নন্দকুমার মডেলে এবার মহিষাদলের সমবায় নির্বাচনেও বাম-বিজেপি জোট, যুযুধান লড়াইয়ে তৃণমূলও !
দিন কয়েক আগেই পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানা এলাকায় বহরমপুর সমবায়ের নির্বাচনে তৃণমূলকে শূন্য আসনে আটকে দিয়েছিল বাম বিজেপি জোট ‘পশ্চিমবঙ্গ …
নন্দকুমার মডেলে এবার মহিষাদলের সমবায় নির্বাচনেও বাম-বিজেপি জোট, যুযুধান লড়াইয়ে তৃণমূলও !
দিন কয়েক আগেই পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানা এলাকায় বহরমপুর সমবায়ের নির্বাচনে তৃণমূলকে শূন্য আসনে আটকে দিয়েছিল বাম বিজেপি জোট ‘পশ্চিমবঙ্গ সমবায় বাঁচাও মঞ্চ’। এমন জোট গড়ে পঞ্চায়েতে লড়াইয়ের ডাক দেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খানও। এবার সেই একই পথে এই জেলার মহিষাদলের কেশবপুর জালপাই রাধাকৃষ্ণ সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামল বাম বিজেপি জোট সংযুক্ত কৃষক মোর্চা। এই ভোটের ফলাফল কোন দিকে যায় সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০ নভেম্বরের রয়েছে রাধাকৃষ্ণ সমবায়ের নির্বাচন। তৃণমূল পরিচালিত এই সমবায়ে রয়েছে মোট ৭৬টি আসন। যেখানে সবকটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে সংযুক্ত কৃষক মোর্চার ব্যানারে ৬২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি এবং ১৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছেন বামেরা। ১টি আসনে বিরোধীদের কোনও প্রার্থী না থাকায় সেই আসনটি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল জয়ী হয়েছে। বাকী ৬১টি আসনে ভোটের ফলে নন্দকুমারের ঝলক দেখা যাবে কিনা তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।
ইটামগরা ২ অঞ্চলের বিজেপির আহ্বায়ক রামকৃষ্ণ দাসের দাবী, এই সমবায়টাকে আমরা বাঁচানোর স্বার্থে কাজ করছি। তৃণমূলের আমলে গত কয়েক বছরে এখানে নানা রকমের দুর্নীতি স্বজনপোষণ চলেছে। বেআইনি ভাবে নিয়োগ হয়েছে। সার দোকান, রেশন দোকানে লোকসান দেখানো হচ্ছে”। রামকৃষ্ণের মতে, “আমাদের লড়াই তৃণমূলের বিরুদ্ধে, সেই হিসেবে মানুষের বিরুদ্ধে মানুষের জোট গড়েছি আমরা”।
অন্যদিকে মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী’র মন্তব্য, “গোটা রাজ্যে তৃণমূলকে জব্দ করার জন্য বাম, বিজেপি ও কংগ্রেস হাত মিলিয়েছে। তৃণমূলের নিকেশ করার এই চক্রান্ত ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। বাংলার মানুষ সেটা বুঝেছে। এই অশুভ আঁতাত গড়েই ৯ নভেম্বর নন্দকুমারের বহরমপুর কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের ভোটে জিতেছে। তবে এমন জোট নিয়ে বেশীদূর এগোতে পারবে না। কেশবপুর জালপাইয়ের সমবায় নির্বাচনে ওরা বিপুল ভোটে পরাস্ত হবে। মানুষ ওদের কোনও ভাবেই বিশ্বাস করে না”।
ইতিমধ্যে দুই যুযুধান দলই নেমে পড়েছে প্রচারে। যার মধ্যে জোট বেঁধে প্রার্থী দেওয়া বাম বিজেপি নেতারা একসঙ্গে প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন। বাম বিজেপি নেতারা একসঙ্গে হাত মিলিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারে গিয়ে দাবী করছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই। এই লড়াই কেবলমাত্র মানুষের জন্য়। সমবায় থেকে তৃণমূলকে উপড়ে ফেলাই তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য বলে দাবী করছেন জোটপন্থী নেতারা। অন্যদিকে তৃণমূলও বাম বিজেপির আঁতাতকে হাতিয়ার করে এলাকার মানুষের কাছে প্রচার চালাচ্ছেন। বিপুল পোষ্টারে ছেয়ে গিয়েছে এলাকা। পথ সভা থেকে বাড়ি বাড়ি প্রচার বাদ যাচ্ছে না কিছুই।
বাম বিজেপি জোটের আর এক নেতা সিপিআই-এর ইটামগরা ২ আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক সুধাংশু বারিকের দাবী, “তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবে এই কোঅপারেটিভে ঢুকেছিল এবং সেখানে নিজেদের স্বার্থে সমস্ত ব্যবস্থা করতে থাকল। ওখানে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন। ওরা কখনওই মানুষের স্বার্থে কাজ করেনি। তাই এবার তৃণমূল বিরোধী সমস্ত মানুষ একসঙ্গে জোট বেঁধে লড়াইয়ে নেমেছি। যে কোনও মূল্যে তৃণমূলকে এই সমবায় থেকে উৎখাত করাই আমাদের লক্ষ্য”।
No comments