হোটেল সম্প্রসারণের জন্য বস্তি দখলের চেষ্টা, বিদ্যুৎ, পানীয়জল বন্ধ করে বস্তিবাসীকে হেনস্থার অভিযোগপ্রদীপ কুমার মাইতি;;মুদ্রের সৈকতে একেবারে গায়েই হোটেল। কিন্তু সামনের বস্তির জন্য লোকসানে চলছে কারবার। তাই হোটেল সম্প্রসারণের কাজ শু…
হোটেল সম্প্রসারণের জন্য বস্তি দখলের চেষ্টা, বিদ্যুৎ, পানীয়জল বন্ধ করে বস্তিবাসীকে হেনস্থার অভিযোগ
প্রদীপ কুমার মাইতি;;মুদ্রের সৈকতে একেবারে গায়েই হোটেল। কিন্তু সামনের বস্তির জন্য লোকসানে চলছে কারবার। তাই হোটেল সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছেন হোটেল মালিক। আর তার জন্য সামনের বস্তির ওপর নজর পড়েছে তার। বস্তির মালিকানা দাবি করে বস্তির দখল নিতে চাইছেন তিনি। কিন্তু স্থানীয় প্রতিরোধের কারণে এখনও পর্যন্ত সম্ভব হয়ে ওঠেনি বস্তি দখল। তবে তার জন্য চেষ্টা থেমে নেই হোটেল মালিকের।নানা ভাবে বস্তিবাসীকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে, পানীয় জল সরবারহ বন্ধ করে বস্তিবাসীর জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে অভিযুক্ত হোটেল মালিক। হোটেল মালিকের এমন অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন ওল্ড দিঘার সৈকত সরণী লাগোয়া পশ্চিম গদাধরপুর বস্তির বাসিন্দারা। বস্তি এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত হোটেল মালিক অরবিন্দ দে ও তার ছেলে ডেনিয়েল দে-কে ধরে নিয়ে এসে থানায় আটক করে দিঘা থানার পুলিশ। ৪০ টি পরিবারের ৩০০ মানুষের বসবাস পশ্চিম গদাধরপুর বস্তিতে। ৫০- ৬০ বছর কিংবা তারও বেশি সময় ধরে তাঁদের বসবাস সেখানে। স্থানীয় শেখ সিরাজুল, লক্ষ্মণ চরণ দাস, মালা দাস, হাসিনা বিবিরা বলেন, ' পুরুষের পর পুরুষ আমরা এখানে বসবাস করছি। এতদিন কিছু ছিল না। মাস দেড়েক ধরে নিজেকে বস্তির মালিক বলে দাবি করছেন ওই হোটেল মালিক। আমাদের বস্তি ছেড়ে দিতে বলা হচ্ছে। আমরা প্রতিরোধ করছি বলেই আমাদের নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।'ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে রামনগর ১ ব্লকের বিডিও বিষ্ণুপদ রায় স্পষ্টত জানিয়েছেন, হোটেল মালিকের এই দাদাগিরি কোনওভাবেই বরদাস্ত করবে না প্রশাসন। বস্তির মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্ত হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও।বস্তির অসহায় পরিবারগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন রামনগর ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি নিতাইচরণ সার। তিনি বলেন, ' বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া, পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা সমর্থনযোগ্য না। খুবই জঘন্যতম অপরাধ। বস্তির মানুষ পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন। আশা করি বস্তির অসহায় মানুষজন সুবিচার পাবেন।' এদিকে হোটেল সম্প্রসারণের জন্য উপকূল বিধি না মানারও অভিযোগ উঠেছে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, সমুদ্র থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে অবস্থানের জন্য বস্তি ও সংলগ্ন এলাকায় বহুতল নির্মাণ কিংবা হোটেল সম্প্রসারণের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে প্রশাসনের। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক মানসকুমার মণ্ডল, ' ওই জায়গায় কোনও ধরণের নির্মাণ মানা হবে না। হোটেল সম্প্রসারণের কাজ হয়ে থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' এদিকে বস্তি মালিকানার বৈধ কোনও কাগজপত্র ছাড়াই শুধুমাত্র জনৈক আইনজীবীর একটি আইনি নোটিসকে পুঁজি করে এদিনও হোটেল মালিক অরবিন্দ দে দাবি করেছেন, তিনিই বস্তির মালিক। টাকা দিয়ে বস্তি কিনে নিয়েছেন তিনি।
No comments