নির্মাণ শ্রমিকদের ছেলে মেয়ে দের জন্য ২৫টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাবা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। কাজের প্রয়োজনে হয়তো তাঁকে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয়েছে। রাতদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্জিত অর্থে তাঁর সন্তান পড়াশোনা করছে। বাবার…
নির্মাণ শ্রমিকদের ছেলে মেয়ে দের জন্য ২৫টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
বাবা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। কাজের প্রয়োজনে হয়তো তাঁকে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয়েছে। রাতদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্জিত অর্থে তাঁর সন্তান পড়াশোনা করছে। বাবার আশা, একদিন ভালো চাকরি পাবে তাঁর সন্তান। এরকম লক্ষ লক্ষ নির্মাণ শ্রমিকের স্বপ্নপূরণে এগিয়ে এল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের শ্রমদপ্তর। বাংলার প্রায় ৪৩ লক্ষ নির্মাণ শ্রমিকের সাবালক সন্তানের অনেকেই হাতে-কলমে কাজ শিখে কারিগরি দক্ষতার পেশা বেছে নিতে চাইছেন। সমীক্ষায় উঠে আসা এই ট্রেন্ড দেখে এবার রাজ্যের শ্রমদপ্তর সেই মতো পদক্ষেপ করতে চলেছে। নির্মাণ শ্রমিকদের আঠারোর্ধ সন্তানের জন্য সম্পূর্ণ নিখরচায় বিশেষ প্রশিক্ষণ চালু করছে দপ্তর। কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় ২৫টি স্থায়ী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে তারা। নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে বেশ কয়েক কোটি টাকা খরচ করে এই কেন্দ্রগুলি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট বোর্ড। ট্রেনিংয়ের জন্য বাছাই হওয়া ছেলেমেয়েরা দিন প্রতি প্রায় ২৫০ টাকা স্টাইপেন্ড পাবেন। সম্প্রতি বোর্ডের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছে শাসক, বিরোধী সব শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। সেন্টারগুলি তৈরি করতে পূর্তদপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের প্রায় ৪৩ লক্ষ নির্মাণ শ্রমিকের সাবালক সন্তানরা এই সুযোগের আওতায় আসতে চলেছেন।
শ্রমদপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রায় ৩৩টি বিষয়ে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য পেশাদার সংস্থার সাহায্য নেওয়া হবে। এজন্য শীঘ্রই 'এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট' চাওয়া হবে। তবে কেবল সন্তানদের জন্যই নয়, নির্মাণ শ্রমিকদের কাজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্যও কেন্দ্রগুলিতে থাকবে প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত। ঠিক হয়েছে, প্রতিটি কেন্দ্রে একলপ্তে ১০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকাঠামো থাকবে। একতলায় প্রশিক্ষণ হলের সঙ্গেই এই সেন্টারগুলির উপরের তলে থাকবে ডরমেটরি সিস্টেমে থাকার জায়গা। অন্ততপক্ষে ১০টি বড় রুম এজন্য তৈরি হবে প্রতি সেন্টারে। হস্টেলের মতো করে প্রতিটি রুমে ১০ জনের থাকার ব্যবস্থা থাকবে। কমন এরিয়ায় থাকবে এন্টারটেইনমেন্ট রুম, ক্যান্টিন ইত্যাদি।
দপ্তরের সিনিয়র আধিকারিকরা জানিয়েছেন, নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ- সুবিধার পরিধি বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রকও জোর দিচ্ছে। সব রাজ্যকে তারা একটি গাইডলাইনও পাঠিয়েছে। সেই নির্দেশিকায় এই ধরনের ট্রেনিং সেন্টার তৈরির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে দেশের অন্যান্য রাজ্য এই পথে হাঁটার আগেই বাংলা উদ্যোগী হয়েছে। হস্টেলগুলিতো নিখরচায় থাকতে পারবেন শ্রমিক-সন্তানরা। পাশাপাশি নির্মাণ শ্রমিকরাও প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবেন এই হস্টেল ব্যবস্থাপনা।
No comments