Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

পুজোমণ্ডপই হয়ে উঠছে বাংলার লোকসংস্কৃতির আস্ত এক ‘জাদুঘর’

পুজোমণ্ডপই হয়ে উঠছে বাংলার লোকসংস্কৃতির আস্ত এক ‘জাদুঘর’
‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর...’। এই ভাবনাকে সামনে রেখেই বাংলার লোকশিল্প ও সংস্কৃতির রূপকে এবার পুজোমণ্ডপে তুলে ধরছে হলদিয়া দুর্গোৎসব…

 


পুজোমণ্ডপই হয়ে উঠছে বাংলার লোকসংস্কৃতির আস্ত এক ‘জাদুঘর’


‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর...’। এই ভাবনাকে সামনে রেখেই বাংলার লোকশিল্প ও সংস্কৃতির রূপকে এবার পুজোমণ্ডপে তুলে ধরছে হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটি। পুজোমণ্ডপই হয়ে উঠছে বাংলার লোকসংস্কৃতির আস্ত এক ‘জাদুঘর’। বাঁকুড়ার পাঁচমুড়ার পোড়ামাটির পুতুল, বাঁশ ও বেতের তৈরি কুলো, মাটির সরা, চায়ের ভাঁড়, কাঠ খোদাই শিল্প, শোলার কাজ, চালচিত্র, পটচিত্র, আলপনা, বারাসতের দত্তপুকুরের টেরাকোটা থেকে ছৌ, ঢাক, ধামসা মাদলের সঙ্গে আদিবাসী নাচ, মুখোশ নৃত্য, সবই থাকবে সেই জাদুঘরে। শুধু বাংলা নয়, ভিনরাজ্যের লোকনৃত্যও দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকবে শারদ উৎসবের পাঁচদিন। বাংলার লুপ্তপ্রায় লোকসংস্কৃতিকে আকর্ষণীয় করে তুলে ধরতে প্রযুক্তি ও আলোর কারিগরি কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে মণ্ডপজুড়ে। এবার পুজোর থিম ‘মাটির টানে মায়ের কাছে’।

হলদিয়ার ক্ষুদিরামনগরে হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজো মাত্র কয়েক বছরেই শিল্পশহরের আকর্ষণের কেন্দ্রে উঠে এসেছে। বিগবাজেট শুধু নয়, থিমের ভাবনা, উৎসব আয়োজনের বৈচিত্র্য ও বিশালতার দিক থেকে বড় মাপের শারদীয়া উৎসবের চেহারা নিয়েছে এই পুজো। মণ্ডপের পাশাপাশি চন্দননগরের আলোর কারসাজি, পাঁচদিন নামী শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা, লোকশিল্পীদের নিয়ে শোভাযাত্রা, এই পুজোকে আলাদা বৈশিষ্ট্য দিয়েছে। পুজো কমিটির লক্ষ্য, বাংলার সাবেকি ধাঁচের পুজোর সঙ্গে আধুনিককালের থিমকেন্দ্রীক বৈচিত্র্যের মেলবন্ধন ঘটানো। শিল্পশহর ছাড়িয়ে পুজোর সুনাম ছড়িয়েছে মেদিনীপুর জুড়ে। প্রতিবারই পুজোর ঠাকুরদালানে মূল আকর্ষণ থাকে বিশাল আকৃতির রঙবাহারি ঝাড়বাতি। 

হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজোর সভাপতি সুদীপ্তন শেঠ বলেন, করোনার পর এবার পুজোয় মানুষের বাড়তি উৎসাহ উদ্দীপনা রয়েছে। সেজন্য বড় আকারে পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। পুজো প্রাঙ্গণে আলোর কেরামতি করে পার্ক তৈরি করা হচ্ছে। এবার পঞ্চমীতে পুজোর উদ্বোধন করবেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে। পুজোর প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন আইকেয়ারের সম্পাদক আশিস লাহিড়ি, স্পর্শিতা পণ্ডাশেঠ, প্রণব দাস প্রমুখ।

পুজো কমিটির সম্পাদক দেবাশিস মাইতি ও কোষাধ্যক্ষ সুকুমার মাইতি বলেন, বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকশিল্পীরা এসে গত একমাস ধরে মণ্ডপ তৈরির কাজ করছেন। এধরনের মণ্ডপ আগে কখনও হলদিয়া শহরে হয়নি। দেবাশিসবাবু বলেন, পুজোর শোভাযাত্রায় করতাল ও ছৌ নাচ, রাজস্থানী ডান্ডিয়া ও গড়বা নাচ, মণিপুরী নাচ, সাঁওতালি ও রনপা নাচ, মহিলা ঢাকি, মিলিটারি ব্যান্ডের সঙ্গে ধামসা মাদল ব্যান্ডের মেলবন্ধন ঘটবে। প্রায় ৩০০জন শিল্পী একসঙ্গে এই শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন। ষষ্ঠীর দিন সন্ধ্যায় বস্ত্র বিতরণ করা হবে। ওইদিন লোকগান গাইবেন অর্পিতা চক্রবর্তী।

পুজোর সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আসছেন মুম্বই ও টলিউডের অভিনেতা, গায়ক রাজশ্রী বাগ, মনোজ রায়, দিতিপ্রিয়া, সৃজিত, পারমিতা, তৃণা সাহার মতো শিল্পীরা ও রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিউজিক্যাল ট্রুপ। নবমীতে পুজো কমিটি ১০ হাজার মানুষকে ভোগপ্রসাদ বিলি করবে। প্রতিমা তৈরি করছেন কুশধ্বজ বাগ এবং মণ্ডপ পরিকল্পনায় রয়েছেন চন্দন মাইতি। 

চন্দনবাবু বলেন, পোড়ামাটির ১০ হাজার পুতুল আনা হয়েছে বাঁকুড়া থেকে। মণ্ডপে উৎসবমুখর মানুষের আঙ্গিকে পোড়ামাটি ও বাঁশের তৈরি ফিগার দিয়ে সাজানো হচ্ছে। আলোর উপর দিয়ে হেঁটে দর্শনার্থীরা মণ্ডপে প্রবেশ করবেন।

No comments