পূর্ব মেদিনীপুরে বাড়ছে স্ক্রাব টাইফাস, আক্রান্ত ১৭৩ জন
স্ক্রাব টাইফাসের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরে। জেলায় ১৭৩ জন শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সাধারণত দুই থেকে সাত বছর বয়সি শিশুরা এই রোগে ভুগছে। ইঁদুরের শরীরে এক বিশেষ পোক…
পূর্ব মেদিনীপুরে বাড়ছে স্ক্রাব টাইফাস, আক্রান্ত ১৭৩ জন
স্ক্রাব টাইফাসের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরে। জেলায় ১৭৩ জন শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সাধারণত দুই থেকে সাত বছর বয়সি শিশুরা এই রোগে ভুগছে। ইঁদুরের শরীরে এক বিশেষ পোকা থেকেই স্ক্রাব টাইফাস রোগ ছড়ায়। তাই ঘরের বাইরে শিশুর পায়ে জুতো ব্যবহার জরুরি। সঙ্গে ফুল প্যান্ট ও ফুলহাতা জামা পরানো প্রয়োজন। সম্প্রতি স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালেও এনিয়ে সচেতনতামূলক ফ্লেক্স, ব্যানার টাঙানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের সিএমওএইচ বিভাস রায় বলেন, আমাদের জেলায় স্ক্রাব টাইফাসের সংখ্যা বেড়েছে। এনিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ডেঙ্গুর পাশাপাশি স্ক্রাব টাইফাস মোকাবিলায় আমরা নানা পরিকল্পনা নিচ্ছি। বাড়ির আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখা জরুরি।
স্ক্রাব টাইফাস মূলত দুই থেকে সাত বছর বয়সি শিশুদের মধ্যে হয়। এই রোগের লক্ষণগুলি হল, জ্বর, পেট ব্যথা, বমি, কফ ও ঠান্ডা লাগা। এছাড়া শরীরে র্যাশ বের হয়। সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিকে এই জ্বর সারে না। টেস্ট রিপোর্টে সবকিছু নেগেটিভ এলেও স্ক্রাব এলিসা পজিটিভ আসে। আক্রান্তদের মধ্যে ৪০থেকে ৫০ শতাংশ শিশুর শরীরের নীচের অংশের
ত্বকে দাগ হয়ে যায়। দ্রুত চিকিৎসা শুরু না হলে জটিলতা আসে। অ্যানিমিয়া, পেট ফুলে যাওয়া, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঠিকমতো কাজ না করার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
সাধারণত যেসব জায়গায় ইঁদুর ঘুরে বেড়ায়, সেখানে শিশুরা খালি পায়ে চলাফেরা করলে স্ক্রাব টাইফাসের আশঙ্কা থাকে। ইঁদুরের শরীরে এক বিশেষ রকমের পোকা থেকে ওই রোগ ছড়ায়। তাই খোলা জায়গায় ঘোরাফেরার সময় শিশুর পায়ে জুতো জরুরি। তাছাড়া নিজেদের চারপাশের এলাকা নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। ডেঙ্গু মোকবিলার মতোই স্ক্রাব টাইফাস মোকাবিলায় সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে।
বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রবীর ভৌমিক বলেন, আমাদের হাসপাতালে পরপর বেশ কয়েকজন শিশু স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। এধরনের রোগে গোড়াতেই চিকিৎসা শুরু হলে ভালো। তা না হলে শিশুর শরীরে অনেক জটিল সমস্যা চলে আসে। আক্রান্ত শিশুর শরীরে বিরাট ধকল বয়ে যায়। পরিস্থিতি অনুযায়ী আইসিইউতে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করাতে হয়। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এনিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। খেলার মাঠে শিশুর পায়ে জুতো থাকা চাই। সেইসঙ্গে ফুল হাতা জামা ও ফুল প্যান্ট থাকলে ভালো। অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে।
No comments