মোকা-র গতিবিধি বিস্তারিত জানাল আবহাওয়া দফতর, সতর্ক করা হয়েছে মত্সজীবী আর পর্যটকদের
ঘূর্ণিঝড় মোকা-র বিপদ কাটল। ভারতে নয়, বাংলাদেশ-ময়ানমার উপকূলের দিকেই এই ঘূর্ণিঝড় অগ্রসর হতে পারে বলে পবর্বাভাস দিয়েছেন ভারতের আবহাওয়া দফতর। ভারতে…
মোকা-র গতিবিধি বিস্তারিত জানাল আবহাওয়া দফতর, সতর্ক করা হয়েছে মত্সজীবী আর পর্যটকদের
ঘূর্ণিঝড় মোকা-র বিপদ কাটল। ভারতে নয়, বাংলাদেশ-ময়ানমার উপকূলের দিকেই এই ঘূর্ণিঝড় অগ্রসর হতে পারে বলে পবর্বাভাস দিয়েছেন ভারতের আবহাওয়া দফতর। ভারতের আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র সাংবাদিকদের বলেছেন, সোমবারের পরে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাদরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
শেষপর্যন্ত সেটি বাংলাদেশ-মায়ানমার উপকূলের দিকে এগিয়ে যাবে। আবহাওয়া দফতর আরও জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যের পর থেকেই নিম্নচাপ ঘনীঘূত হবে। পরের দিন ঘূর্ণিঝজড তীব্রতর হবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
ভারতে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে না পরলেও আবহাওয়া দফতর মত্সজীবীদের সতর্ক করেছে। বলেছে, মত্সজীবীরা যেন জাহাজ, ট্রলার, ছোট নৌকাগুলি নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে না যায়। পাশাপাশি এই অঞ্চলের লোকেদেরও উপকূল থেকে ফিরে আসার বা নিচু এলাকা থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকা-র নামকণ করেছে ইয়েমেম। এই দেশটিই লোহিত সাগরে তীরে এই দেশটি ৫০০ বছর আগে বিশ্বে কফির প্রচলন করেছিল।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ১১টি পর্যন্ত অগ্রসর হবে। তারপর পুরনায় বাংক নিয়ে উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশ- মায়ানমার উপকূলের দিয়ে চলে যাবে। তিনি বলেন, এর প্রভাবে মঙ্গলবার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং তত্সংলগ্ন আন্দামান সাগরে ঝড়ো হাওয়ার গতিবেগ ৫০-৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় দমকা হতে পারে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া অফিস শুক্রবার পর্যন্ত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি এবং দক্ষিণ-পূর্ব ও মধ্য বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র এলাকায় পর্যটন ও উপকূলীয় ক্রিয়াকলাপ এবং শিপিং নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছে।
সোমবার কলকাতার সর্বোচ্চতাপমাত্রা ছিল ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮. ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ও ২ ডিগ্রি বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৭০ শতাংশের বেশি। চলতি সপ্তাহে ১৩ মে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর আবহাওয়া দফতের ওয়েবসাইট অনুযায়ী ১০ মে অর্থাত্ বুধবার তাপপ্রবাহের সতর্কতা রয়েছে।
আগে মৌসম ভবন বলেছিল থেকে বাংলা ছাড়াও ওড়িশা ও বাংলাদেশ উপকূল দিয়েও বয়ে যেতে পারে ঘূর্ণিঝড় মোকা। এখনও পর্যন্ত ল্যান্ডফল নিয়ে কিছু জানানো না হলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতেও প্রশাসনের তরফ থেকে প্রাথমিকভাবে নজরদারি শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মৌসম ভবন জানিয়েছিল, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে ৬ থেকে ৭ মে-র মধ্যে। এই ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলে তা নিম্নচাপে পরিণত হবে ৮ থেকে ৯ মে-এর মধ্যে। এরপর এটি দারুণ শক্তি ধারণ করে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ১০ থেকে ১২ মে তারিখের মধ্যে এই গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। সেই ঘূর্ণিঝড় ১৪ মে থেকে ১৭ মে-র মধ্যে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে মায়ানমারের রাখাইন কুলের মাঝামাঝি কোথাও স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম 'মোকা' বলেও জানানো হয়।
No comments