গঙ্গাসাগরের মেলা নজরদারি শেষ, হলদিয়া কোস্ট গার্ড কমান্ডার দীপক সিং
পুণ্য স্নান করার জন্য গঙ্গাসাগরে ভিড় জমিয়েছিল বেশ কিছুদিন আগে থেকেই । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গাসাগরে গিয়ে তদারকি করেছেন । সাগর মেলা মকর সংক্রান্তির পুণ্য স্না…
গঙ্গাসাগরের মেলা নজরদারি শেষ, হলদিয়া কোস্ট গার্ড কমান্ডার দীপক সিং
পুণ্য স্নান করার জন্য গঙ্গাসাগরে ভিড় জমিয়েছিল বেশ কিছুদিন আগে থেকেই । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গাসাগরে গিয়ে তদারকি করেছেন । সাগর মেলা মকর সংক্রান্তির পুণ্য স্নান সেরে মানুষ ধীরে ধীরে বাড়িমুখী হচ্ছে । মেলার উদ্বোধন করেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক । পুণ্যতীর্থ গঙ্গাসাগরের মেলায় এবছরের মত শেষ ।মেলা কয়েকদিন জলে ও আকাশ পথে একসঙ্গে নজরদারি চালাচ্ছিলেন হলদিয়া কোস্টগার্ডের হোবারক্র্যাফ্ট,ও ডর্নিয়ার এয়ার ক্র্যাফ্ট। হলদিয়া কোস্টগার্ডের কমান্ডার দীপক সিং জানালেন সাগর মেলা উপলক্ষে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য প্রায় এক সপ্তাহ ধরে দুটি জাহাজ, দুটি দ্রুতগতি একটি অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার ও একটি ডর্নিয়ার এয়ার ক্র্যাফ্ট মোতায়েন করা হয়েছিল। দিনরাত্রি এক করে পুণ্যতীর্থ সাগর মেলা যাত্রীদের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে ঢেকে রেখেছিলেন হলদিয়া কোস্টগার্ড। মেলা শেষ আগামী বছর আবার দেখা হবে? যদি কোভিড বিধি মেনে এবারের মেলা হয়েছে। আগামী বছর কোভিড যদি চলে যায় আরও পুণ্যার্থী বেশি হবে। সেখানে হলদিয়া কোস্টগার্ডের নিরাপত্তা আরো জোরদার হবে বলে জানালেন হলদিয়া কোস্টগার্ড কমান্ডার দীপক সিং।
বিশেষজ্ঞদের সমস্ত উদ্বেগ ও আশঙ্কা উড়িয়ে কার্যত ‘কোভিড-মুক্ত’ থাকল গঙ্গাসাগর মেলা। শনিবার শেষ হল বছরের অন্যতম হিন্দু মহোৎসব। লক্ষ লক্ষ মানুষের এই সমাগমস্থলে মাত্র একজনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। মেলা প্রাঙ্গণ থেকে তাঁকে ‘এয়ার লিফ্ট’ করিয়ে কলকাতার হাসপাতালে এনে ভর্তিও করা হয়। তিনি এখন আইসোলেশনে। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী—দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকেই মোক্ষলাভের আশায় বহু পুণ্যার্থী ভিড় জমিয়েছিলেন সাগরতটে। নতুন বছরের শুরু থেকে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের জেরে সাগরমেলার আয়োজনে সদা সতর্ক ছিল রাজ্য প্রশাসন। কোভিড বিধি বজায় রেখেই পুণ্যাতুর মানুষের ভিড় সামলে মেলা শেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন আয়োজকরা।
গতবারও কড়া অনুশাসনের মধ্যে বসেছিল সাগরমেলা। সেবারও গোটা দ্বীপ ছিল করোনা-মুক্ত। এবারের আয়োজনকে ঘিরে চিকিৎসকদের মধ্যে অবশ্য চরম উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছিল। সরব হয়েছিল বিরোধীরাও। কিন্তু এদিন মেলা শেষে জেলা প্রশাসনের তরফে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তাতে আশঙ্কার আর কোনও জায়গা নেই। সাংবাদিক বৈঠক করে বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মেনে অক্ষরে অক্ষরে যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আর তাতে সাফল্য এসেছে। করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে লক্ষাধিক। কিন্তু মেলা প্রাঙ্গণে একজনের বেশি কেউ আক্রান্ত হননি।’ এটা বড় প্রাপ্তি বলেই মনে করছেন আধিকারিকরা। যদিও বাবুঘাট বা অন্যান্য প্রবেশপথে বেশ কিছু পুণ্যার্থীর করোনা ধরা পড়েছে। তবে সেই সংখ্যা খুবই কম।
বিদ্যুৎমন্ত্রী আরও জানান, সব মিলিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে তিন কোটি মানুষ গঙ্গাসাগরের ই-দর্শন সেরেছেন। ই-স্নানের সামগ্রী পেয়েছেন ২ লক্ষ ৮৮ হাজার ৯৬০ জন। এদিন বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মকরসংক্রান্তির পুণ্যস্নানের তিথি ছিল। অনেকেই এসেছিলেন সাগরসঙ্গমে ডুব দিতে। শুক্রবারের মতোই সাগর পাড়ে বসেই কেউ কেউ মাথায় জল ছিটিয়ে প্রতীকী স্নান সেরেছেন। আবার অনেকেই জ্যারিকেনে জল ভরে মাথায় ঢেলে মোক্ষলাভের অবগাহন সম্পূর্ণ করেছেন। স্নানের সময়কাল শেষের পর রীতি অনুসারে সমুদ্র সৈকত সাফাইয়ের কর্মসূচি নেওয়া হয়। পঞ্চায়েতমন্ত্রী পুলক রায়, সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, জেলাশাসক পি উলগানাথন সহ অন্যান্যরা তাতে অংশগ্রহণ করেন। বিকেলের পর ফাঁকা হয়ে যায় গোটা সমুদ্রতট। গত দু’দিনের ‘মিনি ভারতবর্ষ’ নিমেষে খালি। সাধু থেকে ভক্ত, এবার সবার ঘরে ফেরার পালা। ঝাঁপের লাঠি টেনে বাড়ির পথে দোকানিরাও। তবে এদিন বাজারে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড় ছিল বেশি। মন খারাপের পালা সাগরদ্বীপের!
No comments