১৩০ বছর পর বুদ্ধ পূর্ণিমায় মহা সংযোগে হবে চন্দ্রগ্রহণ
শুক্রবার বৈশাখী পূর্ণিমার পুণ্যলগ্নে নবদ্বীপ ও মায়াপুরজুড়ে পালিত হবে শ্রীকৃষ্ণের ফুলদোল উৎসব। এদিন একই সঙ্গে গৌর-বিষ্ণুপ্রিয়ার বিবাহ বার্ষিকী অনুষ্ঠিত হবে সাড়ম্বরে।শ্রীকৃষ্ণের…
১৩০ বছর পর বুদ্ধ পূর্ণিমায় মহা সংযোগে হবে চন্দ্রগ্রহণ
শুক্রবার বৈশাখী পূর্ণিমার পুণ্যলগ্নে নবদ্বীপ ও মায়াপুরজুড়ে পালিত হবে শ্রীকৃষ্ণের ফুলদোল উৎসব। এদিন একই সঙ্গে গৌর-বিষ্ণুপ্রিয়ার বিবাহ বার্ষিকী অনুষ্ঠিত হবে সাড়ম্বরে।
শ্রীকৃষ্ণের ফুলদোল, গন্ধেশ্বরী পুজো ও পারিবারিক বিবাহ অনুষ্ঠান, সব মিলিয়ে নবদ্বীপে ফুলের চাহিদা তুঙ্গে। ফুলের বাজার অগ্নিমূল্য। রজনীগন্ধা, জুঁই, গোলাপ, পদ্ম, গাঁদা ইত্যাদি ফুলের দাম লাগামছাড়া। কিন্তু উৎসবের মরশুমে দামের দিকে তাকাতে নারাজ ভক্তবৃন্দ। বৃহস্পতিবার ফুলের পাইকারি দাম ছিল রজনীগন্ধা ৩০০ টাকা কেজি, পদ্ম প্রতি পিস ৭ টাকা, গোলাপ প্রতি পিস ৬ টাকা, জুঁইফুলের হালকা মালা প্রতিপিস ৩০ টাকা এবং একটু ভারী মালা প্রতি পিস ৬০ টাকা, গাঁদাফুলের মালা প্রতি পিস ২০ থেকে ২৫ টাকা। শুক্রবার সকাল থেকে ফুলদোলে নানা ফুলে সেজে ওঠে বিভিন্ন মন্দির প্রাঙ্গণ। রাধাকৃষ্ণ, নিতাই-গৌর, গৌর-বিষ্ণুপ্রিয়া সহ সমস্ত বিগ্রহকে ফুলের সাজে সাজানো হবে। পরানো হবে রঙবেরঙের সুগন্ধি ফুল দিয়ে তৈরি পোশাক। মায়াপুর ইসকন মন্দিরেও রাধামাধবের ফুলদোল অনুষ্ঠিত হবে। ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস বলেন, ফুলদোল উপলক্ষে কৃত্রিম ফোয়ারার নীচে রাধামাধবকে শীতল করার জন্য বসানো হবে। বলদেব মন্দিরের অন্যতম সেবায়েত কিশোরকৃষ্ণ গোস্বামী বলেন, প্রখর গরমে যেমন আমাদের কষ্ট হয়, সেই ভাবনা থেকেই বৈষ্ণব ধর্মের মানুষ ভগবানকে ফুল দিয়ে সাজায়। সঙ্গে থাকে চন্দন। বুদ্ধপূর্ণিমার এই তিথিতে এই ফুলদোল অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এখানে বলদেব বিগ্রহকে বিভিন্ন ফুলের সাজে সাজানো হয়।
গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু মন্দিরের অন্যতম সেবায়েত সুদিনকুমার গোস্বামী বলেন, এটা যেমন বুদ্ধপূর্ণিমা, তেমন ফুলদোল একই সঙ্গে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর ও মা বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর বিবাহ বার্ষিকী। এদিন গৌরাঙ্গ মন্দির ও বিষ্ণুপ্রিয়া জন্মভিটা মন্দিরে বিবাহ বার্ষিকীও অনুষ্ঠিত হবে। এই বিশেষ দিনে মহাপ্রভুকে সকাল বেলায় জামাইয়ের পোশাক পাঞ্জাবি আর সন্ধ্যায় নববধূর সাজে মা বিষ্ণুপ্রিয়াকে সাজিয়ে তোলা হবে।
বিষ্ণুপ্রিয়া সেবা সমিতির কোষাধ্যক্ষ রাজু ঘোষ বলেন, বৃহস্পতিবার অধিবাসের মধ্যে দিয়ে বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর বিবাহ বার্ষিকীর অনুষ্ঠানের শুরু। আজ শুক্রবার বিকালে বাদ্যযন্ত্র ও নামকীর্তন সহকারে ভক্তরা নবদ্বীপ পরিক্রমা করে গঙ্গা থেকে জল নিয়ে আসবেন। সেই জল দিয়ে রাতে বিবাহ বার্ষিকীর সমস্ত অনুষ্ঠান হবে। রাতে ভোগরাগ। শনিবার দুপুরে বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ছ’শো ভক্তের প্রসাদের আয়োজন করা হয়েছে। একই সঙ্গে এদিন বুদ্ধপূর্ণিমার রাতে রাধারমণ বাগ সমাজ বাড়ি আশ্রমের রাধাগোবিন্দ বিগ্রহ সারারাত গঙ্গাবক্ষে নৌকোয় থাকবে, রাসকীর্তন অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল শনিবার ভোরে বাদ্যযন্ত্র ও কীর্তন সহকারে সেই বিগ্রহ নবদ্বীপের গ্রাম্যদেবী পোড়ামা প্রাঙ্গণে আনা হবে। সেখানে কীর্তন শেষে আশ্রমে ফিরে যাবে বিগ্রহ। উল্লেখ্য, বুধবার থেকে রাধারমণ বাগ সমাজ বাড়ি আশ্রমে তিনদিনের চন্দনযাত্রা উৎসব শুরু হয়েছিল।
No comments