হলদিয়াতে হাঁটু প্রতিস্থাপন হল স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে এক দিনমজুরের স্ত্রী’র হাঁটু প্রতিস্থাপন হল হলদিয়ায়। এই প্রথম বন্দর শহরে হাঁটু প্রতিস্থাপনের মতো জটিল অপারেশন করলেন বিসি রায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা। হলদিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক…
হলদিয়াতে হাঁটু প্রতিস্থাপন হল
স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে এক দিনমজুরের স্ত্রী’র হাঁটু প্রতিস্থাপন হল হলদিয়ায়। এই প্রথম বন্দর শহরে হাঁটু প্রতিস্থাপনের মতো জটিল অপারেশন করলেন বিসি রায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা। হলদিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক চিকিৎসক সৌম্য ঘোষের নেতৃত্বে এই অপারেশন হয়। এদিন পৌনে দু’ঘণ্টার অপারেশনে বাঁ পায়ের হাঁটু প্রতিস্থাপন করেন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুতাহাটা ব্লকের গুয়াবেড়িয়া টাবাখালি এলাকার তিপান্ন বছর বয়সী সুমিত্রা দাসের হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। দু’লক্ষ টাকা খরচের অপারেশন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে বিনা খরচে হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান সুমিত্রাদেবীর পরিবারের লোকজন।
সুমিত্রাদেবীর স্বামী পঞ্চানন দাস দিনমজুরের কাজ করেন। স্ত্রীকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন। পঞ্চাননবাবু বলেন, আমার স্ত্রী হাঁটাচলা করতে পারত না। কোনও রকমে দাঁড়িয়ে রান্নাবান্না করত। হাঁটু মুড়ে বসা, রাস্তায় চলাচল করা বা গাড়ি উঠতে পারত না। চিকিৎসরকরা জানিয়েছিলেন হাঁটু ক্ষয়ে যাচ্ছে। দু’পায়েই সমস্যা রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে আর বাইরে বেরতে পারবে না। হাঁটু প্রতিস্থাপন ছাড়া উপায় নেই। স্ত্রী স্বনির্ভর গোষ্ঠী দলের সদস্য হলেও তেমন সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারত না। প্রায় হাঁটুর যন্ত্রণায় ছটফট করত। কোনও রকমে ওষুধ খেয়ে থাকত। এরপর ডাক্তার সৌম্য ঘোষকে হাঁটুর যন্ত্রণা নিয়ে দেখাতে এলে উনি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে বিনা খরচে হাঁটু প্রতিস্থাপনের আশ্বাস দেন। ওনার আশ্বাস পেয়ে সাহস পাই। বাড়ির কাছে হলদিয়াতে এই অপারেশন করাতে পেরে আমরা খুশি।
চিকিৎসক সৌম্য ঘোষ বলেন, হলদিয়ায় হাঁটু প্রতিস্থাপনের মতো অপারেশন প্রথম হল। চিকিৎসার পরিভাষায় এর নাম নী আর্থোপ্লাস্টি। ওই মহিলার বাঁ পায়ে প্রথম অপারেশন করা হল। এর পর তিন মাস পর স্বাস্থ্যসাথী কার্ডেই ডান পায়ের অপারেশন করা হবে। হলদিয়ার মানুষের কাছে এটি সুখবর কারণ বাড়ির পাশেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার করে জটিল অপারেশন সম্ভব। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চিকিৎসক সৌম্য ঘোষ, অ্যানাস্টেসিস্ট গৌতম দাস, কৃষ্ণেন্দু চৌধুরি, মাসুদ আলি, সুনীল দাস সহ ৮জনের টিম এই অপারেশন করেছে। গত ৯ জুলাই ষাঁড়ের গুঁতোয় পীতাম্বরচকের বাগাম্বর মাইতি নামে এক ভ্যানচালকের কোমর ভেঙেছিল। তাঁর জটিল অপারেশন করে তাঁর ভাঙা কোমর জোড়া লাগান চিকিৎসকদের ওই টিম। স্বাস্থ্যসাথীতেই সেই চিকিৎসা হয়েছিল। সুমিত্রদেবীর পরিবারের লোকজন বলেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকলে আমাদের মতো গরীব মানুষের কাছে এই অপারেশন করা সম্ভব হত না। বাড়ির পাশে সহজে এতবড় অপারেশন হতে পারে ভাবতেই পারছিনা। এজন্য মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাই।
No comments