রাজ্যের সঙ্গে যৌথভাবে হলদিয়া শহরের উন্নয়নে ৫০ কোটি ব্যয় করছে আইওসি
রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে হলদিয়া শহরের পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ৫০কোটি টাকা ব্যয় করতে চলেছে আইওসি। শুক্রবার হলদিয়া সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাসের ভ…
রাজ্যের সঙ্গে যৌথভাবে হলদিয়া শহরের উন্নয়নে ৫০ কোটি ব্যয় করছে আইওসি
রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে হলদিয়া শহরের পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ৫০কোটি টাকা ব্যয় করতে চলেছে আইওসি। শুক্রবার হলদিয়া সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে একথা জানান পুরসভার চেয়ারম্যান সুধাংশুশেখর মণ্ডল।
তিনি বলেন, নগরোন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি, সৌন্দর্যায়ন সহ একাধিক প্রকল্পে আইওসি ইতিমধ্যেই সেই অর্থ ব্যয় করতে শুরু করেছে। টাউনশিপে আধুনিক সুবিধাযুক্ত বাস টার্মিনাস নির্মাণে হলদিয়া আইওসি রিফাইনারি কর্তৃপক্ষ পুরসভাকে ৮কোটি টাকা দিচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই সেই কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি শহরের পর্যটনের উন্নয়নে হলদি নদীর পাড়ে মেরিন ড্রাইভের পাশে একটি ডিয়ার পার্ক গড়তে আইওসি সহায়তা করছে। সেখানে টয়ট্রেনে চড়ে বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। বন্দর শহরের উন্নয়নে আইওসিকে কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে পুরসভা। এদিন টার্মিানাসে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পাশাপাশি পুরসভার চেয়ারম্যান ও আইওসির এগজিকিউটিভ ডিরেক্টরের মধ্যে মউ চুক্তিপত্র বিনিময় হয়।
প্রায় দেড় দশক ধরে টানাপোড়েনের পর অবশেষে নতুন বছরের উপহার হিসেবে আধুনিক মানের সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাস পেতে চলেছে বন্দর শহর। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাস টার্মিনাসে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ওয়েটিং রুম, গেস্টহাউস, ডরমেটরি, রেস্টুরেন্ট, ৭৫টি বাস দাঁড়ানোর মতো ব্যবস্থা থাকবে। এটি হবে আন্তঃজেলা সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাস। ২০১৩ সালে তৃণমূল পুরবোর্ড ক্ষমতায় আসার পর হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(এইচডিএ) থেকে বাস টার্মিনাস গড়ার জন্য ২ কোটি টাকা দেওয়া হয়। বন্দরের কাছ থেকে তখন জমি না মেলায় সেই টাকাও দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকে। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে বন্দরের কাছ থেকে জমি মেলে। বাসস্ট্যান্ডের দু’একর জমির দাম বাবদ ৪ কোটি টাকার সংস্থান করেছিল রাজ্য পরিবহণ দপ্তর। দীর্ঘমেয়াদি লিজ চুক্তির ভিত্তিতে বাস টার্মিনাস গড়ার জন্য জমি হস্তান্তর করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বন্দরের জমি হস্তান্তরের পরও আর্থিক সমস্যার কারণে পুরসভার সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাস গড়ে তোলার কাজ থমকে ছিল। এবার পুরসভাকে সেই কাজে সহায়তা করছে আইওসি।
আইওসির এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর পার্থ ঘোষ বলেন, হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে আইওসি চার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ বেডের বার্ন ওয়ার্ড তৈরি করছে। মাস দু’য়েকের মধ্যে সেই কাজ শুরু হবে। এছাড়া মহকুমা হাসপাতালে ২০ বেডের ডেডিকেটেড আইসোলেশন ওয়ার্ড, অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে। স্থানীয় মহিলাদের স্বনির্ভর করার জন্য কচুরিপানা থেকে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। হলদিয়া সমাজকল্যাণ পর্ষদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ হবে।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানের আগে এদিন সকালে স্থানীয় কাউন্সিলার দেবপ্রসাদ মণ্ডলের নাম ফলকে না থাকাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক ঝামেলা হয়। তাঁর নাম না থাকায় ইটের বেদীতে বসানো ফলক খুলে ফেলে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বাস টার্মিনাসে প্রবেশের মুখে বসানো হয়েছিল সেই ফলক। ভাঙা ফলকের খোঁজ মেলে ঘটনাস্থলের পাশে মাটির গর্তে। অনুষ্ঠান মঞ্চ ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে। দেবপ্রসাদবাবু বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলারের নাম না থাকায় ওয়ার্ডের কিছু মানুষ ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কারণ, ওই বাস টার্মিনাসের জন্য পুরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন আমি লড়াই করেছিলাম। ফলে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে।
সুধাংশুবাবু বলেন, একটি ভুল বোঝাবুঝি থেকে সামান্য ঝামেলা হয়েছিল। বিষয়টি মিটিয়ে নিয়ে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান হয়েছে। ফলকে দেবপ্রসাদবাবুর নাম যুক্ত করা হয়েছে।
No comments