যা রয়েছে। এছাড়া, বহুতল আবাসনগুলির ছাদে পড়ে থাকা খোলা ট্যাঙ্ক, বিভিন্ন পাত্র এবং গাড়ি রাখার গ্যারাজে জল জমে থাকে। পাশাপাশি, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে হলদিয়ার একাধিক এলাকা জলমগ্ন। সেই সব জায়গাগুলিতে ডেঙ্গির লার্ভা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুরসভা। পুর প্রতিনিধিরা বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করছেন। গৃহস্থের বাড়িতে বাড়িতে সতর্ক করা হচ্ছে। কারও উপসর্গ দেখা দিলে যাতে পুরসভাকে জানানো হয়, সে বিষয়ে আর্জি করা হচ্ছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, শিল্পশহরে বহু মানুষ বাইরে থেকে আসেন। সে ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়াতে ‘মনিটারিং টিম' তৈরি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে পুরসভার অন্তত ৫০০ জন প্রতিনিধি এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছেন। হলদিয়াপুরসভার অন্তর্গত প্রত্যেকটি বাড়িতে যাচ্ছেন তাঁরা। জমা জলে মশার লার্ভা পাওয়া গেলে খবর দেওয়া হচ্ছে হলদিয়া পুরসভায়। জমা জলে কীটনাশক, ব্লিচিং দেওয়ার কাজ চলছে। হলদিয়ার পুরপ্রশাসক জানাচ্ছেন, পুরসভার তারকে জমা জল পরিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে জায়গার মালিককে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে সতর্ক প্রশাসন। তারা নির্দিষ্ট গাইড লাইন মেনেই কাজ করেন।
হলদিয়া পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলার অন্তর্গত। এই জেলায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩ অগস্ট পর্যন্ত মোট ৩৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে জুলাই ও অগস্ট মাসে এখনও পর্যন্ত ১৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিস মিলেছে। চারজন চিকিৎসাধীন। হলদিয়া ছাড়াও কোলাঘাট, ময়না, ভগবানপুর-১, তমলুক ব্লকে আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, “জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। জেলায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
অন্যদিকে, পূর্ব মেদিনীপুরের আরেক স্বাস্থ্য জেলা নন্দীগ্রামে একজনও ডেঙ্গি আক্রান্তের এখনও হদিস মেলেনি। নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল এবং দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে।ইতিমধ্যে প্রায় তিন হাজার জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে অগস্টের চলতি সপ্তাহ পর্যন্ত নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলায় একজনও কেউ ডেঙ্গি আক্রান্ত হননি। তবে জন সাধারণকে সচেতন করার কাজ স্বাস্থ্য দফতর চালিয়ে যাচ্ছে।
নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক কুমার দেওয়ান বলেন, "এই স্বাস্থ্য জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের কোনও খবর নেই। তবে নিয়মিত তিনটি হাসপাতালে ডেঙ্গির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়ে খোঁজ খবরও নিচ্ছেন।”
No comments