এগরায় ফের পুকুর থেকে উদ্ধার ১৫ বস্তা বাজি, বজবজে বাজেয়াপ্ত ২০ হাজার কেজি!এগরার বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর কেটে গেছে এক সপ্তাহ। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে মূল অভিযুক্ত ভানু বাগ সহ ১১ জনের। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরলেও এখনও এলাকার পুক…
এগরায় ফের পুকুর থেকে উদ্ধার ১৫ বস্তা বাজি, বজবজে বাজেয়াপ্ত ২০ হাজার কেজি!
এগরার বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর কেটে গেছে এক সপ্তাহ। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে মূল অভিযুক্ত ভানু বাগ সহ ১১ জনের। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরলেও এখনও এলাকার পুকুর থেকে উদ্ধার হচ্ছে বস্তার পর বস্তা নিষিদ্ধ বাজি এবং বাজি তৈরির সামগ্রী।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা ২নং ব্লকের দেশবন্ধু অঞ্চলে সাহাড়দা গ্রামে রবিবার রাতে একটি পুকুর থেকে ৮ বস্তা বারুদ ও নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করে গ্রামবাসীরা। তারপর সোমবার সকালেও ফের পুকুর থেকেই উদ্ধার হয়েছে আরও ৭ বস্তা বাজি-বারুদ উদ্ধার হয়েছে। ১৫ বস্তা বারুদ ও বাজি জমা দেওয়া হয়েছে থানায়। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছেছে পুলিশ। পুরো এলাকায় ভালভাবে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের। রবিবার রাতেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ একটি বাজি কারখানায়। রাতেই ঝলসে মৃত্যু হয়েছিল জয়শ্রী ঘাঁটি (৬৫) এবং পম্পা ঘাঁটি (১০) নামে দুজনের। জয়শ্রী এবং পম্পা সম্পর্কে মা-মেয়ে। তাঁদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বেহালা বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। সেই ঘটনার পর রবিবার রাত থেকেই এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল পুলিশ। নেতৃত্বে ছিলেন ডিএসপি (ইন্ডাস্ট্রিয়াল) নিরুপম ঘোষ। শুধু ওইকারখানাটি নয়, মহেশতলা, নুঙ্গি এবং বজবজের একাধিক বন্ধ বাজি কারখানার তালা ভেঙে তল্লাশি চালাতে শুরু করে পুলিশ। তাতেই উদ্ধার হয়েছে ২০ হাজার কেজি বাজি। ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৩৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।বজবজের ঘটনায় যদিও প্রাথমিকভাবে প্রশাসন দাবি করেছিল, ওটা বাজির কারখানা নয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডিএফ টিকে দত্ত বলেন, 'এটা আগুন। বিস্ফোরণ নয়। কোনও কারণে ঘরে আগুন লেগে যায়। ঘরের সামগ্রী দেখা গিয়েছে। বাজির কারখানা বোঝা যায়নি। কীভাবে আগুন লেগেছে তা তদন্ত করে দেখা যাবে। বিস্ফোরণের কোনও ঘটনা নেই। আগুনের কারণে টিন ভেঙে পড়ায় দু'জন আটকে পড়েছিলেন ভিতরে। 'যদিও সাধারণ বাসিন্দাদের দাবি, এই বাড়িটিতে বাজি তৈরি হত। তুবড়ি বানানোর কাজ হত। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, বিস্ফোরণের শব্দও তাঁরা শুনতে পেয়েছেন। তবে পুলিশ বারবারই তা অস্বীকার করে। এমনকী, ঘটনাস্থলে উপস্থিত রিপোর্টারদের প্রশ্নকরতে শোনা যায়, তাঁরা বারুদের গন্ধ তাহলে কেন পাচ্ছেন? পুলিশকর্মী উত্তরে বলেন, তিনি কোনও গন্ধ পাচ্ছেন না।সূত্রের খবর, মহেশতলায় সপ্তাহখানেক আগেও একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। তারপর এগরা, এবং রবিবার রাতে বজবজ। এগরার ঘটনার পরেই বেআইনি বাজি ব্যবসা নিয়ে কড়া সতর্কতা জারি করেছিল প্রশাসন। জানিয়েছিল, বেআইনি বাজি তৈরির খবর পেলে চরম পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু তারপরেও যে পরিস্থিতির কোনও রকম পরিবর্তন হয়নি, রবিবার রাতে বজবজের ঘটনাতেই তা স্পষ্ট। বস্তুত, পঞ্চায়েত ভোটের আগে বেআইনি বাজি ব্যবসার রমরমা এবং একের পর এক এই ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, বাংলা কার্যত বারুদের স্তূপের উপর বসে আছে। এবং এই বেআইনি বাজি ব্যবসা রুখতে ১০০ শতাংশ ব্যর্থ রাজ্য প্রশাসন, দাবি বিরোধীদের।
No comments