Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

আসামের বৃহত্তম পেট্রকেম সংস্থার সঙ্গে কলকাতা-হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের মৌ-চুক্তি স্বাক্ষরিত হল

আসামের বৃহত্তম পেট্রকেম সংস্থার সঙ্গে কলকাতা-হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের মৌ-চুক্তি স্বাক্ষরিত হল বন্দর বাণিজ্যে গতি আনতে আজ , বুধবার ১৬  ফেব্রুয়ারি আসামের বৃহত্তম পেট্রকেম সংস্থার সঙ্গে কলকাতা-হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের মৌ-চুক্তি স্ব…

 




আসামের বৃহত্তম পেট্রকেম সংস্থার সঙ্গে কলকাতা-হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের মৌ-চুক্তি স্বাক্ষরিত হল

 বন্দর বাণিজ্যে গতি আনতে আজ , বুধবার ১৬  ফেব্রুয়ারি আসামের বৃহত্তম পেট্রকেম সংস্থার সঙ্গে কলকাতা-হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের মৌ-চুক্তি স্বাক্ষরিত হল। একই সঙ্গে হলদিয়া থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে নদীপথে নিয়মিত পণ্য চলাচল শুরু করতে এদিন নয়া প্রকল্পের সূচনা হয়। হলদিয়া এলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল, জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, জাহাজ মন্ত্রকের সচিব ও ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটির চেয়ারম্যান, কলকাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী পোর্ট চেয়ারম্যান বিনীত কুমার, হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান এ কে মেহেরা , উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া বন্দরে সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ইউনিয়নের সদস্য বৃন্দ। বন্দরের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া ও রাজ্যের বিভিন্ন শিল্প সংস্থার কর্তারাও। তাঁদের সঙ্গে রাজ্যের বন্দর বাণিজ্য নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সচিবদের মুখোমুখি আলোচনার হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষ মন্ত্রীদের পুষ্পস্তবক এবং উত্তরীয় দিয়ে বরণ করে নিলেন। তার সাথে সাথেই ভারতীয় মজদুর সংঘ কলকাতা হলদিয়া পোর্ট ইউনিয়নের সভাপতি  ধর্মরাজ সিং এবং সম্পাদক প্রদীপ কুমার বিজলী পুষ্পস্তবক দিলেন দুই মন্ত্রী কে।গানের তালে নৃত্য পরিবেশন করেন হলদিয়া হাজরামোড় নটরাজ ডান্স এন্ড কালচারাল একাডেমী।

হলদিয়া বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার(প্রশাসন) প্রভীনকুমার দাস বলেন, জাহাজমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আসামের ব্রহ্মপুত্র ক্র্যাকার এন্ড পলিমার লিমিটেডের(বিসিপিএল) সঙ্গে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পোর্ট ট্রাস্টের মৌ-চুক্তি হল। আজ হলদিয়া বন্দর থেকে একটি স্টিল বোঝাই বার্জ নদীপথ দিয়ে আসামের পান্ডু নদীবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়। জাহাজমন্ত্রী সোনেওয়াল ফ্ল্যাগঅফ করে ওই বার্জের যাত্রা সূচনা করেন । ওই বার্জে করে টাটা স্টিলের ১৮০০মেট্রিক টন ইস্পাত আসাম পাঠানো হচ্ছে। বন্দরের ১৩নম্বর বার্থ থেকে দুপুর ১টা নাগাদ এটি রওনা দেয়। হলদিয়া থেকে নদীপথে ইন্দো-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুট ধরে এই বার্জ নিয়মিত যাতায়াত করবে।  বন্দর সূত্রে খবর, হলদিয়া পেট্রকেমের মতো ব্রহ্মপুত্র ক্র্যাকার বা বিসিপিএল আসাম তথা উত্তর-পূর্ব ভারতের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রকেম সংস্থা। এর ৭০শতাংশ অংশীদার গেইল এবং ১০শতাংশ অংশীদার আসাম সরকার। এই সংস্থার কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্য হলদিয়া বন্দর মারফৎ আমদানি ও রপ্তানির জন্য চুক্তি হল। বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান অমলকুমার মেহেরা জানান, ব্রহ্মপুত্র ক্র্যাকার তাদের কাঁচামাল ন্যাপথা নিয়মিত সরবরাহের জন্য হলদিয়া বন্দরের উপর ভরসা করে। জাহাজে করে বিদেশ থেকে বছরে তারা প্রায় আড়াই লক্ষ টন ন্যাপথা আমদানি করবে। নদীপথে ও রেলপথে এই কার্গো পাঠানো হবে আসামের ডিব্রুগড়ের লেপটেকাটাতে। এছাড়া উৎপাদিত পণ্যও বিদেশে রপ্তানি হবে হলদিয়া বন্দর দিয়ে। জাহাজ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেন, বন্দরের পণ্য পরিবহণ বাড়াতে এবার উত্তর-পূর্ব ভারতের পণ্যের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন জাহাজ মন্ত্রক। সেজন্য জাহাজমন্ত্রী নিজে এবিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ সহ আসাম সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের শিল্পায়নের ক্ষেত্রে হলদিয়া বন্দরকে পাখির চোখ করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । এজন্য বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে নদীপথে পণ্য চলাচল নিয়মিত করতে নয়া প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। ওই প্রোটোকল রুট ধরেই অপেক্ষাকৃত কম খরচে উত্তরপূর্ব ভারতে পণ্য পৌঁছনো যাবে। বাড়তি পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে শিলিগুড়ি হয়ে সড়ক পথে যানজটের কারণে নদীপথকেই বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র  মোদী এক দেশ এক ভারত গড়ার লক্ষ্য নিয়েই নদী এবং সমুদ্র কে এক করে বিভিন্ন দেশের সাথে পণ্য পরিবহনে সাগর মালা প্রজেক্ট এর মধ্য দিয়ে করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

হলদিয়া বন্দর থেকে ১৮০০ মেট্রিক টন টাটা স্টিলের টি এম টি বার নিয়ে রওনা  দিল  এই দুটি বারজ ।   নামখানা , হেমনগর ( বাংলাদেশ জলসীমা ) হয়ে শেখ বেড়িয়া , চাঁদপুর( মেঘনা নদী হয়ে )  , চিলমারি হয়ে ( ভারতের জল সীমা )  ব্রহ্মপুত্র হয়ে অসমের পাণ্ডুতে প্রবেশ করবে । অসম থেকে কয়লা আনবে  বারজ দুটি । বন্দর সুত্রে খবর , জলপথে বাংলাদেশ জলসীমা ব্যাবহার করে নর্থ ইস্টের সাথে বানিজ্য আরও সহজ , দ্রুত ও লাভজনক হবে । সেই নিরিখেই এই জলপথের প্রথম এই  ধরনের পণ্য পরিবহনে গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে । আগামী দিনে হলদিয়া বন্দরের মাধ্যমেই নর্থ ইস্টের অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে  বলে মন্ত্রী জানান ।   এর সাথে এদিন ব্রহ্মপুত্র ক্রাকার ও পলিমার লিমিটেড  ও হলদিয়া বন্দরের মধ্যে একটি মৌ চুক্তি   সম্পাদিত হয়।

সূত্রের খবর, গত দু’দশক ধরে হলদিয়া থেকে নদীপথে বাংলাদেশে ফ্লাইঅ্যাশ রপ্তানি হচ্ছে। ওইদেশের সিমেন্ট শিল্প ও রাস্তাঘাট তৈরির জন্য এই ফ্লাইঅ্যাশ রপ্তানি হয় বজবজ ও কোঘাট থার্মাল প্ল্যান্ট থেকে। বছরে প্রায় ২৫লক্ষ টন ফ্ল্যাইঅ্যাশ বা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ছাই রপ্তানি হয়। নদীপথে ছাই ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানির জন্য হলদিয়া বন্দরের পাশে ৫০০কোটি টাকা ব্যয়ে একটি মাল্টিমোডাল হাব অর্থাৎ মাল্টিপারপাস জেটি তৈরি হয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, নদীপথে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, নেপাল ও উত্তরপূর্ব ভারতে পণ্য পাঠাতেও এই জেটি ব্যবহার শীঘ্রই শুরু হবে। বন্দর বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রোটোকল রুট বা হলদিয়া-বারানসী রুটে নদীপথে পণ্য পরিবহণের আগে নদী ড্রেজিং জরুরি। কিন্তু ড্রেজিং না হলে নিয়মিত কীভাবে আসাম অব্দি পণ্য চলাচল করবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

No comments