জাহাজ বাড়ি নিলাম হবে মুখ খুললেন তৃণমূল নেতা সুফিয়ান
৪৯ লক্ষ টাকা ঋণশোধ না করায় তৃণমূল নেতা শেখ সুপিয়ানের জাহাজবাড়ির দখল নিতে চাইছে কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক। সেই লক্ষ্যে চলতি সপ্তাহে তমলুকে এআরসিএস কোর্টে মামলা দায়ের করবে ব্যাঙ…
জাহাজ বাড়ি নিলাম হবে মুখ খুললেন তৃণমূল নেতা সুফিয়ান
৪৯ লক্ষ টাকা ঋণশোধ না করায় তৃণমূল নেতা শেখ সুপিয়ানের জাহাজবাড়ির দখল নিতে চাইছে কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক। সেই লক্ষ্যে চলতি সপ্তাহে তমলুকে এআরসিএস কোর্টে মামলা দায়ের করবে ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জাহাজবাড়ি মর্টগেজ রাখা আছে। টাকা পরিশোধ করার জন্য নোটিস পাঠানোর যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ। তাতেও সাড়া দেননি তৃণমূল নেতা শেখ সুপিয়ান। তাই আইনি পথে হেঁটে এবার জাহাজবাড়ির দখল নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর।
জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে নন্দীগ্রামে জাহাজবাড়ি করার জন্য কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ঋণ নেন শেখ সুপিয়ান। ২০২২সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত নিয়মিত ইএমআই দিলেও তারপর থেকে কিস্তির টাকা শোধ করছেন না। গত ২০ মাস কানাকড়ি দেননি। ওই লোনের এখনও সাড়ে ৭লক্ষ টাকা বকেয়া আছে। এছাড়াও ট্রলার কেনার জন্য ওই ব্যাঙ্ক থেকেই ২০২০ সালে ২৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। তারপর একটিও ইএমআই শোধ করেননি। এই মুহূর্তে আসল ২৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার পাশাপাশি সুদ হয়েছে আরও ৯লক্ষ ৬৯হাজার টাকা। ওই তৃণমূল নেতার কাছ থেকে কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের পাওনা ৪৯ লক্ষ টাকা।
শেখ সুপিয়ান এখন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পদাধিকারী। জেলা পরিষদের প্রাক্তন সহ সভাধিপতি। দু’টি ঋণ এনপিএ (নন পারফর্মিং অ্যাসেট) হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় ব্যাঙ্ক বেকায়দায় পড়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ একাধিবার ওই তৃণমূল নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে বকেয়া টাকা শোধ করার বার্তা দিলেও কোনও লাভ হয়নি।
গত ১৭ এপ্রিল ঋণ পরিশোধের জন্য এক মাসের সময়সীমা দিয়ে ব্যাঙ্ক আইনি নোটিস পাঠিয়েছিল। সেই নোটিস পাওয়ার পর পাল্টা ব্যাঙ্কে একটি নোটিস পাঠান সুপিয়ান। তাঁর বক্তব্য, ব্যাঙ্কে তাঁর কোনও ধার নেই। বরং তাঁর ইমেজ নষ্ট করতে নেমেছে ব্যাঙ্ক। এই অবস্থায় সুপিয়ানের ট্রলার সিজ করতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে ব্যাঙ্ক অফিসারদের দাবি।
সম্প্রতি ব্যাঙ্কে বোর্ড অব ডিরেক্টরের সভা হয়। সেখানে ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এআরসিএস কোর্টে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাছাড়া উপরমহল থেকেও এনিয়ে সবুজ সংকেত পাওয়া গিয়েছে বলে ব্যাঙ্কের এক সিনিয়র অফিসারের দাবি। তাই তমলুক এআরসিএস কোর্টে চলতি সপ্তাহে মামলা হবে। বন্ধক রাখা জাহাজবাড়ি দখল নেওয়ার আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে। ব্যাঙ্কের এক অফিসার বলেন, ব্যাঙ্ক আমানতকারীদের জমানো টাকা ঋণ দেয়। এভাবে ঋণ খেলাপি হলে ব্যাঙ্কের সামনে ঘোরতর বিপদ। ব্যাঙ্কের অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে যায়। ৪৯লক্ষ টাকা ঋণ খেলাপি সুপিয়ানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে টাকা উদ্ধার করা হবে।
এনিয়ে শেখ সুপিয়ান বলেন, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত দু’বছরের সুদ চাপিয়েছে। সেটা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছি। ব্যাঙ্ক তার মতো করে সিদ্ধান্ত নিক। তাতে আমার কোনও আপত্তি নেই।
No comments