পৌরসভার উদ্যোগে আনা হচ্ছে দামি গ্যাস অ্যানালাইজার মেশিন
সংবাদদাতা, হলদিয়া: শিল্পাঞ্চলে গাড়ির ধোঁয়াজনিত দূষণ মাপতে পুলিসকে দামি গ্যাস অ্যানালাইজার মেশিন দিচ্ছে হলদিয়া পুর কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে গাড়ির ধোঁয়া থেকে কতখানি দূষণ ছড়…
পৌরসভার উদ্যোগে আনা হচ্ছে দামি গ্যাস অ্যানালাইজার মেশিন
সংবাদদাতা, হলদিয়া: শিল্পাঞ্চলে গাড়ির ধোঁয়াজনিত দূষণ মাপতে পুলিসকে দামি গ্যাস অ্যানালাইজার মেশিন দিচ্ছে হলদিয়া পুর কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে গাড়ির ধোঁয়া থেকে কতখানি দূষণ ছড়াচ্ছে, পুরসভার সঙ্গে পুলিস যৌথভাবে তার একটি সমীক্ষাও চালাবে। বন্দর শহরে দূষণ ঠেকাতে এবার কড়া পদক্ষেপ করছে পুলিস। গাড়ির ‘পলিউশন আন্ডার কন্ট্রোল' বা পিইউসি সার্টিফিকেট থাকলেই চলবে না, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় পাশ করলে তবেই মিলবে শিল্পশহরে ঢোকার ছাড়পত্র। শহরের প্রবেশপথে সেন্সর সিস্টেমে সরেজমিনে প্রতিটি গাড়ি পরীক্ষা করবে পুলিস। দূষণে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করলেই পুলিস কড়া ব্যবস্থা নেবে। পণ্যবাহী গাড়ি ছিনতাই, গাড়ি থেকে দামি পণ্য চুরির মতো অপরাধ দমনে সদ্য শুরু হওয়া ইন্টেলিজেন্ট পিটিজেড সিসি ক্যামেরায় নজরদারির মতো হলদিয়ায় দূষণ ঠেকাতেও আধুনিক সেন্সর বেসড প্রযুক্তির পথে হাঁটছে পুলিস।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্দর শহরে প্রতিদিন ৩ হাজারের বেশি ট্রাক, ট্যাঙ্কার, ট্রেলার সহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী ছোট ও বড় গাড়ি চলাচল করে। একদিকে, গাড়িতে কয়লা, সালফারের মতো পণ্য পরিবহণের সময় তা রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে হলদিয়ায় দূষণ ব্যাপক আকার নিয়েছে। সেই রাসায়নিক ধূলিকণা ১০-১২ কিলোমিটার দূর অব্দি ছড়িয়ে যায়। অন্যদিকে, শহরের ভিতর যে সমস্ত গাড়ি চলাচল করে বা বাইরে থেকে শ'য়ে শ'য়ে যে ট্রাক ঢোকে, তার ধোঁয়া থেকে দূষণের মাত্রা বাড়ছে বলে অভিযোগ। ধূলিকণা ও ধোঁয়া দূষণ নিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের মতো উদ্বিগ্ন প্রশাসনও। ধূলিকণা দূষণের জন্য অত্যাধুনিক শিল্পসংস্থাগুলিও বিপাকে। হলদিয়ায় লিকণা দূষণ নিয়ে বণিকসভার বিভিন্ন আলোচনা
সভায় একাধিকবার অভিযোগ করেছে শিল্প সংস্থাগুলি। কারণ সেন্সর বেসড শিল্পসংস্থাগুলির দামি যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ধূলিকণা দূষণ ঠেকাতে দূষণ পর্ষদের সঙ্গে একগুচ্ছ প্রকল্প নিয়েছে পুরসভা।
গাড়ির ধোঁয়া দূষণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি পুলিস নির্ভর। পুলিস জানিয়েছে, শিল্প শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে গাড়ির কাগজ পরীক্ষার সময় পলিউশন সার্টিফিকেটও দেখা হয়। ছোট বড় বেশিরভাগ গাড়িই টাকার বিনিময়ে দূষণ সার্টিফিকেট জোগাড় করে নেয়। ফলে প্রকৃত গাড়ির স্বাস্থ্যের সঙ্গে অনেকসময়ই গরমিল ধরা পড়ে। হলদিয়ার এসডিপিও রাহুল পান্ডে বলেন, এবার পিইউসি সার্টিফিকেটের পাশাপাশি এগজস্ট গ্যাস অ্যানালাইজার মেশিনের সাহায্যে গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা করা হবে। এই মেশিনটি বেশ দামি। হলদিয়া পুর কর্তৃপক্ষকে এই মেশিনের জন্য আবেদন জানিয়েছিল পুলিস। পুর কর্তৃপক্ষ রাজি হয়েছে। দেখা গিয়েছে, অনেক গাড়িই পিইউসি সার্টিফিকেটের নামে ধোঁকা দেয়। এরফলে দূষণ ঠেকাতে সমস্যা হচ্ছে। পুরসভা নতুন মেশিন দিলে সিটি সেন্টার মোড়ে নিয়মিত ধোঁয়া পরীক্ষা শুরু হবে। হলদিয়ার মহকুমা শাসক তথা পুর প্রশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, মহকুমা পুলিসকে সেন্সর বেসড গ্যাস অ্যানালাইজার মেশিন শীঘ্রই তুলে দেওয়া হবে। পোর্টেবল জেনারেটর সহ মেশিনের দাম সাড়ে ৫ লক্ষ টাকার উপর। এর টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। জানা গিয়েছে, ২.৫-৩ কিলোগ্রাম ওজনের এই মেশিনটি কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, মিথেন, হাইড্রোজেন ফ্লুরাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, হাইড্রোজেন সালফাইডের মতো ১০-১২ রকমের গ্যাস সেন্সরের সাহায্যে শনাক্ত করতে পারে।
No comments