নন্দীগ্রামের শহীদ স্মরণ ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে তৃণমূল ও বিজেপির সভা উত্তেজনাভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে তৃণমূল ও বিজেপির পৃথক শহিদ স্মরণ ঘিরে শুক্রবার সরগরম হয়ে উঠল নন্দীগ্রাম। ২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি ভাঙাবেড়…
নন্দীগ্রামের শহীদ স্মরণ ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে তৃণমূল ও বিজেপির সভা উত্তেজনা
ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে তৃণমূল ও বিজেপির পৃথক শহিদ স্মরণ ঘিরে শুক্রবার সরগরম হয়ে উঠল নন্দীগ্রাম। ২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি ভাঙাবেড়ায় হার্মাদ বাহিনীর গুলিতে তিনজন জমি আন্দোলনকারী ভরত মণ্ডল, বিশ্বজিৎ মাইতি ও শেখ সেলিম প্রাণ হারান। ওই এলাকায় শহিদবেদি তৈরি করে প্রতি বছর ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির(বিইউপিসি) উদ্যোগে ৭ জানুয়ারি ভোরে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এদিন ভোর ৫টা নাগাদ তৃণমূলের শিবিরের আয়োজনে বিইউপিসি-র ব্যানারে স্মরণসভা হয়। শহিদবেদিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল, পাঁশকুড়া পশ্চিমের বিধায়ক তথা শহিদজননী ফিরোজা বিবি প্রমুখ। খেজুরি সীমানা লাগোয়া শহিদবেদিতে তৃণমূলের উদ্যোগে শহিদস্মরণ অনুষ্ঠান হয়। খানিকটা দূরেই শহিদ মিনার। সেখানে বিজেপির উদ্যোগে পৃথক শহিদস্মরণ সভা হয়। দু’পক্ষকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
এদিন দুই শিবিরের উদ্যোগে শহিদ স্মরণ ঘিরে ভাঙাবেড়া উত্তপ্ত ছিল। যে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রচুর ফোর্স নামানো হয়েছিল। দু’পক্ষ দু’টি আলাদা জায়গায় মঞ্চ করে শহিদ স্মরণ করে। তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে স্মরণসভায় অংশ নেওয়ার জন্য কাকভোর থেকেই স্থানীয় মহিলারা অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন জমি আন্দোলনে প্রাণ হারানো সুপ্রিয়া জানা, রেজাউল করিম, রাখাল গিরি, রবীন দাস, নারায়ণ দাস, ইমদাদুল সহ অনেক শহিদ পরিবারের স্বজনরা।
শহিদস্মরণ সভা থেকে প্রত্যেকেই পরস্পরের দিকে আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণ চালিয়েছে। ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক তথা তৃণমূল নেতা আবু তাহের বলেন, নন্দীগ্রাম জমিরক্ষার আন্দোলনে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। সেই আন্দোলনে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ শহিদ হয়েছেন। অথচ, এখানকার বিধায়ক নন্দীগ্রামের সেই সম্প্রীতির বিভাজন তৈরি করছেন। আমরা নন্দীগ্রামের মাটি থেকে হার্মাদ তাড়িয়ে জমি আন্দোলনে জয়ী হয়েছি। আমাদের এখন নতুন করে লড়াই করার শপথ নিতে হবে। ফিরোজা বিবি বলেন, নন্দীগ্রামের মাটি আন্দোলনের মাটি। এই মাটিকে সম্প্রদায়িক বিভাজনের মাধ্যমে কলুষিত করার চেষ্টা হচ্ছে। এটা সকলে মিলে রুখে দিতে হবে। ভোট পরবর্তী হিংসার প্রসঙ্গ টেনে কেউ কেউ নন্দীগ্রামকে ফাঁকা করার হুমকি দিচ্ছেন। সিবিআইয়ের ভয়ে নাকি ৮০শতাংশ ফাঁকা হয়েছে। বাকি ২০শতাংশ তিনি ফাঁকা করে দেবেন। আমি বলতে চাই, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মাটি। নন্দীগ্রামকে যারা ফাঁকা করার কথা বলছেন, তাঁরা মূর্খ।
নন্দীগ্রামের শহিদ মিনারে বিজেপির উদ্যোগ বিইউপিসি-র সভায় স্থানীয় বিধায়ক রীতিমতো হুমকির সুরে দাবি করেন, ভোট পরবর্তী হিংসায় দেবব্রত মাইতি খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তে ৮০ শতাংশ তৃণমূল নেতৃত্ব ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। বাকি ২০ শতাংশ তিনি ফাঁকা করে দেবেন। তাঁর এই হুমকির প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন নন্দীগ্রামের সাধারণ মানুষ থেকে শহিদ পরিবারের লোকজনও।
জমি আন্দোলনে মৃত কাইয়ুম কাজির ভাই তথা কালীচরণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সইয়ুম কাজি বলেন, নন্দীগ্রামকে ফাঁকা করে দেওয়ার এই হুমকি নন্দীগ্রামবাসী হিসেবে আমরা মেনে নেব না। এই ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
No comments