সুন্দরবনের ফুল চিংড়ি
সুন্দরবনের ফুল চিংড়িকে কেন্দ্র করে বিশেষ এক শ্রেণীর মানুষের মধ্যে আছে এক তীব্র উন্মাদনা। এই মানুষরা সাধারণতঃ জঙ্গল সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দা নন। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকার রায়মঙ্গল নদী থেকে বিদ্যা ও মাতল…
সুন্দরবনের ফুল চিংড়ি
সুন্দরবনের ফুল চিংড়িকে কেন্দ্র করে বিশেষ এক শ্রেণীর মানুষের মধ্যে আছে এক তীব্র উন্মাদনা। এই মানুষরা সাধারণতঃ জঙ্গল সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দা নন। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকার রায়মঙ্গল নদী থেকে বিদ্যা ও মাতলা নদী পর্যন্ত এঁরা বসিরহাট, সন্দেশখালি, মিনাখাঁ, ক্যানিং, বাসন্তীর বিভিন্ন গ্রামের মৎস্যজীবী।
অগ্রহায়ণ, পৌষ ও মাঘ মাসের মরাণীর সময় বড় নদীতে এই চিংড়ির প্রাধান্য দেখা যায়। .৬৫০ - ২ সেন্টিমিটার দীর্ঘ, সাদা শরীরে লেজ ও মুখের কাছে লাল এবং দীর্ঘ লাল শুঁড় সমন্বিত চিংড়ি বিশালাকার ঝাঁক বেঁধে বড় নদীতে বিচরণ করে। বিশেষ এক ধরণের অতি সুক্ষ বেঞ্চি জালে এদের ধরা হয়। এই সময় সুন্দরবনে হাজার হাজার যন্ত্র চালিত জেলে নৌকো এই চিংড়ি ধরার মহা যজ্ঞে সামিল হয়ে পড়েন।
প্রতিটি নৌকোয় তিনজন জেলে থাকেন। পঞ্চমী থেকে একাদশী তিথিতে জোয়ার শুরুর সময়
জাল পাতা হয় এবং ভাটা শুরুর মুহূর্তে জাল তুলে নেওয়া হয়। অর্থাৎ দিনে দু'বার ধরা হয় এই চিংড়ি। বছরের এই তিন মাসে মরাণীর মোট
৪৫ - ৫০ দিনে গড়ে ৩ কুইন্টাল চিংড়ি প্রতিদিন ধরা পড়ে প্রতিটি নৌকোয়। যার গড় মূল্য ৬০০০/৭০০০ টাকা। এই তিন মাসে তাঁরা নৌকো প্রতি প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করেন।
সারা সুন্দরবনে পাঁচ হাজারের বেশি এমন চিংড়ি শিকারী নৌকো আছে। দেখা যাচ্ছে কম পক্ষে এই তিন মাসে প্রায় ১৫০০ - ২০০০ টন বা তারও বেশি চিংড়িরূপি বায়োমাস সুন্দরবনের নদী থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে জীবিকার টানে।
No comments