Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

মা অধরেশ্বরী অথবা দন্তুরা চামুণ্ডা, কেতুগ্রামের অট্টহাস শক্তিপীঠ-তমাল দাশগুপ্ত

মা অধরেশ্বরী অথবা দন্তুরা চামুণ্ডা, কেতুগ্রামের অট্টহাস শক্তিপীঠ-তমাল দাশগুপ্ত  অষ্ট চামুণ্ডা রূপের অন্যতম দন্তুরা চামুণ্ডা পূজিত হতেন বর্ধমানের কেতুগ্রাম থেকে চার কিলোমিটার দূরে ঈশানী নদীর তীরে দক্ষিণ ডিহি গ্রামে একটি প্রাচীন পী…

 




মা অধরেশ্বরী অথবা দন্তুরা চামুণ্ডা, কেতুগ্রামের অট্টহাস শক্তিপীঠ-তমাল দাশগুপ্ত  

অষ্ট চামুণ্ডা রূপের অন্যতম দন্তুরা চামুণ্ডা পূজিত হতেন বর্ধমানের কেতুগ্রাম থেকে চার কিলোমিটার দূরে ঈশানী নদীর তীরে দক্ষিণ ডিহি গ্রামে একটি প্রাচীন পীঠস্থানে, যাকে নগেন্দ্রনাথ বসু শক্তিপীঠ অট্টহাস বলে দাবি করেছেন, যদিও দীনেশ সরকারের মতে এটি অট্টহাস ক্ষেত্র নয়, অট্টহাস হল বীরভূমের লাভপুরে। ঐতিহাসিক বিতর্ক দূরে সরিয়ে রেখে বলা যায় যে এই স্থানে সতীর অধর প্রোথিত আছে এই বিশ্বাসে এখানে উপাস্য মাকে অধরেশ্বরী বলা হয়। 


বলা দরকার যে খণ্ড সমাধি বা সেকেন্ডারি ফ্র্যাগমেন্ট বেরিয়াল উপমহাদেশের হরপ্পা সভ্যতা থেকে পাণ্ডু রাজার ঢিবি পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়। এটিই পৌরাণিক যুগের কাহিনীতে সতীর দেহের বিভিন্ন অংশতে পরিণত। ইতিহাসের প্রেক্ষিতে বলা যায় কোনও সুপ্রাচীন মাতৃকার দেহের বিভিন্ন অংশ উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রোথিত হয়েছিল বহু আদিম কালে: এটিই খণ্ডসমাধি প্রথা। আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই, অনেক পরে এই সুপ্রাচীন মাতৃধর্মীয় তান্ত্রিক প্রথাকেই আত্মসাৎ করে বৌদ্ধ ধর্মের উদ্যোগে বুদ্ধের দেহাবশেষ বিভিন্ন স্থানে রক্ষিত হয়েছিল।


দক্ষিণডিহির পীঠস্থানে পূজিত দন্তুরা চামুণ্ডা মূর্তিটি পাশের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়, সম্ভবত মধ্যযুগে ইসলামিক আগ্রাসনের সময় মূর্তিটি বাঁচাতে পুকুরে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল।


অগ্নি পুরাণে অষ্ট চামুণ্ডা রূপের কথা জানা যায়। রুদ্র চর্চিকা (বর্ধমানে কঙ্কালেশ্বরী মূর্তিটি পালসেনযুগের রুদ্র চর্চিকা), রুদ্র চামুণ্ডা, মহালক্ষ্মী, সিদ্ধ চামুণ্ডা, সিদ্ধ যোগেশ্বরী, রূপবিদ্যা, ক্ষমা এবং দন্তুরা। দন্তুরা মূর্তি হাঁটু ভাঁজ করে squat ভঙ্গিতে বসে থাকেন। ছবি রইল।


দক্ষিণডিহি গ্রামের দন্তুরা চামুণ্ডা মূর্তিটি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ মিউজিয়ামে এনে রাখা হয়। বর্তমানে মন্দিরে পূজিত নবনির্মিত মায়ের মূর্তিটি অবশ্য চামুণ্ডা নয়, তবে দন্তুরামূর্তির একটি চিত্র এখনও মন্দিরে পূজিত হয়। এই মন্দিরের সংলগ্ন একটি রটন্তী কালী মন্দির আছে, এখানে ডাকাতের দ্বারা পূজিত মা কালী বিরাজ করতেন  এবং এখানে পঞ্চমুণ্ডি আসনও আছে।


কাটোয়া থেকে এখানে আসার সুবিধা। কেতুগ্রামের নিরোল বাস স্ট্যান্ড থেকে চার কিলোমিটার দূরে জঙ্গলে আবৃত নিরিবিলি একটি পীঠস্থানে মায়ের মন্দির, গ্রামের নাম দক্ষিণডিহি।


 


ছবিতে দেখছেন মন্দিরে পূজিত মা অধরেশ্বরী, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ মিউজিয়ামে মা দন্তুরা চামুণ্ডা এবং পালসেনযুগের গৌড়বঙ্গে প্রাপ্ত আরও দুটি দন্তুরা মূর্তি।


জয় জয় মা! মাতৃকা আবহমান, মাতৃকা চিরন্তন। তাঁর নামে জয়ধ্বনি করে আমরা আমাদের বাঙালি জন্ম সার্থক করি। জয় জয় মা!

No comments