পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উত্তেজনা বুথ ৩৫৬পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৩৫৬টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রকে উত্তেজনাপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হল। জেলায় মোট ৪১২৮টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে। ৮ শতাংশ বুথ উত্তেজনাপ্রবণ বলে কমিশনকে রিপোর্ট দিয়েছেন জেলাশাসক পূর…
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উত্তেজনা বুথ ৩৫৬
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৩৫৬টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রকে উত্তেজনাপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হল। জেলায় মোট ৪১২৮টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে। ৮ শতাংশ বুথ উত্তেজনাপ্রবণ বলে কমিশনকে রিপোর্ট দিয়েছেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। ভোটের দিন ওইসব বুথে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে জেলায় ১৯ কোম্পানি আধা সেনা বিভিন্ন থানায় মোতায়েন করা হয়েছে। আরও ৩৭ কোম্পানি বাহিনী আসবে বলে জেলাশাসক জনান। এর বাইরে দু’হাজার কলকাতা পুলিস, হাওড়া জিআরপি থেকে ৬০০ জন এবং খড়্গপুর জিআরপি থেকে আরও ৫৩৩ জন রাজ্য পুলিস পূর্ব মেদিনীপুরে ভোটের দিন পাহারায় থাকবে।
কেলেঘাই নদীর দু’ধারে ময়নার বাকচা ও ভগবানপুর থানার মহম্মদপুর-১ এবং ২ পঞ্চায়েত উত্তেজনার নিরিখে কার্যত ‘রেড জোনে’ রয়েছে। ওই সব এলাকায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করানোই বড়সড় চ্যালেঞ্জ। অভিযোগ, বিজেপি লাগাতার হেনস্তায় মহম্মদপুরে সিপিএম প্রার্থী দু’টি টার্মের প্রধান চিত্ত সাহু স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। ওই গ্রামে তৃণমূল প্রার্থীও বিজেপির হুমকিতে সস্ত্রীক বাড়িছাড়া। মহম্মদপুর মধ্যপাড়া বুথে তৃণমূল প্রচার চালাতে পারেনি। একই অবস্থা বাকচা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোড়ামহাল সহ কয়েকটি বুথে। বিজেপির দাপটে তৃণমূল প্রার্থী এলাকায় ঢুকতেই পারেননি। ভোটেও গেরুয়া আস্ফালন বজায় থাকবে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। তৃণমূলও মাটি কামড়ে লড়াই করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যে কারণে গণ্ডগোলের আশঙ্কা থাকছেই। উভয়পক্ষ পরস্পরকে দেখে দেওয়ার আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখছে।
ভূপতিনগর থানার বরোজ ও অর্জুননগরেও কথায় কথায় বোমাবাজি হয়। এখানকার মাটির সঙ্গে দখলের রাজনীতি জড়িয়ে আছে। একাধিকবার বোমা-গুলির লড়াই হয়েছে। ভোটের দিন এখানে উত্তেজনার আশঙ্কা প্রবল। বুধবারও বিজেপির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি প্রচার চালানোর সময় পুলিসের সঙ্গে তাঁর ঝামেলা হয়। ভোটের মুখে তৃণমূল প্রার্থী ও নেতাদের এনআইএ-র তলব শাসক দলের জেদ আরও বাড়িয়েছে। গত বিধানসভায় ওই দুই পঞ্চায়েত থেকে ভালো লিড ছিল বিজেপির। সেই লিড থেকেই গেরুয়া পার্টি পঞ্চায়েত দখলের স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু, হাল ছাড়তে নারাজ তৃণমূল। উত্তেজনাপ্রবণ এলাকার মধ্যে রয়েছে খেজুরির বীরবন্দর, বারাতলা, জনকা পঞ্চায়েতও। বিধানসভার মতোই এবারের ভোটে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মধ্যে হটস্পট হল নন্দীগ্রাম। তৃণমূলের উপর চাপ সৃষ্টি করতে গ্রাম পঞ্চায়েতে নিচুতলায় বিজেপি ও সিপিএমের মধ্যে গোপন বোঝাপড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তাতে সঙ্গত দিয়েছে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল অর্থাৎ নির্দল। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কেন্দামারি-জালপাই, মহম্মদপুর, কালীচরণপুর, সামসাবাদ ও নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েতে ৬৬টি আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি। কিন্তু, নির্দল প্রার্থীদের পালে হাওয়া দিয়ে বাজার গরমের চেষ্টা করছে তারা।
জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্দল প্রার্থীর সংখ্যা ১২৬১। ভোটের ডিউটি এড়ানোর জন্য বেশকিছু শিক্ষক নির্দল হয়েছেন। এছাড়া শাসক দলের অনেকে টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। নন্দকুমার, দেশপ্রাণ, এগরা-২ প্রভৃতি এলাকায় নির্দল প্রার্থীরা তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁদের নিষ্ক্রিয় করার মরিয়া চেষ্টা চলছে।
No comments