বিধানসভায় মমতার সৌজন্যের জের, কাঁথি’র ‘শান্তিকুঞ্জে’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চায়ের আমন্ত্রণ দিব্যেন্দুর, রাজ্যে রাজনৈতিক সমীকরণ ঘিরে জোরাল জল্পনা !
২৫ নভেম্বর ২০২২ বিধানসভায় আচমকাই শুভেন্দু অধিকারীকে ‘ভাই বলে ডাকতাম’ জানান মুখ্যমন…
বিধানসভায় মমতার সৌজন্যের জের, কাঁথি’র ‘শান্তিকুঞ্জে’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চায়ের আমন্ত্রণ দিব্যেন্দুর, রাজ্যে রাজনৈতিক সমীকরণ ঘিরে জোরাল জল্পনা !
২৫ নভেম্বর ২০২২ বিধানসভায় আচমকাই শুভেন্দু অধিকারীকে ‘ভাই বলে ডাকতাম’ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিশির অধিকারীর শারীরিক অবস্থারও খোঁজ নেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এই সৌজন্যতায় আপ্লূত কাঁথির অধিকারী পরিবার। আগামী ৩ ডিসেম্বর কাঁথির কলেজ মাঠের সভায় এলে ‘শান্তিকুঞ্জে’ চায়ের আমন্ত্রণ জানালেন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী।
আজ দিব্যেন্দু সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে জানানা, “শুভেন্দু অধিকারী একজন বিরোধী দলনেতা। তিনি সম্মান পাওয়ার যোগ্য। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে সৌজন্যতা দেখিয়েছেন, শুভেন্দু অধিকারীকে সম্মান দিয়েছেন, বাবা শিশির অধিকারীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন, এটাই আমরা চেয়েছি”।
তাঁর যুক্তি, “রাজনীতির বাইরে গিয়েও মানুষের একটা পরিচয় থাকে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়েই বার্তা দেব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কাঁথির কলেজ মাঠের সভায় আসবেন তাঁকে চায়ের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। শান্তিকুঞ্জ থেকে মাত্র কয়েক’শ মিটার দুরেই অভিষেকের সভাস্থল। তিনি এলে শান্তিকুঞ্জে চা খেয়ে যান”।
তবে মমতা’র সঙ্গে শুভেন্দুর সখ্যতা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে জোরদার জল্পনা। ২০২১-এর নির্বাচনে নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিজেপির প্রতীকে দাঁড়িয়ে একদা তাঁরই ঘনিষ্ঠ শুভেন্দু অধিকারী। সেই নির্বাচনে মমতাকে হারিয়েছিলেন বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরপর থেকেই শুভেন্দু তথা অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের টক্কর চলছে সমানে। তৃণমূল বনাম বিজেপির লড়াই কোথাও যেন তৃণমূল বনাম অধিকারী পরিবারের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর কথার উত্তর শুভেন্দু’র উক্তি ‘এই রাজ্যের সরকার বাই দা পার্টি, ফর দা পার্টি, অফ দা পার্টি হয়ে গিয়েছে’ বলে অভিযোগ তোলেন। সেই কথার রেশ ধরেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, “এক সময় যাকে ভাই বলে ডাকতাম সে এই কথা বলল”। এরপর থেকেই নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে রাজ্যের রাজনীতিতে। শুভেন্দুকে চা চক্রে আমন্ত্রণ জানানো, বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের সরকারী অনুষ্ঠানে যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়ে ডাকার প্রতিশ্রুতি, সরকারী উন্নয়নের কাজে-স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় বিজেপি সাংসদ বিধায়কদের টাকা কাজে লাগানো, শিশির অধিকারীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেওয়ার মতো অনেক কিছুই ঘটে গিয়েছে। যা গত কয়েক বছরের ইতিহাস ঘাঁটলে অনাকাঙ্ক্ষিতই মনে হতে বাধ্য।
এই আবহে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোলামেলা ভাবেই কাঁথির শান্তিকুঞ্জে চায়ের আমন্ত্রণ জানানোর ঘটনা যথেষ্ট আলোড়ন ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। আগামী দিনে শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যেকার তিক্তকা কাটিয়ে রাজ্যের উন্নয়নের দিকেই কি সবাই নজর দেবেন নাকি রাজনৈতিক আকচাআকচিতে আবারও সম্পর্কের তিক্ততা বাড়বে তা নিয়েই শুরু হয়েছে জোরদার জল্পনা।
No comments