Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

২৫ নম্বর ওয়ার্ডে চৈতী ব্লকের মনসা পূজা উদ্বোধনে বিশিষ্ট সমাজসেবী -প্রণব দাস

২৫ নম্বর ওয়ার্ডে চৈতী ব্লকের মনসা পূজা উদ্বোধনে বিশিষ্ট সমাজসেবী -প্রণব দাস
মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত মনসা পূজা শুভ উদ্বোধন হল হলদিয়া পৌরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে চৈতী ব্লকের অধিবাসীদের পক্ষ থেকে ।উদ্বোধক প্রণব দাস বলেন আজ  ৩১ শে বৈ…

 


২৫ নম্বর ওয়ার্ডে চৈতী ব্লকের মনসা পূজা উদ্বোধনে বিশিষ্ট সমাজসেবী -প্রণব দাস


মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত মনসা পূজা শুভ উদ্বোধন হল হলদিয়া পৌরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে চৈতী ব্লকের অধিবাসীদের পক্ষ থেকে ।

উদ্বোধক প্রণব দাস বলেন আজ  ৩১ শে বৈশাখ , ১৪ মে সন্ধ‍্যা ৭  প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে এবং ফিতে কেটে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সূচনা হয় ।

আগামী চার দিন ধরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে ।

দেবী মা মনসার পূজো যুগ যুগ ধরে চলে এসেছে ।

মা মনসাকে বিষহরি দেবী হিসাবে মাহাত্ম্য প্রচার উপলক্ষে রচিত হয়েছিল অসংখ্য মনসামঙ্গল কাব্য পদ্মা পুরাণ ।

চৈতন্য পূর্ব যুগেই অন্তত তিন-চারজন মনসামঙ্গল কাব্য রচয়িতার আবির্ভাব ঘটেছিল ।

এই কাব্যের সমগ্র বঙ্গে তো ব্যাপ্তি ছিল এমনকি বহির্বঙ্গে আসামে এবং বিহারী ব‍্যাপ্তি ছিল ।

দেবী মনসা সর্প দেবতা ।

হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত জল জঙ্গলময় এই অঞ্চলে সর্পের প্রাচুর্য হেতু তার হাত থেকে পরিত্রাণের নিমিত্ত মনসা বা বিষহরির শরন অতিশয় স্বাভাবিক বলেই অন্যান্য মঙ্গলকাব্য অপেক্ষা এই মনসামঙ্গলের প্রচার ও প্রসার ছিল অনেক বেশি ।

দক্ষিণ ভারত থেকে আগত সেন বংশের রাজাদের সঙ্গে সঙ্গেই মনসা পূজা ও বাংলায় এসেছিল এমন অনুমান অসঙ্গত নয় ।

বিজয় সেন নামাঙ্কিত মনসা মূর্তি বাংলার প্রাচীনতম নিদর্শন এ থেকে ও অনুমানটি সমর্থিত হয় ।

প্রচলিত মনসামঙ্গল কাহিনীর তিনটি অংশ। প্রথম অংশটি পৌরাণিক কাহিনী; এতে শিবের সঙ্গে মনসার সম্পর্ক বর্ণিত হয়েছে। দ্বিতীয় খণ্ডে চাঁদসদাগর ও দেবী মনসার সংঘর্ষের কাহিনীই প্রাধান্য লাভ করেছে। তৃতীয় অংশের প্রধান কাহিনীটি বেহুলা-লখিন্দরকে ঘিরে গড়ে উঠেছে। মনসাকে শিবকন্যারূপে প্রতিষ্ঠিত করা হয়ে থাকে। কিন্তু সৎমা চণ্ডীর সঙ্গে তাঁর কলহ। মর্ত্যলােকে তার পূজা প্রচারের আকাঙ্ক্ষা এমন উগ্রতা লাভ করে যে, তার পক্ষে কিছুই অকরণীয় ছিল না। তার ক্রুরতা ও নিষ্ঠুরতা সীমাতীত। চাঁদসদাগরের পূজালাভের জন্য মনসা যথেষ্ট চেষ্টা করেও যখন কৃতকার্য হলেন না, তখন প্রতিহিংসাবশে তিনি চাদের বাগানবাড়ি ধ্বংস করলেন, তার মহাজ্ঞান মন্ত্র অপহরণ করলেন, সপ্তডিঙ্গা মধুকরকে ডুবিয়ে দিলেন এবং চাদের সাত পুত্রকে সর্পদংশনে হত্যা করলেন। চাঁদ তবু ছিল অচল- প্রতিষ্ঠ। শেষ পর্যন্ত কনিষ্ঠপুত্ৰ লখিন্দরও বিবাহরাত্রে লৌহবাসর ঘরে সর্পদংশনে মারা যায়। লখিন্দরের মৃতদেহ নিয়ে পুত্রবধূ বেহুলা ইন্দ্রসভায় উপস্থিত হয়ে নৃত্যগীতে দেবতাদের তুষ্ট করে স্বামীর প্রাণ ফিরিয়ে আনলেন। কিন্তু তাকে প্রতিশ্রুতি দিতে হলাে—সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে চাঁদসদাগর শেষ পর্যন্ত মনসার পূজা করলেন এবং মনসার বরে সকল পুত্রের প্রাণ, সপ্তডিঙ্গা মধুকর-আদি যাবতীয় ঐশ্বর্যই ফিরে পেলেন।


সমগ্র মধ্যযুগের কাব্যসাহিত্যে চাঁদের মতাে দৃপ্ত পৌরুষময় চরিত্র আর একটিও নেই। কাহিনীর প্রয়ােজনেই তাকে শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করতে হয়েছিল। যে যুগে এই কাহিনী কল্পিত হয়েছিল সম্ভবতঃ তখন বঙ্গদেশের বাণিজ্যতরী বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন দ্বীপে ব্যবসা-বাণিজ্য চালাতাে। ফলতঃ সমাজে বণিক সম্প্রদায়েরই ছিল প্রবল প্রাধান্য। তাই মনসা বণিকদের মধ্যেই আত্মপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে ছলে-বলে-কৌশলে যেভাবেই হােক কিছুটা স্থান করে নিতে পেরেছিলেন। কোন এক অনার্য দেবীর আর্যসমাজে প্রতিষ্ঠা লাভের কাহিনীর প্রয়ােজনেই যে মনসামঙ্গল কাহিনী গড়ে উঠেছিল, এ সত্য বিনা দ্বিধায় স্বীকার করা চলে।

No comments