Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

জন্মদিন পিটার দ্য গ্রেট

জন্মদিন পিটার দ্য গ্রেট ১৬৭২ সালে মস্কোয় জন্মগ্রহণ করেন পিটার দ্য গ্রেট৷ বাবা ছিলেন জার আলেক্সিস এবং মা ছিলেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী নাতালিয়া নারিশকিনা৷ তাদের একমাত্র সন্তান পিটার৷ তার চার বছর বয়সের সময় বাবা মারা যান৷ আগের স্ত্রীর তে…

 




জন্মদিন পিটার দ্য গ্রেট 

১৬৭২ সালে মস্কোয় জন্মগ্রহণ করেন পিটার দ্য গ্রেট৷ বাবা ছিলেন জার আলেক্সিস এবং মা ছিলেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী নাতালিয়া নারিশকিনা৷ তাদের একমাত্র সন্তান পিটার৷ তার চার বছর বয়সের সময় বাবা মারা যান৷ আগের স্ত্রীর তেরো সন্তান ছিল আলেক্সিসের৷ ফলে ক্ষমতায় বসা নিয়ে তাদের মধ্যে চরম সমস্যার সৃষ্টি হয়৷ এ সময় প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে থাকতে হয় পিটারকে৷ সেই সময় দেশের অন্তরবর্তীকালীন শাসক ছিলেন তার সত্‍ বোন সোফিয়া৷ জন্মদিন

পিটার দ্য গ্রেট (১৬৭২-১৭২৫)

১৬৮৯ সালে সোফিয়া খমতাচ্যুত হলে পিটারের ক্ষমতায় বসার পথ পরিষ্কার হয়ে যায়৷

রাশিয়ান জারদের মধ্যে পিটার দ্য গ্রেটকে সবচেয়ে বিশিষ্ট মনে করা হয়৷ তার পশ্চিমাকরণের নীতির ফলেই রাশিয়া একসময় বৃহত্‍ শক্তিতে পরিণত হয়৷

রাশিয়া সেই সময় সবকিছুতে পশ্চিমাদের চেয়ে কয়েক শতাব্দী পিছিয়ে ছিল৷ শহর ছিল খুব অল্প৷ কৃষকরা ছিল ক্রীতদাসের মতো, আইনের অধিকার বলে কিছুই ছিল না মানুষের৷ ধর্ম বলেও প্রায় কিছুই ছিল না দেশে, শিক্ষা দীক্ষার অবস্থাও তাই৷ পশ্চিমে নিউটন যখন তার প্রিন্সিপিয়া লেখেন, সেই সময়ও মধ্যযুগীয় অজ্ঞানতার অন্ধকারে ডুবেছিল রাশিয়া৷

১৬৯৭-৯৮ খ্রিস্টাব্দে পিটার দীর্ঘ সফরে পশ্চিম ইউরোপ যান৷ তার সঙ্গে ছিল ‘গ্র্যান্ড অ্যাম্বাসির আড়াইশ সদস্য৷ সেই সফরের সময় হল্যান্ডের ডাচ-ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জাহাজে কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন, ইংল্যান্ডের নেভি ডকইয়ার্ডেও কাজ করেন পিটার৷ প্রম্নশিয়ায় গানারির ওপর পড়াশোনা করেন৷ ফ্যাক্টরি, স্কুল, জাদুঘর পরিদর্শন করেন, এমনকি ইংল্যান্ডের এক পার্লামেন্ট অধিবেশনেও যোগ দেন৷ এ সময় পশ্চিমা সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, কলকারখানা ও প্রশাসনিক নিয়ম-কানুন দেখে প্রভাবিত হন পিটার৷

১৬৯৮ খ্রিস্টাব্দে দেশে ফিরে আসেন তিনি এবং দেশকে পশ্চিমের ধাঁচে আধুনিক করে গড়ে তোলার দীর্ঘ কার্যক্রমে হাত দেন৷ ফল হয় অবিশ্বাস্য৷ প্রায় প্রতিটি ৰেত্রে উন্নতি ঘটতে থাকে রাশিয়ার৷ তিনিই প্রথম জুলিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেন সে দেশে এবং রাশিয়ার প্রথম সংবাদপত্র তার সময়ই প্রকাশিত হয়৷

পিটারের সময় তুরস্ক ও সুইডেনের সঙ্গে যুদ্ধ বাধে রাশিয়ার৷ ১৭০৯ সালে পলটাভায় সুইডিশরা পরাজিত হয়, ফলে এসত্মোনিয়া, লাটভিয়াসহ ফিনল্যান্ডের কাছের বড় এক অংশ রাশিয়ার দখলে চলে যায়৷ শেষের অংশটিতে বড় এক নদী নেভার তীরে, নতুন শহর গড়ে তোলেন পিটার, যেটির নাম বর্তমানে সেইন্ট পিটার্সবার্গ৷ রাশিয়ার নতুন রাজধানী হয় শহরটা৷

১৭১২ খ্রিস্টাব্দে অবশ্য রাজধানী আবার মস্কোতে স্থানানত্মরিত হয়৷ পিটারের প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল৷ ফলে অনেক বেশি করের বোঝা বইতে হয় দেশবাসীকে৷ এর বিরুদ্ধে অসন্তোষ ও বেশকিছু বিদ্রোহের ঘটনাও ঘটে৷ সেসব কঠোর হাতে দমন করেন পিটার৷ তার আমলে তার অনেকে বিরুদ্ধে থাকলেও বর্তমানে রাশিয়া ও পশ্চিমা ঐতিহাসিকদের সবাই

একবাক্যে স্বীকার করেন যে,

জারদের মধ্যে পিটারই ছিলেন সবার সেরা৷

৬ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার প্রকান্ড-দেহী মানুষ ছিলেন পিটার৷ শক্তিশালী, সুদর্শন ছিলেন৷ রাজনৈতিক ও সামরিক বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা ছাড়াও কার্পেন্ট্রি, পেইন্টিং, নেভিগেশন, জাহাজ নির্মাণ প্রভৃতি সম্পর্কে ভালো পড়াশোনা ছিল তার৷

দুই বিয়ে করেন পিটার৷ সতেরো বছর বয়সে প্রথম বিয়ে করেন ইউডোক্সিয়া নামের এক তরম্নণীকে৷ মাত্র এক সপ্তাহ একসঙ্গে ছিলেন তারা৷ ১৭১২ সালে ইউডোক্সিয়ার সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে যায়৷ এরপর ক্যাথেরিন নামে এক লিথুয়ানিয়ান মেয়েকে বিয়ে করেন৷ ইউডোক্সিয়ার গর্ভে তার এক ছেলের জন্ম হয়৷ তার নাম আলেক্সিস৷ কিন্তু বাপ-ছেলের সম্পর্ক ভালো ছিল না৷ ১৭১৮ সালে আলেক্সিস ও পিটারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়৷ পরে নির্যাতনের ফলে কারাগারে তার মৃত্যু ঘটে৷

১৭২৫ খ্রিস্টাব্দে ৫২ বছর বয়সে সেইন্ট পিটার্সবার্গে মারা যান পিটার দ্য গ্রেট৷ তার স্থলাভিষিক্ত হন দ্বিতীয় স্ত্রী ক্যাথেরিন৷

পিটার এমন এক শাসক ছিলেন, যিনি জ্ঞানে-বুদ্ধিতে তার সময়ের চেয়ে অনেক আধুনিক মনের, অনেক অগ্রগামী ছিলেন৷ তার সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই পশ্চিমাদের মতো রাশিয়ানদের দ্রুত উন্নতি সাধন সম্ভব হয়৷

No comments