Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

১০২ নট আউট! এখনো কাজের মধ‍্যে টিকে রয়েছেন হলদিয়ার প্রবীণ বৃদ্ধ পরেশচন্দ্র বেতাল

১০২ নট আউট! এখনো কাজের মধ‍্যে টিকে রয়েছেন হলদিয়ার প্রবীণ বৃদ্ধ পরেশচন্দ্র বেতাল
বয়সটা শুধুমাত্র সংখ্যা মাত্র,দেখলে কে বলবে বয়স একশো পেরিয়ে গেছে,সারাদিনের কাজের বহর দেখলে মনে হবে তিনি এখনো যেন প্রানবন্ত যুবক,বৃদ্ধের কোন ছাপ নেই।​​হ…

 




১০২ নট আউট! এখনো কাজের মধ‍্যে টিকে রয়েছেন হলদিয়ার প্রবীণ বৃদ্ধ পরেশচন্দ্র বেতাল


বয়সটা শুধুমাত্র সংখ্যা মাত্র,দেখলে কে বলবে বয়স একশো পেরিয়ে গেছে,সারাদিনের কাজের বহর দেখলে মনে হবে তিনি এখনো যেন প্রানবন্ত যুবক,বৃদ্ধের কোন ছাপ নেই।

​​হলদিয়া শিল্পশহর লাগোয়া দেভোগ গ্ৰাম পঞ্চায়েতের কিসমত শিবরামনগর গ্ৰামের বাসিন্দা পরেশচন্দ্র বেতাল।জন্ম ১৩২৭ বঙ্গাব্দের জৈষ্ঠ্য মাসে।বাব ক্ষুদিরাম বেতাল,শিক্ষকতা করতেন।মা গিরিবালা বেতাল।চার বোন,এক ভাই।পরেশবাবু ছিলেন বাড়ির বড় ছেলে।বাবা,মা মারা যাওয়ার পর থেকেই সংসারের হাল ধরতে হয়।পড়াশোনা খুব বেশি করা হয়নি।ছোট থেকেই কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে।চার বোন সকলেই প্রয়াত,কিন্তু তিনি আজও লড়াই করে চলেছেন।

পরেশচন্দ্র বাবুর দুই ছেলে দুই মেয়ে।কয়েকবছর আগে এক ছেলে পথ দূর্ঘটনায় মারা যায়।বর্তমানে এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।নাতি-নাতনি মিলিয়ে পরিবারে সদস‍্য সংখ্যা সাত থেকে আট জন।পরেশবাবুর রয়েছে।পরেশবাবু কোন বাধা-ধরা কাজ করেন না।ধান,সবজি চাষ থেকে পান বোরজের কাজ কমবেশী সব ধরনের কাজ করেন।এক সময় পাড়া গাঁয়ের ঘর ছাওয়া থেকে মাটি কাটার কাজ করেছেন।

এখন বয়স হয়েছে তাই ভারী কাজ আর করতে পারেন না।বাড়ির লোকের হাজার বাধা উপেক্ষা করেও তিনি কখনো ঘাস কাটছেন তো কখনো আবার জ্বালানী গোছাতে ব‍্যস্ত।

পরেশবাবু স্ত্রী রাধারাণী প্রায় চল্লিশ বছর আগে তাকে ছেড়ে চলে গেছেন।এক সময় স্ত্রীকে নিয়ে পুরী,গঙ্গাসাগর ঘুরে এসেছেন।এখনো সেইসব দিনের কথা বড্ড মনে করেন।গ্ৰামের কোনো পুজো হলেই তিনি ব্রতী থাকতেন।বেশ কয়েক বছর আর পারছেন না।

রোজ ভোর ভোর ঘুম থেকে উঠে আগে ঠাকুর নাম করে মুখ ধুয়ে প্রথম রেডিও তে খবর শোনেন।এরপর নিজেই পান ভেঙে খেয়ে চেবাতে চেবাতে কাজে লেগে পড়েন।এই গরমের সময় সকালে কম রোদ্দুরে কাজ করে ফেলেন।বেলা গড়ালে রোদ্দুর বাড়ে,আর কাজ করতে পারেন না।তিনি বলেন "কাজ না করে বসে থাকতে পারি না"

দুপুরে একাই পুকুরে নেমে স্নান করেন,কোমর পড়ে গেছে,তবুও নুইয়ে নুইয়ে হেঁটে চলেছেন তিনি।হাতে তুলে খেতে পারেন না।চামচের সাহায‍্যে খেতে হয়।মাচ,মাংশ কে দূরে সরিয়ে সবজি খেতে বেশি পছন্দ করেন।খেয়ে একটু জিরিয়ে ফের বিকেল হতেই পাড়ায় ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন।সারাবছর বাগানে সবজি চাষের পাশাপাশি বছরে দুইবার আমন ও বোরো ধানের চাষ হয়।তিনি নিজে মাঠে উপস্থিত থেকে ধানের কাজ করেন।গতবছর বৃষ্টির জন‍্য চাষ ভালো হয়নি।জৈষ্ঠ্য মাস পড়ে গেছে,চলতি বছর কীভাবে ধান চাষ হবে।তার জন‍্য চিন্তা করছেন তিনি।বয়সের জন‍্য খুব বেশি মাঠে কাজ করতে পারেন না।তবে হেরে যাওয়ার লোক নন তিনি।বয়স শতাধিক পেরিয়ে গেলেও অসুখ বিসুখ তেমন নেই।মাস কয়েক আগে একবার মাত্র বদহজমের জন‍্য হাসপাতালে ছুটতে হয়েছে।সন্ধ্যা নামলেই ঘরে এসে রেডিও শোনেন।তিনি বাড়ি,বাগান,বোরজ এগুলো নিয়েই থাকেন।

স্বাধীনতা আন্দলনের সময় সুতাহাটায় থানা ঘেরাও থেকে নুন মারায় তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন।১৩৪৯ সালে বন‍্যা দেখেছেন,ব‍্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছিল।হলদিয়া শিল্পাঞ্চল তৈরির সময় বেশ কয়েকটা জমি হারিয়েছেন।বাড়ির কোউ পাকাপোক্ত কোনও কাজ করেন না।অভাবের তাড়নায় মাঝে-মধ‍্যেই জমি বিক্রয় করতে হয় এখন।কিন্তু তিনি মন খারাপ করেন।একসময় সবকিছু কঠোর পরিশ্রম করে গড়েছেন,তাই এখন হাতছাড়া করতে চান না।

বড্ড রাজনীতি ভালোবাসেন।প্রত‍্যেক বছর ভোটও দেন।কিন্তু কখনো রাজনৈতিক দলের হয়ে নেতৃত্ব দিতে চাননি।শুরুতে জাতীয় কংগ্রেস করতেন।এখন তৃনমূল দলকে পছন্দ করেন।বৃদ্ধের কথায় "আগে কংগ্রেস করলেও এখন ভোট আমি তৃনমূল কেই দেই প্রত‍্যেকবার" কিন্তু সরকারি সুযোগ-সুবিধা আমি কিংবা আমার পরিবার খুব বেশি পাইনি।

বর্তমানে সরকারি বাধ‍্যর্ক‍্য ভাতা এলাকার সবাই পাচ্ছেন,কিন্তু তিনি বঞ্চিত।

কিন্তু আপনি কেন বঞ্চিত.? প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন একে তো ব‍্যাঙ্কে পাশবই খুলতে পারছি না।অন‍্যদিকে হাতের আঙ্গুলের ছাপও মিলছে না। সরকার যদি আমাকে অন‍্য কোনও ভাবে মাসে হাজার টাকা দেন তবে খুব ভালো হয়।

No comments