Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

"হ্যারি পটার" লেখিকার শুভ জন্মদিন

"হ্যারি পটার" লেখিকার শুভ জন্মদিন
জোয়ান ক্যাথরিন রাউলিং OBE (জন্ম : জুলাই ৩১, ১৯৬৫) হলেন একজন সফলতম ইংরেজ কল্পকাহিনী লেখিকা, যিনি জে. কে. রাউলিং ছদ্মনামে লেখালেখি করেন। রাউলিং জনপ্রিয় কল্পকাহিনী 'হ্যারি পটার' স…

 




"হ্যারি পটার" লেখিকার শুভ জন্মদিন


জোয়ান ক্যাথরিন রাউলিং OBE (জন্ম : জুলাই ৩১, ১৯৬৫) হলেন একজন সফলতম ইংরেজ কল্পকাহিনী লেখিকা, যিনি জে. কে. রাউলিং ছদ্মনামে লেখালেখি করেন। রাউলিং জনপ্রিয় কল্পকাহিনী 'হ্যারি পটার' সিরিজের রচয়িতা, যা তাঁকে বিশ্বজুড়ে সম্মান ও জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। এ সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি একাধিক পুরস্কার জিতেছেন। সারা বিশ্বে হ্যারি পটার সিরিজের ৫০০ মিলিয়নেরও অধিক কপি বিক্রি হয়েছে।

২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফোর্বস পত্রিকা তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ £৫৭৬ মিলিয়ন (১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কিছু বেশি) বলে তথ্য প্রকাশ করেছে, যা তাঁকে বই-লিখে বড়লোক হওয়া প্রথম বিলিয়নিয়ার (আমেরিকান ডলারে) হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। ২০০৬ সালে ফোর্বস পত্রিকা তাঁকে অপরাহ উইনফ্রের পর পৃথিবীর দ্বিতীয় সেরা মহিলা ধনী হিসেবে তথ্য প্রকাশ করেছে।


জন্ম ও পরিবার :

১৯৬৫ সালের ৩১ জুলাই, ইংল্যান্ডের গ্লস্টারশায়ারের ইয়েটে শহরে জন্মগ্রহণ করেন জে. কে. রাউলিং। তাঁর বাবার নাম পিটার এবং মায়ের নাম অ্যানি। তাঁর বাবা ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার এবং মা ছিলেন গবেষণাগারের টেকনিশিয়ান। রাউলিং এর পুরো নাম জোয়ান ক্যাথলিন রাউলিং। রাউলিং এর ছোট আরও এক বোন রয়েছে। ছোটবেলাটা কাটে গ্রাম্য পরিবেশে।


লেখালেখির হাতেখড়ি :

রাউলিং এর বাবা-মা দুজনই ছিলেন পেশাজীবী। তাই রাউলিং ও তাঁর বোনকে একাকীই সময় কাটাতো হতো। তাই তাঁর বাবা-মা তাঁদের দুই বোনকে মজার মজার সব গল্পের বই কিনে দিতেন। এরপর সেই সময় থেকেই মজার মজার গল্প লিখতেন তিনি, আর সেই গল্পগুলো লেখা শুরু করেছিলেন তাঁর বোনকে পড়ে শোনানোর জন্য। এভাবেই তাঁর মনের মধ্যে বাসা বাঁধে নামকরা লেখিকা হওয়ার স্বপ্ন। তাঁর স্বপ্ন ছিল – তাঁর লেখা বই দোকানে আসা মাত্র পাঠকরা লুফে নেবে। এক সময় তাঁর সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।


হ্যারি পটার সিরিজ :

১৯৯০ সালে জে. কে. রাউলিং এর মাথায় আসে ‘হ্যারি পটার’ গল্পের ধারণা। একদিন তিনি ম্যানচেষ্টার থেকে লন্ডনে যাচ্ছিলেন পাতাল ট্রেনে চড়ে। ট্রেনটিতে যাত্রীদের প্রচন্ড ভিড় ছিল। সব মিলিয়ে অস্বস্তিকর এক অবস্থা বিরাজ করছে পুরো ট্রেন জুড়ে। এই ট্রেনেই দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা অতিবাহিত করতে হয়েছে জে. কে. রাউলিংকে। এই অবস্থাতেই তিনি চিন্তা করছিলেন নতুন কোনো একটি লেখা নিয়ে। হঠাৎই তাঁর স্বপ্নের মনের জানালায় কড়া নাড়ে এক অনাথ ছেলে। যেই ছেলেটি পালিত হচ্ছে তাঁর এক মাসী ও মেসোর কাছে। যারা দুজনই খুব নিচুমনের অধিকারী। ছেলেটি শত অন্যায় অত্যাচার সহ্য করলেও সে জানে না যে, তাঁর মধ্যে রয়েছে এক মায়াবী জাদুকরী ক্ষমতা। একই সাথে তিনি তাঁর মনের ক্যানভাসে এঁকে ফেলেন সেই অনাথ ছেলেটির মুখাবয়ব। মোটা ফ্রেমের চশমা পরা কালো চুলের হ্যারিকে নিয়ে ওই সময় থেকেই লেখা শুরু করেন জে. কে. রাউলিং। অবশেষে ১৯৯৫ সালে শেষ করেন হ্যারি পটার সিরিজের ১ম গল্পটি। ২০০৭ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সাতটি বইয়ের প্রথম ছয়টি বই সারা পৃথিবীতে ৩২৫ মিলিয়ন কপিরও বেশি বিক্রী হয়েছে এবং ৬৪টিরও বেশী ভাষায় অনূদিত হয়েছে।


প্রকাশকদের দ্বারে দ্বারে ঘোরা :

হ্যারি পটার সিরিজের ১ম গল্পটি লেখা শেষ করার পর বইটি প্রকাশ করার জন্য প্রকাশকদের কাছে অনেক ঘুরতে হয়েছিল রাউলিংকে। প্রকাশকদের ধারণা ছিল, বইটি তাঁদের ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন করবে। আটজন প্রকাশক ফিরিয়ে দেওয়ার পর ব্লুমসবারি নামের একটি প্রকাশনী ১৯৯৭ সালের ২৬ জুন হ্যারি পটার সিরিজের প্রথম বই 'হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার্স স্টোন' প্রকাশ করে। এরপরের ইতিহাস সকলেরই জানা। একেবারে অচেনা-অজানা জে. কে. রাউলিং হয়ে যান বিশ্ববিখ্যাত। যে রাউলিংকে এর আগে তাঁর পরিবার ও পরিচিত জনরা ছাড়া অন্য কেউ চিনতো না। বিশ্বব্যাপী হ্যারি পটার সিরিজের ৩৫ কোটি কপি বিক্রি হয়েছে। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো জে. কে. রাউলিং-এর লেখা হ্যারি পটার সিরিজের বই কেনার জন্য প্রকাশিত হওয়ার আগের দিন রাত থেকে মানুষ বইয়ের দোকানের সামনে লাইন দিতো।


ছদ্মবেশি জে.কে. রাউলিং :

হ্যারি পটার সিরিজের গল্প লেখার পর সারা বিশ্বজুড়েই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন রাউলিং। মাঝেমধ্যে ছদ্মনামেও লেখেন তিনি। ‘রবার্ট গালব্রেইথ’ ছদ্মনামে তিনি ‘কুকোস কলিং’ নামের একটি বই লেখেন ২০১৩ সালে। তাঁর এই বইটি যখন প্রকাশিত হয়, তখন খুব বেশি কপি বিক্রি হয় নি। কিছুদিনের মধ্যে প্রকাশ পেয়ে যায় যে, এই বইটি রাউলিং এর লেখা। এরপর কয়েক শত থেকে ১.৫ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয় একই বই।


পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ :

জে. কে. রাউলিং এবং হ্যারি পটার সিরিজ ফিলোসফার্স স্টোন প্রকাশের পর থেকে অনেক পুরস্কার পেয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে চারটি হুইটেকার প্লাটিনাম বুক অ্যাওয়ার্ডস (সবগুলো ২০০১ সালে), তিনটি নেসলে স্মার্টিস বুক প্রাইজ (১৯৯৭-১৯৯৯), দুটি স্কটিশ আর্টস কাউন্সিল বুক এওয়ার্ডস (১৯৯৯ ও ২০০১), উদ্বোধনী হুইটব্রেড বর্ষসেরা শিশুতোষ গ্রন্থ পুরস্কার, (১৯৯৯), ডব্লিউ এইচ স্মিথ বর্ষসেরা বই (২০০৬)। ২০০০ সালে হ্যারি পটার এন্ড দ্য প্রিজনার অব আজকাবান শ্রেষ্ঠ উপন্যাস বিভাগে হিউগো পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়, কিন্তু পায়নি। তবে ২০০১ সালে হ্যারি পটার এন্ড দ্য গবলেট অব ফায়ার বইটি উক্ত পুরস্কার ছিনিয়ে নেয়। অন্যান্য সম্মাননার মধ্যে রয়েছে কার্নেগি মেডেলের জন্য ১৯৯৭ সালে মনোনয়ন, ১৯৯৮ সালে গার্ডিয়ান চিলড্রেন'স এওয়ার্ড পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান, বিভিন্ন স্থানে স্মরণীয় বইয়ের তালিকায় স্থান, আমেরিকান লাইব্রেরী এসোসিয়েশন, নিউ ইয়র্ক টাইমস্, শিকাগো পাবলিক লাইব্রেরী ও পাবলিশার্স উইকলি প্রভৃতিতে সম্পাদকের পছন্দ এবং প্রস্তাবিত শ্রেষ্ঠ বই তালিকায় অবস্থান।

No comments