জনস্বাস্থ্য কারিগরী দপ্তর(পিএইচই) ও হলদিয়া ব্লক প্রশাসন! ৪০কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি বাড়ি নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছনোর উদ্যোগ জলস্বপ্ন প্রকল্পে ৪০কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি বাড়ি নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছনোর উদ্যো…
জনস্বাস্থ্য কারিগরী দপ্তর(পিএইচই) ও হলদিয়া ব্লক প্রশাসন! ৪০কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি বাড়ি নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছনোর উদ্যোগ
জলস্বপ্ন প্রকল্পে ৪০কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি বাড়ি নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছনোর উদ্যোগ নিয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দপ্তর(পিএইচই) ও হলদিয়া ব্লক প্রশাসন। ইতিমধ্যেই ১৪কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি দুটি জলপ্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। শীঘ্রই উদ্বোধন করে জল সরবরাহ শুরু হবে। আরও দুটি প্রকল্পের ডিটেইল প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করে টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়াও আরও কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। শিল্পাঞ্চল লাগোয়া হলদিয়া ব্লকের গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছতে জলস্বপ্ন প্রকল্পকে হাতিয়ার করছে ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতি। ওই এলাকাগুলির বাসিন্দাদের ভরসা আপাতত সাবমার্সিবল পাম্প। এর মাধ্যমে ছোট ছোট স্কীম করে নলবাহিত জল দিচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রথম দফায় ৪০কোটি টাকার প্রকল্প রূপায়িত হলে চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০হাজারের বেশি পরিবার উপকৃত হবে।
হলদিয়া ব্লকে প্রথম দফায় তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বাড়বাসুদেবপুর, দ্বারিবেড়িয়া, বাড়সুন্দরা ও দক্ষিণচকে চারটি জলপ্রকল্প হচ্ছে। বাড়বাসুদেবপুরে সাড়ে ৫কোটি টাকা এবং দ্বারিবেড়িয়ায় ৮কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি দুটি প্রকল্প শীঘ্রই জল সরবরাহ শুরু করবে। বাড়সুন্দরায় জল সরবরাহের জন্য ওভারহেড ট্যাঙ্ক সহ ১০কোটি টাকার প্রকল্প হবে। সবচেয়ে বড় ১৬কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি হচ্ছে দক্ষিণচকের ব্রজলালচকে ব্লক অফিসের পাশে। ওই এলাকায় পিএইচইর জল সরবরাহের একটি পুরনো প্রকল্প ছিল। দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রকল্পটি অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ৪১নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে পিএইচইর জমিতেই চকদ্বীপা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার জন্য নতুন জলপ্রকল্প তৈরি হচ্ছে। ব্লকের সমস্ত অফিস, বড় বাজার ও ঘনবসতি থাকায় নতুন প্রকল্পটি বড় আকারে করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্লক প্রশাসন।
হলদিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুব্রত হাজরা বলেন, গ্রামীণ এলাকা হলেও পুরসভা লাগোয়া হওয়ায় শহরের মতো বাড়ি বাড়ি নলবাহিত পানীয় জলের চাহিদা এক দশকে অনেক বেড়েছে। শহরের চেয়ে এখানে জমির দাম অপেক্ষাকৃত কম থাকায় এবং বাণিজ্যিক সুযোগ সুবিধে মেলায় এখানে বসবাস দিন দিন বাড়ছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এই ব্লকে ঘরবাড়ি করছেন। ফলে বাড়িতে নলবাহিত পানীয় জলের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়েছে। তিনি জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে গত চার পাঁচ বছরে চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জেলা পরিষদ, বিধায়ক তহবিল সহ বিভিন্ন স্কীমে প্রায় ৩০০টি সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় এই সাবমার্সিবল পরিচালনা করা হয় বেনিফিসিয়ারি কমিটি গড়ে। বাসিন্দারা বিদ্যুতের খরচ দিয়ে সাবমার্সিবল চালান। ব্লকে প্রায় ১৮হাজার পরিবার রয়েছে। বেশকিছু গ্রামে সাবমার্সিবলের মাধ্যমে প্রায় ৯৫শতাংশ বাড়িতে জল পৌঁছে গিয়েছে। জলস্বপ্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এই ঝক্কি থাকবে না। বিনা খরচে বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হবে।
ব্রজলালচক বাজারে দীর্ঘদিন ধরে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। হলদিয়া শহরে প্রবেশের মুখে বাজারটি ব্লকের সবচেয়ে ব্যস্ততম বাণিজ্যকেন্দ্র। একইসঙ্গে অনেকগুলি ব্যাঙ্ক, অফিস রয়েছে। ব্যবসা ও চাকরিসূত্রে বহু মানুষ এখানে বসবাস করেন। বাসিন্দা ও দোকানদারদের অভিযোগ, বাজার এলাকায় চারটি নলকূপ থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। পানীয়জল পেতে বা বাড়িতে ব্যবহারের জল পেতে কালঘাম ছুটে যায়। বাসস্ট্যান্ডগুলিতে পানীয় জলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি উঠেছে। কারণ পাশেই মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিস থাকায় বহু মানুষ ব্রজলালচকে বাসে ওঠানামা করেন। পঞ্চায়েত সমিতি এক কর্মাধ্যক্ষ বলেন, ব্রজলালচক মোড়ের সম্প্রসারণ নিয়ে টানাপোড়েনের জন্য এখানে জাতীয় সড়কের পাশে কোনও উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া যাচ্ছে না। তবে স্থানীয় দোকানদাররা এবিষয়ে ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতি সদিচ্ছাকেই দায়ী করেছেন।
No comments