কয়েকশো কোটি টাকা বিনিয়োগে তৈরি নতুন সালফিউরিক অ্যাসিড প্ল্যান্ট, দুয়ারে ন্যাচারাল গ্যাস পৌঁছতে আরএলএনজি প্রকল্প শীঘ্রই চালু করবে - পার্থ ঘোষ হলদিয়ায় কয়েকশো কোটি টাকা বিনিয়োগে তৈরি নতুন সালফিউরিক অ্যাসিড প্ল্যান্ট, দুয়ারে ন্…
কয়েকশো কোটি টাকা বিনিয়োগে তৈরি নতুন সালফিউরিক অ্যাসিড প্ল্যান্ট, দুয়ারে ন্যাচারাল গ্যাস পৌঁছতে আরএলএনজি প্রকল্প শীঘ্রই চালু করবে - পার্থ ঘোষ
হলদিয়ায় কয়েকশো কোটি টাকা বিনিয়োগে তৈরি নতুন সালফিউরিক অ্যাসিড প্ল্যান্ট, দুয়ারে ন্যাচারাল গ্যাস পৌঁছতে আরএলএনজি প্রকল্প শীঘ্রই চালু হবে বলে বুধবার প্রজাতন্ত্র দিবসে ঘোষণা করল আইওসি। একই সঙ্গে হাজার কোটি টাকার লুব অয়েল প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে বলে জানিয়েছে হলদিয়া আইওসি রিফাইনারি কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরে তিনটি প্রকল্পকে ঘিরে রীতিমত কর্মযজ্ঞ চলছে আইওসিতে। একের পর এক প্রকল্পগুলি চালু হলে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি হলদিয়া আইওসি রিফাইনারির হাত ধরে রাজ্য তথা পূর্ব ভারতের শিল্পক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। আইওসির তৈরি সালফিউরিক অ্যাসিড হলদিয়া থেকে বিদেশে রপ্তানি হবে। আরএলএনজি প্রকল্প চালু হলে আইওসির ‘ডোর স্টেপ এলএনজি’ অর্থাৎ দুয়ারে প্রাকৃতিক গ্যাস প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের পরিবহণ শিল্পের সুবিধে হবে। একই সঙ্গে কমমূল্যের এলএনজিকে আইওসি কারখানায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। অন্যদিকে, লুব বা ইঞ্জিন অয়েল প্রকল্প উৎপাদন শুরু করলে বছরে দেশের আমদানি খরচ ১৩৫০কোটি টাকা বেঁচে যাবে।
হলদিয়া আইওসির এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর পার্থ ঘোষ বলেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে আইওসি প্রতিদিন ৩৭৫টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি নতুন সালফিউরিক অ্যাসিড প্ল্যান্ট চালু করতে চলছে। লুব্রিকেটিং অয়েল উৎপাদনের জন্য ১০১৯কোটি বিনিয়োগে দ্বিতীয় ক্যাটালেটিক আইসো-ডিওয়াক্সিং ইউনিট বা লুব ইউনিট গড়ে তোলার কাজ জোরকদমে চলছে। যদিও কাজ শুরু করতে কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছে। তবে সময়ের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই কাজ শেষ হবে আশা করছি। রি-গ্যাসিফায়েড লিকুইফায়েড ন্যাচারাল গ্যাস বা আরএলএনজি প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠুভাবে এগচ্ছে। চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে আইওসি এলএনজির সংযোগ পেতে পারবে। আইওসির ইডি জানান, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সর্বোচ্চ গ্রেড-থ্রি(অ্যাডভান্স গ্রুপ থ্রি) গুণমানের লুব অয়েল উৎপাদন করা হবে। এবার লুব অয়েল আমদানির পরিবর্তে হলদিয়া থেকে বিদেশে রপ্তানি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। হাইড্রো ক্র্যাকার ইউনিট ও নয়া ডিলেইড কোকার ইউনিট গড়ে তোলার ফলে হলদিয়া শোধনাগারের লুব্রিকেটিং অয়েল তৈরির কাঁচামাল পেতে সুবিধে হবে।
আইওসি সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ার লক্ষ্যেই নতুন তিনটি প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। এখন দেশের চাহিদার ৭০শতাংশ লুব অয়েল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। হলদিয়া আইওসি লুব অয়েলের বাড়তি উৎপাদন শুরু করলে ৮শতাংশ আমদানি কম করতে হবে। এরফলে বছরে বিদেশি মুদ্রার খরচ বাঁচবে প্রায় ১৩৫০কোটি টাকা। অন্যদিকে, হলদিয়ায় আইওসি যে বিশেষ ধরনের ওয়েট সালফিউরিক অ্যাসিড বা ডব্লুএসএ তৈরি করবে তা ভারতে প্রথম। শিল্পক্ষেত্রে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই অ্যাসিড বাংলাদেশে রপ্তানি করা হবে। এজন্য বন্দর পর্যন্ত পাইপলাইন ইতিমধ্যেই বসানো হয়েছে। মার্চ মাস নাগাদ উৎপাদন শুরু হবে। তাছাড়া অ্যাসিড তৈরি করতে গিয়ে বিনা খরচে উপজাত হিসেবে প্রচুর পরিমানে হাইপ্রেসার স্টিম উৎপন্ন হবে। এতদিন এই স্টিম তৈরি করতে আইওসিকে প্রচুর জ্বালানি খরচ হত। এই স্টিম প্ল্যান্টে ভীষণ কাজে লাগে। এখন খরচ কমার পাশাপাশি দূষণও কমবে। বেলজিয়ামের হ্যালডর টপসোয়ে নামে একটি নামী সংস্থা অ্যাসিড প্ল্যান্ট গড়ার প্রযুক্তি দিয়েছে। তবে এই অ্যাসিড প্রকল্পে বিদেশি সংস্থার দেওয়া নিয়ম মেনে প্ল্যান্টে দক্ষ অপারেটর নিয়োগের দাবি জানিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি।
এদিকে, গেইলের জগদীশপুর-হলদিয়া প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে আইওসি। ২হাজার ৪৩৩কোটি টাকার এই প্রকল্প শেষ হলে পরিবেশবান্ধব লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস বা এলএনজি রাজ্য তথা শিল্পসংস্থাগুলির হাতের নাগালে চলে আসবে। তরল অবস্থায় থাকা এলএনজিকে পুনরায় গ্যাসে রূপান্তরিত করে রাজ্যে পরিবহণ শিল্প ও আইওসি কারখানার কাজে লাগাবে বলে জানা গিয়েছে। এই আরএলএনজি প্রকল্পের মাধ্যমে এবার দক্ষিণ ভারতের পর পূর্ব ভারতেও ‘দুয়ারে এলএনজি’ নিয়ে আসতে চলেছে আইওসি।
No comments