Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

স্মরনে উড়োজাহাজ আবিষ্কারক উইলবার রাইট

স্মরনে উড়োজাহাজ আবিষ্কারক উইলবার রাইটউড়োজাহাজের অন্যতম উদ্ভাবক উইলবার রাইট ১৮৬৭ সালের ১৬ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানার মিলভিলে জন্মগ্রহণ করেন।উইলবার রাইট একজন মার্কিন প্রকৌশলী। তিনি সবার কাছে পরিচিত উড়োজাহাজ তৈরির জনক হিসেবে। …

 




স্মরনে উড়োজাহাজ আবিষ্কারক উইলবার রাইট

উড়োজাহাজের অন্যতম উদ্ভাবক উইলবার রাইট ১৮৬৭ সালের ১৬ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানার মিলভিলে জন্মগ্রহণ করেন।

উইলবার রাইট একজন মার্কিন প্রকৌশলী। তিনি সবার কাছে পরিচিত উড়োজাহাজ তৈরির জনক হিসেবে। উইলবার রাইটের সহযোগিতা করেন তার ভাই অরভিল রাইট। মানুষের পাখি হয়ে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন তারা দুজন।

ভাই অরভিল রাইটের সঙ্গে মিলে তিনি ১৯০৩ সালে ১৭ ডিসেম্বর প্রথম নিয়ন্ত্রিত, শক্তিসম্পন্ন, বাতাসের চেয়ে ভারী, সুস্থিত মানুষ-বহনযোগ্য উড়োজাহাজ তৈরি করেন। পরবর্তী দু’বছর তারা এ যন্ত্রটিকে অনড়-পাখাবিশিষ্ট উড়োজাহাজে রূপান্তরিত করেন। তাদের আবিষ্কৃত উড়োজাহজ নিয়ন্ত্রকের সাহায্যেই প্রথম অনড়-পাখাবিশিষ্ট উড়োজাহাজ নির্মাণ সম্ভবপর হয়।

উইলবার রাইটের পিতা মিল্টন রাইট ছিলেন যাজক। ভাই অরভিলের মতো উইলবারও ছিলেন অবিবাহিত। হাই স্কুলে পড়লেও কোনো ডিপ্লোমা নেওয়া সম্ভব হয়নি উইলবারের। আইস স্ক্যাটিং খেলতে গিয়ে মারাত্মক আহত হয়ে তিনি তার সামনের দুটো দাঁত হারিয়েছিলেন।

যে উড়োজাহাজ আবিষ্কারের জন্য দুই ভাইয়ের খ্যাতি, প্রকৃতপক্ষে তার চিন্তাভাবনা শুরু হয় ১৮৯৬ সাল থেকে। একজন জার্মান ইঞ্জিনিয়ার অটো লিলিয়েনথাল কয়েক বছর ধরে উড়ন্ত যান নিয়ে গবেষণা করেন। তার তৈরি যান আকাশে উড়লেও তাতে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়।

১৮৯৬ সালে লিলিয়েনথালের আকস্মিক মৃত্যুতে গবেষণার কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে লিলিয়েনথালের তৈরি উড়ন্ত যানের নকশা ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রাইট ভ্রাতৃদ্বয় দেখলেন একদিকে যেমন তা অসম্পূর্ণ এবং ভুলক্রটিতে ভরা। প্রতিটি নকশার বিবরণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করে তারা বুঝতে পারলেন শুধু বাতাসের গতিবেগে একে বেশিদূর চালনা করা যাবে না, প্রয়োজন শক্তিচালিত ইঞ্জিনের যা একমাত্র পারবে উড়ন্ত যানকে গতি দিতে কিন্তু কেমন হবে সেই ইঞ্জিন, তার প্রকৃতি কিছুতেই নির্ধারণ করতে পারেন না দুই ভাই।

চলছে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা। প্রতিবারেই সব প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পরিণত হয়। এক এক সময় হতাশায় ভেঙে পড়েন দুজনে। আবার নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যে কোনো মূল্যেই হোক সাফল্য তাদের অর্জন করতেই হবে। কিছুদিন পর তারা বুঝতে পারলেন এভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রকৃত সাফল্য অর্জন করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন আরও জ্ঞানার্জন ও অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা। আর পরিপূর্ণ জ্ঞান না হলে সম্পূর্ণ সাফল্য অর্জন অসম্ভব। শুরু হলো ব্যাপক অধ্যয়ন আর অধ্যবসায়। দুই ভাইয়ের মনের মধ্যে জেগে উঠেছিল স্বপ্ন, এমন যন্ত্র তৈরি করতে হবে যাতে মানুষ শূন্য আকাশে ভেসে যাবে। আর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে দুই ভাই ছোট একটি কারখানা তৈরি করলেন। দীর্ঘ এক বছরের সাধনায় তৈরি হলো এক বিশাল গ্লাইডার বা উড়ন্ত যান। এতদিন যে ধরনের গ্লাইডার তৈরি হতো এটি তার চেয়ে একেবারে স্বতন্ত্র।

এই গ্লাইডার বাতাসে ভারসাম্য রেখে সহজেই উড়তে সক্ষম হবে। গ্লাইডারের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে দুই ভাই তৈরি করলেন দুই পাখাবিশিষ্ট ছোট বিমান। এ বিমানের সামনে ও পেছনের ভারসাম্য রক্ষার জন্য একটি ছোট যন্ত্র সংযোজন করা হলো। এর নাম এলিভেটর। মূলত এই এলিভেটরের সাহায্যে পাইলট কোনো বিমানকে নিয়ন্ত্রিত করতে পারবে। তারা আবার শুরু করলেন তাদের কর্মতৎপরতা। এবার তাদের মূল লক্ষ্য কীভাবে গ্লাইডারকে শক্তিচালিত করা যায়। বিভিন্ন ইঞ্জিন দিয়ে পরীক্ষা করার পর দেখা যায় একমাত্র পেট্রোলচালিত ছোট ইঞ্জিনই বিমান চালানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে।

প্রতি তিন পাউন্ড ওজনের জন্য এক অশ্বশক্তিসম্পন্ন ইঞ্জিন প্রয়োজন। এজন্য অরভিল এবং উইলবার রাইট ইঞ্জিন তৈরির কাজে হাত দিলেন। কয়েক মাসের চেষ্টায় তৈরি হলো বিমানে ব্যবহারের উপযুক্ত ইঞ্জিন। প্রত্যাশিত সেই দিনটি এলো, ১৭ ডিসেম্বর ১৯০৩ সাল। তারপর সব শক্তি দিয়ে উড়ন্ত যানকে ঠেলতে শুরু করলেন। অবাক হয়ে গেল তাদের ঘিরে থাকা লোকজন।

তাদের অবাক দৃষ্টির সামনে দিয়েই সামান্য দূর গিয়েই বাতাসের বুক চিরে শূন্যে উড়ে চলল প্রথম বিমান। কিছুদূর গিয়ে একবার পাক খেল। তারপর ধীরে ধীরে মাটিতে নেমে এলো। প্রায় ১২ সেকেন্ড আকাশে ভেসেছিল রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের প্রথম অ্যারোপ্লেন। তবে মানুষবাহী পূর্ণাঙ্গ প্লেন তৈরি করেছিলেন ১৯১০-১১ সালের দিকে। সেই বিমানে একটি পরিবার আকাশে উড়েছিল। এই বিমান যাত্রাই নতুন যুগের সূচনা করেছিল।

১৯১২ সালের ৩০ মে ওহাইয়োর ডেটনে পরলোকগমন করেন তিনি।

ঋণ - অর্থ সূচক


No comments