Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় "!

" আচার্য  প্রফুল্লচন্দ্র  রায় "!   ( জন্ম -২.৮. ১৮৬১-  মৃত্যু -১৬.৬ ১৯৪৪)----------------------------------------------------------বিশ্ববিখ্যাত বাঙালি রাসায়নিক , বিজ্ঞানী ,শিক্ষক ,কবি , দার্শনিকও উদ্যোগপতি ( শিল্পপতি) আ…

 



" আচার্য  প্রফুল্লচন্দ্র  রায় "! 

  ( জন্ম -২.৮. ১৮৬১-  মৃত্যু -১৬.৬ ১৯৪৪)

----------------------------------------------------------

বিশ্ববিখ্যাত বাঙালি রাসায়নিক , বিজ্ঞানী ,শিক্ষক ,

কবি , দার্শনিকও উদ্যোগপতি ( শিল্পপতি) আচার্য

প্রফুল্লচন্দ্র রায় ৷ ১৮৬১ সালের ২ আগষ্ট পূর্বতন যশোর এখনকার খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার রাড়ুলি গ্রামের এক জমিদার পরিবারে তাঁর

জন্ম ৷  এখনও সেখানে তাঁদের পৈতৃক দোতলা পাকা বাড়ীটি রয়েছে ৷বাবা হরিশচন্দ্র রায় ও মা ভূবনমোহিনী দেবীর তিনি তৃতীয় পুত্র ৷ অকৃতদার , সাধাসিধা জীবনযাপনে অভ্যস্ত এই মানুষটির সবচেয়ে বড় কীর্তি দেশীয় চিন্তাধারার সঙ্গে রসায়নের মিশ্রণে 

প্রথম ভারতীয় ওষুধ ও প্রসাধনী কোম্পানী "বেঙ্গল

কেমিক্যাল এন্ড ফার্মাসিউটিক্যাল " স্থাপন ৷ এখনও আমরা ঐ কোম্পানীর ন্যাপথলিন ও ফিনাইল ব্যবহার করি ৷ অধিকাংশ বাঙালির মত প্রফুল্লচন্দ্রও ছিলেন পেট রোগা ৷ অসুখ তাঁকে অনেক কিছু করতে দেয়নি ৷ অম্ল ও

আমাশায় জর্জরিত কিন্তু পেটুক লোভী বাঙালির

মহৌষধ " Aqua ptychotis " ( জোয়ানের আরক

বা জল) তিনি তৈরী করেছিলেন ৷ যা সেযুগে বাজী

ধরে খাওয়া বাঙালীর নিত্যসঙ্গী , আজকের জিনট্যাক বা ওমেজের মত ৷তাঁর সেরা আবিষ্কার

"রস সিঁদুর " ( মারকিউরাস নাইট্রাইট) ৷একবার গবেষণা গারে কাজ করতে করতে তিনি লক্ষ্য করেন পারদের সঙ্গে জল যুক্ত নাইট্রিক এসিডের

সূক্ষ্ম একটা বিক্রিয়া ঘটছে ৷ তার ফলে পারদের উপরে অদ্ভূত একটা হলুদ সর পড়ছে ,যা রূপান্তরিত হচ্ছে কঠিনে ৷ সেটাই " মারকিউরাস নাইট্রাইট ( Hg NO2) 

ন এরপর তিনি মার্কারী ও ক্যালসিয়াম , মার্কারী ও বেরিয়াম এবং মার্কারী ও লিথিয়িমের 

ভবল নাইট্রাইট তৈরী করেন ৷ ম্যাগনেশিয়াম নাইট্রাইট খুব ক্ষণস্থায়ী তাও দেখান ৷ নাইট্রাইট নিয়ে তাঁর কাজে বিখ্যাত "নেচার" পত্রিকা তাঁকে "মাস্টার অফ নাইট্রাইট" সম্মানে ভূষিত করে ৷

তিনি ১২ টি যৌগিক লবণ এবং ৫ টি থায়োএস্টার আবিষ্কার করেন ৷ তিনি দেশ অন্ত প্রাণ  ৷ তাই তাঁকে ব্রিটিশরা সন্দেহের চোখে দেখত ৷ পুলিশের খাতায় লেখা ছিল বিজ্ঞানীর বেশী বিপ্লবী ৷ সবরকম কুসংস্কার মুক্ত ৷ জাতিভেদ ও ধর্মান্ধতার বিরোধী ৷৷তাঁর প্রিয় খাবার ছিল "মুড়ি" ৷ যাকে তিনি বলতেন

বাঙালির বিস্কুট ৷প্রথম ভারতীয় ছাত্র হিসাবে গিলক্রাইস্ট স্কলারশিপ নিয়ে তিনিই প্রথম বিলেত 

যান ৷ ডি.এস.সি ডিগ্রী পান ৷ হোপ পুরস্কার লাভ করেন ৷  তবু ফিরে আসেন দেশে ৷ প্রেসিডেন্সিতে গড়ে তোলেন আধুনিক গবেষণাগার ৷ তাঁর বন্ধু ছিলেন

আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ৷ আর ছাত্র হিসাবে তৈরী

করেছেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু , মেঘমাদ সাহা , সিভি রমন, কৃষ্ণাণ , জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ , নীলরতন ধর , রসিকলাল দত্ত , কুদরত- ই -খুদা , পুলিনবিহারী সরকার  , অসীমা চট্টোপাধ্যায় সহ বহু বিশিষ্ট  বিজ্ঞানীকে ৷ অনেকের বিরোধিতা সত্বেও ১৯০৫ সালে কুদরত- ই -খুদাকে

প্রথম বিভাগ দেন ৷ তিনি খুলনা , সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে অনেকগুলি বিদ্যালয় বাগেররহাটে পিসি কলেজ , কাপড়ের মিল

এবং নিজ জন্মভূমি রাড়ুলিতে  কৃষক স্বার্থে সমবায় ব্যাঙ্ক গড়ে 

তোলেন ৷বণ্যাত্রান , শিক্ষা ও শিল্পের উন্নতিতে তিনি অকাতরে টাকা বিলিয়েছেন ৷ প্রাণ হাতে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন ৷ প্রচুর রোজগার করেছেন ৷ নিজের হাতে রাখতেন চল্লিশ টাকা  ৷ ব্রিটিশ সরকার তাঁকে নাইট উপাধি দেন ৷তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ দু' খন্ডের "হিন্দু রসায়ন চর্চার ইতিবৃত্ত" ৷১৯১২ সালে চট্টগ্রামে বঙ্গীয় সাহিত্য"বঙ্গভাষায় বিজ্ঞান চর্চা" নিয়ে কার্যকর ভাষণ দেন ৷ এরআগে ১৯১০ সালে রাজশাহীতে আয়োজিত ঐ সম্মেলনে তিনি ছিলেন 

সভাপতি ৷তিনি বাঙালির দারিদ্রতা , দূর্বলতা ও ভীরুতা নিয়ে ভাবতেন ৷ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম

ও স্বদেশী আন্দোলনে কার্যকর ভূমিকা নিয়েছিলেন ৷ তাঁর প্রিয় ছাত্র রাজশেখর বসু ( পরশুরাম, চলন্তিকা অভিধানের স্রষ্ঠা ) বেঙ্গল কেমিক্যালকে এগিয়ে নিয়ে যান ৷ সতীশ দাশগুপ্ত" Fire king " নামে Fire extinguishar মেশিন এবং "কৃষ্ণধারা" নামে ঝর্ণা কলমের কালি তৈরী করেন ৷ যা ননীগোপাল  মৈত্রকে দিলে বিখ্যাত " সুলেখা" কালি তৈরী হয়  ৷তিনি গুণীর আদর করতেন রজনীকান্ত সেনের মৃত্যুশয্যায় গিয়ে বলেছিলেন তাঁর রোগ আমাকে দাও ৷ উনি সুস্থ হোন ৷যিনি নিজেকে বলতেন বৈজ্ঞানিকদের কাছে বিজ্ঞানী , ব্যবসায়ী মহলে ব্যবসায়ী , গ্রাম সেবকদের কাছে দেশব্রতী আর অর্থনীতিবিদদের কাছে অর্থনীতিজ্ঞ ৷বিজ্ঞান তাপস ও কর্মযোগীপ্রফুল্লচন্দ্র এভাবে দেশকে উজ্জীবিত করলেও স্বাধীনতার আগে ১৯৪৪ সালের ১৬ জুন

মৃত্যুবরণ করেন ৷ তাঁর প্রতি আমাদের অতল শ্রদ্ধা ৷


No comments