হলদিয়া মেলায় হস্তশিল্প ও সবলা মেলা শেষ ঘিরে উৎসবমুখর হলদিয়া, বিক্রি দেখে খুশি ব্যবসায়ীরাও
হলদিয়া বন্দরঃ হলদিয়া মেলার হস্তশিল্প মেলা প্রাঙ্গণে সারা বাংলার শিল্পের যেন মেলবন্ধন ঘটেছে। কী নেই সেখানে! কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির মাটির …
হলদিয়া মেলায় হস্তশিল্প ও সবলা মেলা শেষ ঘিরে উৎসবমুখর হলদিয়া, বিক্রি দেখে খুশি ব্যবসায়ীরাও
হলদিয়া বন্দরঃ হলদিয়া মেলার হস্তশিল্প মেলা প্রাঙ্গণে সারা বাংলার শিল্পের যেন মেলবন্ধন ঘটেছে। কী নেই সেখানে! কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির মাটির পুতুল, অগ্রদ্বীপের দারুশিল্পের বিখ্যাত পেঁচা, বিষ্ণুপুরের বালুচরী, জলপাইগুড়ির কাঠের খোদাই করা গণ্ডার, পিংলার পৌরাণিক পটের সঙ্গে মালদার গাজলের আনন্দলহরী। পাশাপাশি পাল্লা দিচ্ছে সবলা মেলার পিঠেপুলি, চিংড়ি মাছের পাঁপড়, নকশা বড়ি, আমসত্ত্ব, বুটিকের চাদর ও ডিজাইন করা জুয়েলারি।
“চোখ ফেরানো যায় না বালুচরীর বুটিকগুলি থেকে। প্রতিটি শাড়িই বৈচিত্র্যে অনন্য। পরম্পরা ও ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার ছোঁয়ায় সজীব হস্ত ও কারুশিল্পের প্রতিটি পণ্যসম্ভার। লোকজ হস্তশিল্প ও কুটির শিল্প নিয়ে সারা বাংলা মিলিত হয়েছে হলদির মোহনায় রানিচক সতীশচন্দ্র সামস্ত ট্রেড সেন্টারে। বিকেল হতে না হতেই মেলায় ভিড় করছেন মানুষ। ক্ষীরের পাটিসাপ্টা, মালপোয়া, দুধপুলির লোভ সামলাতে পারছেন না অনেকেই। তাই সপরিবারে সবলা মেলায় পিঠের স্বাদ নেওয়ার পরের গন্তব্যই নজরকাড়া হস্তশিল্প মেলা।
হলদিয়া মেলার আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে হস্তশিল্প ও সবলা মেলা। কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণি থেকে এসেছেন ধর্মদাস পাল। তিনি বলেন, মেলায় মাটির পুতুল ভালোই বিক্রি হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী পুতুলের সঙ্গে এখন স্কুল কলেজের পড়ুয়াদের কাছে মোটু-পাতলু, ডোরেমনের মতো কার্টুন পুতুলের চাহিদা বেশি। গাজলের গঙ্গা রুইদাস মেলার মধ্যেই মনমাতানো একতারা ও আনন্দলহরী বাজিয়ে নজর কাড়ছেন সবার। তিনি বলেন, লাউয়ের ভালো মানের একতারার দাম দু'হাজার টাকা। পাইন কাঠের তৈরি আনন্দলহরীর দাম ৮০০-১২০০ টাকা। তবে এখানে বিক্রি কম হচ্ছে। বালুচরী শাড়ির স্টলগুলিতে ভালোই ভিড় রয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে আসা বেতের রয়েছে মেচেদা পর্যন্ত। জিনিসপত্র অবশ্য কম বিক্রি হচ্ছে। দোকানদাররা বলেন, প্রতিবারই শেষের দিকে বেতের আসবাব ব্যাপক বিক্রি হয়। সেই আশায় বোসে রয়েছি। ওদিকে সবলা মেলায় বিক্রি বাড়ায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মুখে হাসি ফুটেছে।
উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর থেকে খোদাই করা পাইন কাঠের আসবাব নিয়ে এসেছেন তিন চারজন দোকানদার। তাঁরা বলেন, গত দু'দিনে বেশ কয়েকটি অর্ডার হয়েছে। তবে নেটওয়ার্ক সমস্যা থাকায় দোকানদার ও ক্রেতাদের লেনদেনে খুব সমস্যা হচ্ছে।
হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর বলেন, হস্তশিল্প ও সবলা মেলায় গত ৬ দিনে ১০ লক্ষ টাকার বেশি বিক্রি হয়েছে। ৮ ই ফেব্রুয়ারি বুধবার একদিনেই প্রায় ৫ লক্ষ টাকা বিক্রি হয়েছে। জেলা থেকে হস্তশিল্প মেলার টানে মানুষ আসছেন। মেলায় কৃষি ও পুষ্পমেলায় হলেও কৃষি মেলায় তেমন কিছু ছিল না। মেলা দেখার জন্য রাত পর্যন্ত বিশাল লাইন পড়ছে। মেলা দেখে ফেরার জন্য রাত ১১টায় মেলার পাশেই বন্দর স্টেশন থেকে লোকাল ট্রেন রয়েছে। এছাড়া রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি বাসের ব্যবস্থা আছে।
এইচডিএর চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার কোন্থাম সুধীর বলেন, শিল্পমেলায় এবার ছোট বড় প্রতিটি শিল্প সংস্থার স্টলই নজর কেড়েছে। ছোটবড় মিলিয়ে ৩৫ শিল্প সংস্থা ও বাণিজ্যিক সংস্থার প্যাভেলিয়ন রয়েছে মেলায়। বৃহস্পতিবার বিকেল হতেই মেলায় উপচে পড়ল ভিড়। ভিড় দেখে হাসি ফুটেছে বিক্রেতাদের মুখে। মেলার শেষের দিকে ভিড় আরও বাড়তে পারে।
No comments