জেলায় সংক্রমণ কমে প্রায়
অর্ধেক, গ্রামাঞ্চলে কোভিড ঊর্ধ্বমুখ
জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁচ পুরসভা এলাকায় সংক্রমণ কমে অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। যদিও গ্রামীণ এলাকায় সেই হারে সংক্রমণ কমেনি। বরং সামান্য বেড়েছে। গত …
জেলায় সংক্রমণ কমে প্রায়
অর্ধেক, গ্রামাঞ্চলে কোভিড ঊর্ধ্বমুখ
জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁচ পুরসভা এলাকায় সংক্রমণ কমে অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। যদিও গ্রামীণ এলাকায় সেই হারে সংক্রমণ কমেনি। বরং সামান্য বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২৯৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের তালিকায় পাঁচ বছরের কম বয়সি ছ’জন শিশু রয়েছে। জেলায় ১৪৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ৪১টি ওয়ার্ডে সংক্রমণের হার বেশি। এক সপ্তাহে ওইসব এলাকায় দশজনের বেশি সংক্রামিত। তাই ওইসব এলাকাকে ‘ভালনারেবল’ হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
গত ১৬ থেকে ২২ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় পাঁচ পুরসভা এলাকায় মোট ৬০২জন আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও ৯-১৫ জানুয়ারি অর্থাৎ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ১০০৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই হিসেবে তৃতীয় সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। তবে, পাঁচটি পুরসভায় ৪১টি ওয়ার্ডে তৃতীয় সপ্তাহে দশজনের বেশি সংক্রামিত হয়েছেন। তারমধ্যে হলদিয়া পুরসভায় ২০টি, তমলুক পুরসভায় ১১টি, এগরায় একটি এবং কাঁথি পুরসভায় ন’টি ওয়ার্ড রয়েছে। তৃতীয় সপ্তাহে হলদিয়া পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে সর্বাধিক ৬৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ২৯ জন, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২৮ জন, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ জন এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ১৬-২২ জানুয়ারি পর্যন্ত তমলুক পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১৫ জন, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ১২জন ও ২০নম্বর ওয়ার্ডে ১১জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের সংক্রমণের হার কিছুটা বেশি। ১৬-২২ জানুয়ারি জেলার ২৫টি ব্লকের ২২৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৩১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও ৮-১৫ জানুয়ারি অর্থাৎ দ্বিতীয় সপ্তাহে সংক্রামিত হয়েছিলেন ২০৫১ জন। সেই তুলনায় সামান্য বেড়েছে। তবে, ১৪৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় করোনার দাপট বেশি। ওই সব এলাকায় এক সপ্তাহে দশজনের বেশি আক্রান্ত। এরকম ১৪৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত চিহ্নিত করে সেখানে বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্যজেলার মধ্যে এরকম ৮৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্যজেলার মধ্যে আরও ৬২টি পঞ্চায়েতকে ‘ভালনারেবল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, গত এক সপ্তাহে দেশপ্রাণ ব্লকের বসন্তিয়া পঞ্চায়েতে সর্বাধিক ৭৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ঘণ্টায় ওই পঞ্চায়েতের চক হজরতপুর গ্রামে একই পরিবারের পাঁচ বছর, ন’বছর ও ২৭ বছর বয়সি তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও এক সপ্তাহে কাঁথি-১ব্লকের দুলালপুর পঞ্চায়েতে ৬৮জন, ভগবানপুর-২ব্লকের জুখিয়া পঞ্চায়েতে ৬৫ জন, এগরা-১ ব্লকের ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র পঞ্চায়েতে ৫৭ জন, চণ্ডীপুর ব্লকের বৃন্দাবনপুর-১ পঞ্চায়েত এলাকার ৫২জন এবং সুতাহাটা ব্লকের হোড়খালি পঞ্চায়েত এলাকায় ৪৪ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
যেসব পঞ্চায়েত এলাকায় সংক্রমণের হার বেশি সেখানে আশাকর্মীদের যাতায়াত বাড়ানো হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে স্থানীয়দের মাস্ক ব্যবহারে জোর দেওয়া হচ্ছে। উপসর্গ থাকলেই টেস্ট করা হচ্ছে। গত ১ জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩১৯ জন। অধিকাংশই বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়েছেন। এই মুহূর্তে জেলায় সক্রিয় আক্রান্তর সংখ্যা তিন হাজার। এপর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
No comments