Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

রাত্রিবাসের জন্য মহিষাদল রাজগড়ে কটেজ তৈরির পরিকল্পনা

রাত্রিবাসের জন্য মহিষাদল রাজগড়ে কটেজ তৈরির পরিকল্পনাকলকাতা থেকে প্রতি বছরই বসন্ত উৎসবে মহিষাদলে আসেন অনেকেই। রাজবাড়ির আমবাগানে মহিষাদল প্রেস কর্নার আয়োজিত বসন্ত উৎসবে আনন্দও করেন খুব। কিন্তু উৎসবের আগের দিন অথবা এই দিনটাতে রাজ…

 



রাত্রিবাসের জন্য মহিষাদল রাজগড়ে কটেজ তৈরির পরিকল্পনা

কলকাতা থেকে প্রতি বছরই বসন্ত উৎসবে মহিষাদলে আসেন অনেকেই। রাজবাড়ির আমবাগানে মহিষাদল প্রেস কর্নার আয়োজিত বসন্ত উৎসবে আনন্দও করেন খুব। কিন্তু উৎসবের আগের দিন অথবা এই দিনটাতে রাজবাড়ি চত্বরে থাকার ইচ্ছেটা অনেক দিনের। রাজবাড়ির নিজস্ব বুকিং তাঁর বাজেটের বাইরে। অনেক সময় চেষ্টা করেও পারেননি। অলরেডি বুকিং কমপ্লিট। এ বছরও থাকার জন্য তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সাধ থাকলেও এরকম অনেকেরই ইচ্ছেপূরণ হয় না। আর সেই ইচ্ছে এবার পূরণ করতে চলেছেন মহিষাদলের বিধায়ক তিলককুমার চক্রবর্তী। রাজবাড়িকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনার কথা তাঁর মুখে বারবারই শোনা গিয়েছে। এবার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে প্রশ্ন-উত্তর পর্বেও শোনা গেল মহিষাদলের পর্যটন শিল্প পরিকাঠামোর উন্নয়নের পরিকল্পনার কথা।

পর্যটকদের কাছে মহিষাদল রাজবাড়ি সবসময়ই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। শুধু রাজবাড়ির ইতিহাস নয়, সবুজে ঘেরা উন্মুক্ত পরিবেশ, শীতের মরশুমে বিরাট বিরাট জলাশয়, পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা প্রতি বছরই আকর্ষণ করে পর্যটকদের। কিন্তু সরকারি কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে সেভাবে রাত্রিবাসের হোটেল বা অতিথিশালা না থাকায় সমস্যায় পড়েন পর্যটকরা। দু-চারটে অতিথিশালা থাকলেও সেখানে বুকিং করা বেশ মুশকিল। অনেকেই আগে থেকেই বুকিং করে রাখেন। তাই রথ বা বসন্ত উৎসব-এর মরশুমে শেষ মুহূর্তে থাকার পরিকল্পনা হলে রাত্রিবাসের সুযোগ থাকে না পর্যটকদের।

রাজগড়ে রাত্রিবাসের কটেজ তৈরি হলে সপরিবারে থাকতে

অনেক সুবিধা হবে। শুধু শীতের মরশুমে ছুটি কাটানো নয়, তার পাশাপাশি রথের সময় কিংবা বসন্ত উৎসবের সময় রাত্রে থাকার বিষয়ে আর কোনও চিন্তা থাকবে না। তাই এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন  অনেকেই।

 “রাজবাড়িকে কেন্দ্র করে মহিষাদলের ইতিহাস দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছে, নতুন নতুন বহু পর্যটক মহিষাদলমুখী হচ্ছেন। শুধু ছুটি কাটাতে নয়, গবেষণার প্রয়োজনেও তাঁদের এখানে এসে থাকতে হয়, ফলে রাত্রিবাসের কটেজ হলে তাদের পক্ষেও অনেক সুবিধা হবে।”

মহিষাদল এবং সংলগ্ন বিভিন্ন টুরিস্ট স্পটকে ঘিরে টুরিজম সার্কিট তৈরি করার চিন্তা অনেকদিনই করেছে জেলা প্রশাসন। শুধু তাই নয়, মহিষাদল রাজবাড়িকে কেন্দ্র করেও বেশ কিছু চিন্তাভাবনা রয়েছে প্রশাসনের। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার বিধায়ক তিলককুমার চক্রবর্তী। পরিকল্পনা এবং বাস্তব রূপায়ণ সব বিষয়েই তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালনকরবেন বলে জানিয়েছেন।

ইতিমধ্যেই রাজবাড়ি চত্বরে বসেছে হাই মাস্ট লাইট, হয়েছে ঢালাই রাস্তা। মহিষাদল রাজগড়কে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেছে পর্যটন দফতর। ভেঙে পড়া সিংহদুয়ারের সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। চলছে দুর্গামণ্ডপের আটচালা মেরামতির কাজও। শীতের মরশুমের শুরুতেই বিভিন্ন জায়গা থেকে পিকনিকের জন্য সপরিবারে হাজির হচ্ছেন পর্যটকরা। ছুটির দিনগুলোতে তো তিলধারণের জায়গা থাকে না।

করোনাকালীন সময় কাটিয়ে জীবনও ফিরেছে নতুন ছন্দে। দল বেঁধে হাঁড়ি-কড়াই নিয়ে রাজার গড়ে পিকনিক করতে আসছেন মানুষজন। শুধু মেচেদা, তমলুক কিংবা হলদিয়া নয়, অন্যান্য জেলা থেকেও বাসে করে দলে দলে মানুষ পিকনিক করতে আসেন। মহিষাদল রাজগড়ে। সেই পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই পর্যটন কটেজ বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ রাজগড়ে রাত্রিবাসের জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেই সূত্রে ঝাড়গ্রাম মডেলের অনুকরণে মহিষাদল রাজগড় চত্বরে পর্যটন কটেজ তৈরির পরিকল্পনা করেছেন বিধায়ক।২৩ নভেম্বর মহিষাদল প্রেস কর্নারের বসন্ত উৎসবের প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত হয়ে তিলকবাবু বলেন, “পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে রাজবাড়ি চত্বরে রাত্রিবাসের জন্য কটেজ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মহিষাদলে পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা বিপুল। ঠিকঠাক সবকিছু পরিষেবা দিতে পারলে অনেক পর্যটক মহিষাদলে আসবেন, এতে স্থানীয় মানুষেরও আয় বাড়বে।” ধাপে ধাপে রাজগড়কে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সাজিয়ে তুলে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে মহিষাদলের নাম ওপরের সারিতে তোলার জন্য তিনি বদ্ধপরিকর।

গোপাল জিউ মন্দিরের সামনে ভগ্নপ্রায় নহবৎখানাটিও | সংস্কারের জন্য তিনি উদ্যোগী হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই আমগাছের গোড়াগুলিকে পাকাপাকিভাবে বাঁধিয়ে পর্যটকদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শীতের মরশুমে রাজগড়ে ভিড় জমায় বহু পরিযায়ী পাখি। পরিবেশের ভারসাম্যের কথা মাথায় রেখেই গত বছর থেকেই স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে রাজগড় চত্বরে পিকনিকের সময় লাউডস্পিকার ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় শিক্ষক কানাইলাল ভূঁইয়া। তিনি বলেন, “বাস্তুতন্ত্রের কথা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে, পৃথিবীটা সবার, শীতের মরশুমে বহু পরিযায়ী পাখি দেখা যায়। রাজবাড়ির বড় বড় জলাশয়গুলিতে, লাউডস্পিকারের শব্দ তাদের অসুবিধার সৃষ্টি করে। স্থানীয় প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।” মহিষাদলের বিডিও যোগেশচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “গত বছর থেকেই রাজগড়ে পিকনিকের সময় ডিজে বক্সের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ বছরও বিষয়টির প্রতি নজর রাখছে প্রশাসন।”

বেশ কিছু মানুষের অভিযোগ, পঞ্চায়েত সমিতি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নর জন্য টাকা নিলেও কাজটা আদৌ সঠিকভাবে হয় না। ফলে যত্রতত্র পড়ে থাকে নোংরা। একদল পিকনিক করে চলে যাওয়ার পরে যখন আর একদল আসেন, তখন তাঁরা চরম সমস্যার সম্মুখীন হন। এ নিয়েও প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

No comments