তৃণমূল সমর্থিত মহিলাকে মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১০
নন্দীগ্রামে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় কুণাল ঘোষের হুঁশিয়ারিতে তৎপর হল পুলিস। মাত্র দু'দিনে পুলিস ১০ জন অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করল। শনিবার ১৫ ই জুলাই ছ'জনকে গ…
তৃণমূল সমর্থিত মহিলাকে মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১০
নন্দীগ্রামে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় কুণাল ঘোষের হুঁশিয়ারিতে তৎপর হল পুলিস। মাত্র দু'দিনে পুলিস ১০ জন অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করল। শনিবার ১৫ ই জুলাই ছ'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার আরও চারজন ধরা পড়েছে। ধৃত ছ'জনের বাড়ি বয়াল-২ ও ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। রামচক গ্রামের প্রশান্ত আড়ি, সঞ্জয় আড়ি, চন্দনকুমার জানা, বিজয় আড়ি, পূর্ব ভেকুটিয়া গ্রামের শেখ মুস্তাকিন ও মনুচক- জালপাই গ্রামের তাপস জানার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। এদিন তাঁদের হলদিয়া এসিজেএম কোর্টে তোলা হয়। নন্দীগ্রাম থানার আইসি সুমন রায়চৌধুরী বলেন, শনিবার ছ'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার চারজন ধরা পড়েছে। দু'দিনে মোট ১০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এই মুহূর্তে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।
গত ১১ জুলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলাফল ঘোষণা হয়। তারপর থেকেই নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ভেকুটিয়া, গোকুলনগর, নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বয়াল-২ ও বিরুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় লাগামহীন সন্ত্রাস চালায় বিজেপি। শাসকদলের প্রার্থী থেকে কর্মীরা ঘরছাড়া হন। অনেকেই বৃদ্ধ বাবা-মা এবং সন্তান নিয়ে ঘরছাড়তে বাধ্য হন। এই মুহূর্তে নন্দীগ্রামের ১৬ জন কর্মী আহত অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। শুক্রবার রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এবং জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র সন্ত্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান। ঘরছাড়া কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করেন। সেইসঙ্গে হামলায় জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে বলে পুলিসকে সময়সীমা বেঁধে দেন কুণাল। তারপরই তৎপর হয় পুলিস। দু'দিনে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে নন্দীগ্রাম থানার পুলিস। ধৃতরা সকলেই বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত।
বৃহস্পতিবার সকালে মনুচক-জালপাই গ্রামে বিজেপির বিজয় মিছিলে না হাঁটায় সোমা হাজরা জানা নামে এক তৃণমূল কর্মীর স্ত্রীকে গাছে বেঁধে মারধর করা হয়। শুক্রবার সেই সোমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কুণাল ঘোষ ও শশী পাঁজা। ঘটনার কাহিনি শুনে তাঁরা চমকে যান। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিস তাপস ও মুস্তাকিনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাপস এলাকার দাগী আসামি বলে পরিচিত। এরআগে তাপস তৃণমূল করত। সে সময় ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সরোজ ভূঁইয়াকে গুলি চালানোর অভিযোগে জেলও খাটে। সরোজবাবু এক মাস এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে সুস্থ হন। তারপর সরোজ ভূঁইয়া এবং তাপস জানা দাদার অনুগামী হিসেবে বিজেপিতে চলে যায়। ভোট পরবর্তী হিংসায় মনুচক গ্রামের তৃণমূলের বুথ সভাপতি সোমনাথ মাইতির ভেড়িতে বিষ দিয়ে সাত টন ভেনামি নষ্ট করা হয়েছে। শুক্রবার সোমনাথবাবুর সঙ্গে সাক্ষাৎ - করে ওই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। রাত পেরোতেই ওই ঘটনায় রামচক গ্রামের বিজেপি = কর্মী বিজয় ও চন্দন ধরা পড়েছে। ভেকুটিয়া অঞ্চল তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অরূপ গোল বলেন, পুলিস সক্রিয় হতেই দুষ্কৃতীরা সংযত হয়েছে। সম্রস্ত এলাকায় কিছুটা শান্তি ফিরে এসেছে। এই পদক্ষেপ আরও আগে নিলে ভালো হত। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন, ধৃতরা আমাদের দলের কর্মী। পুলিস বেছে বেছে গ্রেপ্তার করছে। আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালানো তৃণমূল কর্মীরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
No comments