বিতর্ক হলদিয়া পুরসভার আবাসনের ফ্ল্যাট বিতরণকে কেন্দ্র করেআবাস যোজনার বিতর্কের মধ্যেই এবার নয়া বিতর্ক হলদিয়া পুরসভার আবাসনের ফ্ল্যাট বিতরণকে কেন্দ্র করে। এক্ষেত্রেও কাঠগড়ায় সেই শাসক দলে। অভিযোগ, নিজেদের প্রভাব ও ক্ষমতাকে কাজে…
বিতর্ক হলদিয়া পুরসভার আবাসনের ফ্ল্যাট বিতরণকে কেন্দ্র করে
আবাস যোজনার বিতর্কের মধ্যেই এবার নয়া বিতর্ক হলদিয়া পুরসভার আবাসনের ফ্ল্যাট বিতরণকে কেন্দ্র করে। এক্ষেত্রেও কাঠগড়ায় সেই শাসক দলে। অভিযোগ, নিজেদের প্রভাব ও ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে মূলত নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জন্য বরাদ্দ করা উচিত এমন ফ্ল্যাট দীর্ঘ মেয়াদি লিজ নিয়েছেন হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন পুর প্রতিনিধি কিংবা তাঁদের আত্মীয়রা।
পুরসভা সূত্রে খবর, ২০২১- ২২ সালে যখন তৃণমূল নেতৃত্বাধীন পুরবোর্ড ক্ষমতায় ছিল তখন হলদিয়া দুর্গাচকের পুর আবাসনের তিনটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ হয়েছে প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান নারায়ণ প্রামাণিকের স্ত্রী সুলতা প্রামাণিক, প্রাক্তন পুর পারিষদ সদস্য ও শহর তৃণমূল সভাপতি স্বপন নস্করের মেয়ে শ্রীরূপা নাস ও প্রাক্তন পুর প্রতিনিধি বিমল মাজির নামে। যদিও পুর নিয়ম মেনে নির্ধারিত টাকার বিনিময়ে পুরসভা থেকে এই ফ্ল্যাটগুলি হস্তান্তর করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট তিনজনকে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সাধারণ মানুষের জন্যবরাদ্দ এই ফ্ল্যাট যদি নেতা পুর প্রতিনিধিরাই নিয়ে নেন তাহলে সাধারণ মানুষের কী সেবা করবেন তারা? যেখানে এই তিনজনেরই করা হয়েছে।” নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। পুরসভার নিয়ম বলছে, খালি ফ্ল্যাট বিতরণ করার জন্য পুরসভার তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তা সাধারণকে অবগত করতে হয়। তারপর তারভিত্তিতে আবেদন হয়। তারপর তারভিত্তিতে আবেদন পত্র আহ্বান করতে হয়। অতঃপর পুর কর্তৃপক্ষ আবেদনপত্রগুলি বিবেচনা করে। এক্ষেত্রে সে সব কিছুই না করে সরাসরি ওই তিন পুর প্রতিনিধি বা তাঁদের আত্মীয়দের আবেদনে ফ্ল্যাট তিনটি বরাদ্দ করা হয়েছে।
নারায়ণ প্রামাণিকের যুক্তি, “আমি যৌথ পরিবারে থাকি। তাই আমার নিজস্ব ঘরের প্রয়োজন ছিল। তাই আবেদন করেছিলাম।” যদিও সেই ফ্ল্যাট বরাদ্দ হওয়ার ছ' মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও সেই পুরনো ঘরেই থেকে গিয়েছেন তিনি। প্রাক্তন পুরপারিষদ ও শহর তৃণমূল সভাপতি স্বপন নস্কর বলেন, “অন্য দু'জন নিচ্ছেন দেখেই আমিও একটা ফ্ল্যাটের জন্য আবেদন করেছিলাম।” প্রাক্তন পুরপ্রধান সুধাংশু মণ্ডল বলেন, “যা করা হয়েছে তা পুর পারিষদদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের সম্মতিতেই হয়েছে। আইন মেনেই সব কাজ হয়েছে।
প্রাক্তন পুরবোর্ডের এক তৃণমূল পুর প্রতিনিধি বলেন। “এই সমস্ত কারণেই আমাদের দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে জনমানসে। অনৈতিক কাজ করছেন জেনেও বিষয়টি বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা ছাড়াই মুষ্টিমেয়দের নিয়ে তৈরি পুরপারিষদ বৈঠকে পাশ করিয়ে নেওয়া হয়েছে। মানুষের কাছে এঁরাই বার্তা পাঠাচ্ছেন যে, আমাদের দলটা যেন লুটেপুটে খাওয়ার দল। এঁদের জন্যই দলের লজ্জা বাড়ছে। এদের কৃতকর্মের দায় আমাদের বইতে হচ্ছে।”
কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। ভারতীয় মজদুর সংঘের (বিএমএস) রাজ্য সহ-সভাপতি প্রদীপ কুমার বিজলি বলেন, “তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি হতে গেলে শর্তে হল সরকারি সম্পত্তি নিজের নামে করতে হবে। জনগণের কথা ভাবা যাবে না। জনসাধারণের জন্য বরাদ্দ ফ্লাট তিন তৃণমূল নেতাই নিয়ে নিলেন। তৃণমূল কোন মুখে বলে তারা মানুষের জন্য কাজ করে। এটা তার নমুনা!”
No comments